খারাপ পাতা মিশে চায়ের মানের দফারফা হওয়া আটকাতে এ বারই প্রথম মরসুমের শেষে (মাঝ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি) পাতা তোলা ও চা উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলেছে টি বোর্ড। পশ্চিমবঙ্গে ১১ ফেব্রুয়ারি ফের বাগান খুলবে। বোর্ড ও বাগানগুলির আশা, এর জেরে ফেব্রুয়ারি-মার্চের নতুন মরসুমে বাজারে যে চা আসবে, তা স্বাদে ও মানে হবে মন ভরিয়ে দেওয়ার মতো। কিন্তু সেই চা ঘরে ঢোকার আগেই বাড়তি কড়ি গুনতে হচ্ছে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে গিয়ে।
শহরের খুচরো বিক্রেতাদের একাংশ বলছেন, চাহিদা-জোগানের সমীকরণই এর কারণ। শীতে চায়ের চাহিদা কমার প্রশ্ন ওঠে না। অথচ চা তৈরি বন্ধ বলে বাজারে জোগান কমার আশঙ্কা। তাতেই মাথা তুলছে দাম।
যদিও অনেকেরই দাবি, বাড়তি খরচ হচ্ছে শুধু কম দামি চায়েই। বেশি দামিগুলির (কেজি ২৫০-৩০০ টাকা) উপর তেমন প্রভাব পড়েনি। লালবাজার এলাকার বিক্রেতারা বলছেন, কম দামি (কেজি প্রতি ৯০-১০০ টাকা) চা বাজার থেকে প্রায় উধাও। দাম এখন কেজি পিছু গড়ে ১৩০ টাকার আশেপাশে।
চা নিলাম কেন্দ্র সূত্রের খবর, গত মাসে শিলিগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে কেজিতে চা ২০১৭ সালের থেকে গড়ে প্রায় ২০ টাকা বেড়েছে। কলকাতা ও গুয়াহাটি কেন্দ্রে কম, ৬-৭ টাকার মতো। ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, নিলামের তুলনায় বাগান থেকে সরাসরি আসা চা বেশি বিক্রি হয় বলে আগেই দাম বাড়ছে খুচরো বাজারে।
অবশ্য পার্থ দত্ত, ছগন আগরওয়ালের মতো চা ব্যবসায়ীদের দাবি, বোর্ডের বাগান বন্ধের নির্দেশের আগেই নিলামে দাম বেড়েছিল। প্রধানত কেরলে বন্যার কারণে।
টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অরুণ কুমার রায়ের আশা, ভাল চায়ের স্বাদ পেতে ক্রেতারা বেশি খরচে আপত্তি করবেন না। সেই সঙ্গে আশ্বাস, এক পেয়ালায় কয়েক গ্রাম চা লাগে। তাই দাম বৃদ্ধির আঁচ ততটাও বইতে হবে না তাঁদের। অন্য দিকে, উৎপাদন খরচের বাড়তি চাপ সামাল দেওয়া সহজ হবে বাগানগুলির পক্ষে।
ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান বিবেক গোয়েন্কা ও ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা-র প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপালও বোর্ডের নির্দেশেকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সমীক্ষা দেখিয়েছে দাম বাড়লে চা পানে তেমন প্রভাব পড়ে না। বরং নতুন মরসুমে তা শিল্পের উন্নতির পথ গড়ে দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy