রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। —ফাইল চিত্র
আর ক’দিন পরেই বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার আগে শুক্রবার অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে ফের কাঠামোগত সংস্কারের পক্ষে সওয়াল করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। বললেন, শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই বাজারে চাহিদা বাড়িয়ে অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরানোর জন্য দীর্ঘ মেয়াদে আরও বেশি কাঠামোগত সংস্কার করা জরুরি। চাই আরও বেশি আর্থিক পদক্ষেপ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের একার পক্ষে যা সম্ভব নয়।
সরকারের ব্যয় সংস্কার করা জরুরি বলে আজ জানিয়েছেন প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গও। তাঁর মতে, যে রাজস্ব আয় হচ্ছে, তার বেশির ভাগটাই চলে যাচ্ছে সুদ, কর্মীদের বেতন ও ভাতা, পেনশনের মতো খাতে। ফলে তা উৎপাদনশীল কাজে ঠিক মতো খরচ হচ্ছে না।
বাজারে চাহিদা নেই, কমেছে কেনাকাটা। লগ্নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বেসরকারি সংস্থাগুলি। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪.৫%। খোদ কেন্দ্রের পূর্বাভাসই বলছে, চলতি অর্থবর্ষে তা দাঁড়াতে পারে ৫ শতাংশে। যা গত ১১ বছরে সব চেয়ে কম। আর মূল্যবৃদ্ধি ধরে হিসেব করা (নমিনাল) জিডিপি দাঁড়াতে পারে ৭.৫%। তা ৪৮ বছরে সর্বনিম্ন। এই অবস্থায় কর্পোরেট কর কমিয়ে কেন্দ্র বেসরকারি সংস্থাগুলিকে লগ্নিতে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তা এখনও ফল দেয়নি। আবার, গত ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শীর্ষ ব্যাঙ্ক টানা ১৩৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ ছেঁটেছে। লক্ষ্য, যাতে ঋণে সুদ কমে ও চাহিদায় গতি আসে। কিন্তু সেই চেষ্টাও এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ।
বৃদ্ধির পূর্বাভাস
• কেন্দ্র ৫.০
• ৭.৫ (নমিনাল জিডিপি)
• রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৫.০
• আইএমএফ ৪.৮
• মুডি’জ় ৪.৯
• ফিচ ৪.৬
• ওইসিডি ৬.২
• গোল্ডম্যান স্যাক্স ৬.০
• স্টেট ব্যাঙ্কের ৫.০
• গবেষণা পত্র
* সব হার শতাংশে
শক্তিকান্তের মতে, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিকে ঠিক মতো বিশ্লেষণ করা এবং সেই অনুসারে ঋণনীতি স্থির করা সারা বিশ্বেই শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলির কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। তবে ঋণনীতির নিজস্ব সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তাই ভারতে চাহিদা বাড়াতে ও অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে কিছু ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার করা জরুরি। আর সেই ক্ষেত্র হিসেবে তিনি তুলে ধরেছেন ই-কমার্স, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন, স্টার্ট-আপ ইত্যাদিকে। বলেছেন, ভারতের অর্থনীতিকে বিশ্ব অর্থনীতির অংশ হিসেবে তুলে ধরার কথাও। সেই সঙ্গে দাসের দাবি, চাহিদা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে রাজ্যগুলির সরকারি ব্যয়। গভর্নরের দাবি, রাজ্যের সরকারি ব্যয় বাড়লে তার প্রভাব পড়বে বৃহত্তর অর্থনীতিতে। পাশাপাশি, পরিকাঠামোর জন্য ব্যয়ে কেন্দ্রও মনোযোগ দিতে পারবে। উল্লেখ্য, অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে পরিকাঠামোয় ১০২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
গর্গ অবশ্য বলছেন, বাজেটে চলতি অর্থবর্ষে ২৭.৮৬ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ের যে লক্ষ্য ছিল, তার ৫.৪৬ লক্ষ কোটি বেতন, ভাতা, পেনশন, যাতায়াতের ইত্যাদিতে খরচ হচ্ছে। ৬.৬০ লক্ষ কোটি যাবে সুদ মেটাতে। তাঁর মতে, এর ফলে জরুরি ক্ষেত্রে ঠিক মতো ব্যয় হচ্ছে না। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, কেন্দ্র যে সব খাতে খরচ করে, তার সুফল বেসরকারি লগ্নির তুলনায় কম। তাই এমন ক্ষেত্রে সরকারকে খরচ করতে হবে, যেগুলি অর্থনীতিতে ভীষণ ভাবে কাজে লাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy