Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
অভিযোগের তির কেন্দ্রের দিকে

স্পেকট্রাম নামমাত্র, ভারতে ব্যাহত টেলিকম পরিষেবা

মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যার বিচারে বিশ্বে ভারতের স্থান দ্বিতীয়। চিনের পরেই। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভারতে টেলিকম সংস্থাগুলির হাতে স্পেকট্রাম অনেক কম বলে অভিযোগ করলেন এই শিল্পের সংগঠনের কর্তা রাজন এস ম্যাথুজ। ফলে এ দেশে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবার মান ব্যাহত হয় বলে দাবি তাঁর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৫ ০২:৩৬
Share: Save:

মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যার বিচারে বিশ্বে ভারতের স্থান দ্বিতীয়। চিনের পরেই। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভারতে টেলিকম সংস্থাগুলির হাতে স্পেকট্রাম অনেক কম বলে অভিযোগ করলেন এই শিল্পের সংগঠনের কর্তা রাজন এস ম্যাথুজ। ফলে এ দেশে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবার মান ব্যাহত হয় বলে দাবি তাঁর।

শুক্রবার বেঙ্গল চেম্বারের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত এক সভার ফাঁকে সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশেন অব ইন্ডিয়া (সিওএআই)-র ডিরেক্টর জেনারেল রাজন এস ম্যাথুজ দাবি করেন, এ দেশে সার্কেল পিছু এক একটি টেলিকম সংস্থার হাতে গড়ে ১২ থেকে ১৫ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম রয়েছে। কিন্তু বিশ্বে তা প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ মেগাহার্ৎজ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম স্পেকট্রাম বরাদ্দ করছে। ১৩টি সরকারি দফতরের হাতে প্রায় ৪৫০ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম পড়ে রয়েছে। অথচ টেলিকম সংস্থাগুলি স্পেকট্রামের অভাবে ভুগছে।’’

তাঁর আরও অভিযোগ বাড়তি টাওয়ার বসানোর সমস্যা নিয়ে। রাজন বলেন, একে স্পেকট্রাম কম। উপরন্তু অন্য দেশের তুলনায় ভারতে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। গ্রাহকসংখ্যাও বেশি। বাড়তি টাওয়ার বসিয়ে এই সমস্যা কিছুটা দূর করা যায়। কিন্তু সেখানেও বাধা পাচ্ছে টেলিকম শিল্প। তাঁদের হিসেবে, প্রতি মাসে দেশে গড়ে প্রায় ৫০ লক্ষ নতুন মোবাইল গ্রাহক সংযোগ নিচ্ছেন। সেই নতুন গ্রাহকদের পাশাপাশি থ্রিজি ও ফোরজি পরিষেবা দেওয়ার জন্য সব মিলিয়ে বছরে গড়ে প্রায় ৫০ হাজারটি টাওয়ার বসানো জরুরি। কিন্তু বাস্তবে তা ১৫-১৬ হাজারের বেশি হয় না।

এ জন্য আমজনতার একাংশের আপত্তিকেই দায়ী করে ম্যাথুজ বলেন, ‘‘টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, এই ধারণায় অনেকেই তা বসাতে দিতে চান না। কিন্তু ভারতে টাওয়ারের বিকিরণ মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাপকাঠির চেয়েও ৯০% কম। তাই ওই আশঙ্কা অমূলক।’’ পাশাপাশি, টাওয়ার বসানোর জন্য প্রশাসনিক ছাড়পত্র পেতেও সমস্যা হয় বলে দাবি তাঁর।

বস্তুত, ভারতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্রডব্যান্ড পরিষেবার যে-মাপকাঠি স্থির করেছে (৫১২ কেবিপিএস), সেটি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ম্যাথুজ। তাঁর দাবি, ব্রডব্যান্ড পরিষেবার গতি ন্যূনতম ২ এমবিপিএস হওয়া প্রয়োজন। বিশ্বে তা কমপক্ষে ১০-১৫ এমবিপিএস। গতির মাপকাঠি বাড়লে স্বাভাবিক ভাবেই বাড়তি স্পেকট্রামের প্রয়োজন হবে, মত সংশ্লিষ্ট মহলের।

মোবাইন ফোনে ‘কল ড্রপ’ বা ইন্টারনেট পরিষেবার গতি কমে যাওয়া নিয়ে গ্রাহক মহলে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। তাঁদের অভিযোগ, টেলিকম সংস্থাগুলি উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ছে না বলেই সমস্যা হচ্ছে।। কিন্তু ম্যাথুজের দাবি, টেলিকম শিল্পমহল পরিকাঠামো গড়তে চাইলেও ওই সব কারণে তা বাধার মুখে পড়ছে। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ কমর্সূচির উপর জোর দিচ্ছেন তা অর্জন করতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইল পরিষেবাও গুরুত্বপূর্ণ। আর সে ক্ষেত্রে স্পেকট্রাম এবং টাওয়ার, এই দু’টিই পরিকাঠামোর মূল ভিত। তা গড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশের অভাবেই ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবার মান।

অন্য দিকে, এই শিল্পের দাবি, বিশ্বে সবচেয়ে কম মাসুল হারের বাজারের অন্যতম ভারত। ম্যাথুজ মনে করেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ফোনের মাসুল সরাসরি বাড়ানোর পথে হাঁটবে না টেলিকম শিল্প। কিন্তু যে সব ছাড় এত দিন মিলত, ক্রমশ তা কমবে। তবে ভবিষ্যতে গোটা মাসুল কাঠামোর সংস্কার ঘটবে বলে তাঁর দাবি। সে ক্ষেত্রে ফোন এবং নেটের যৌথ পরিষেবা সংক্রান্ত নানা ধরনের মাসুল নির্ধারণের পথেই টেলিকম সংস্থাগুলি হাঁটবে বলে তাঁর ধারণা।

অন্য বিষয়গুলি:

spectrum Tele service vodafone Aircell mobile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy