ফাইল চিত্র
ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ বাড়তে পারে বলে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাতে শুক্রবার সিলমোহর দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সকলের ভয়, করোনার ধাক্কায় বহু সংস্থার বিক্রি ও আয় কমায় অনেকেই সময়ে ঋণের কিস্তি মেটাতে পারবে না। তখন বাড়বে অনুৎপাদক সম্পদের বহর। যা করোনা পর্বের আগেই পৌঁছেছিল বিপজ্জনক জায়গায়। বেশ কিছু ব্যাঙ্কের ধার দেওয়া-সহ বিভিন্ন লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা (পিসিএ) চাপিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাদের একাংশ এখনও সেখান থেকে বেরোতে পারেনি। এই আগুনে ঘি ঢেলেছে কোভিড-১৯। এখন দেখার করোনার টিকা বাজারে আসার আশায় যে শেয়ার বাজার কাহিল অর্থনীতিকে উপেক্ষা করে গত সপ্তাহে ১১০৯ পয়েন্ট বেড়েছে, এ সপ্তাহে সে কোন দিকে থাকে। ব্যাঙ্কের দুর্দশার আশঙ্কা ফের যে রকম মাথা তুলছে, তাতে সূচক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তবেই এগোবে মনে হয়। অন্তত শুক্রবারের বাজারে সেই ইঙ্গিত ছিল কিছুটা।
ওই দিন আরবিআই আর্থিক স্থিতিশীলতা রিপোর্টে জানায়, আগামী দিনে ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ি ঋণ অনেকখানি বাড়তে পারে। আপাতত ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখার প্রকল্প (মোরাটোরিয়াম) চলায়, এপ্রিল-জুনে হয়তো তার আঁচ পড়বে না। কিন্তু গোটা বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ ১১.৩% থেকে বেড়ে হতে পারে ১৫.২%, বেসরকারি ব্যাঙ্কের ৪.২% বেড়ে ৭.৩%। এই তথ্যে হতাশ হয় শুক্রবারের শেয়ার বাজার। ৪২২ পয়েন্ট কমে (১.৮৩%) ব্যাঙ্ক নিফ্টি দাঁড়ায় ২২,৬৬২ পয়েন্টে। বিএসই-তেও ব্যাঙ্কের সূচক পড়ে ৫০৪ পয়েন্ট। অনুৎপাদক সম্পদ যে বাড়ছে তা স্পষ্ট করে শনিবার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক-ও বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফলে জানায়, অনাদায়ি ঋণের খাতে এ বার ৭৫৯৩ কোটি টাকার সংস্থান করেছে তারা। আগের বছর এই সময় যা ছিল ৩৪৯৫ কোটি। অর্থনীতির পক্ষে এটা চিন্তার।
গত সপ্তাহে অবশ্য সেনসেক্স উঠে গিয়েছে ৩৮,১২৯ অঙ্কে। মূল কারণ, কয়েক মাসের মধ্যে করোনার টিকা বাজারে আসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা। রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের শেয়ারও শুক্রবার ৪.১৫% পৌঁছেছে ২১৪৬ টাকায়। ফলে তাদের মোট শেয়ার মূল্য ১৪ লক্ষ কোটি টাকা পেরিয়েছে। ভারতের কোনও সংস্থা এখনও এই উচ্চতা ছোঁয়নি।
বাজারের চোখ যে দিকে
• চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল, মে, জুন) বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক ফল। বেশ কয়েকটি ফল ইতিমধ্যেই বেরিয়েছে।
• দেশে-বিদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার। হালে যা লাফিয়ে বাড়ছে।
• করোনার টিকা বাজারে আসা নিয়ে নতুন কোনও আশার খবর পাওয়া যাচ্ছে কি না।
• আমেরিকা-চিনের খারাপ হতে থাকা সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায়।
• বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজার গত সপ্তাহে সতর্ক ছিল। এ সপ্তাহে কেমন থাকে। ভারতে অবশ্য গত সপ্তাহে সেনসেক্স ১১০৯ পয়েন্ট বেড়েছে।
• বুধবার মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ সুদ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়।
• বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ও টাকা-ডলারের বিনিময় মূল্যের ওঠানামা।
প্রথম ত্রৈমাসিকে হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের ১৮৮১ কোটি টাকা মুনাফা দেখলেও, আইটিসি-র লাভ (২৫৬৩ কোটি) আগের বছরের একই সময়ের থেকে কমেছে। লাভ কমেছে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের। ২৩৩ কোটি কমেছে বজাজ ফিনান্সেরও। অনুৎপাদক সম্পদ বাড়লেও, মুনাফা ৩৬% বেড়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের।
গত সপ্তাহের অন্যান্য খবরের মধ্যে ছিল:
• ভারতের রেকর্ড বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার। ১৭ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে তা পৌঁছেছে ৫১,৭৬৪ কোটি ডলারে।
• সোনার রেকর্ড দাম। জিএসটি সমেত ১০ গ্রাম পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) ছুঁয়েছে ৫৩,২৭৩ টাকা। গয়নার সোনা (২২ ক্যারাট) ৫০,৫৬২। প্রতি কিলোগ্রাম রুপোর বাট ৬২,২১২ টাকা।
• বাজারে ৮০ কোটি টাকার রাইট ইসুর (বর্তমান শেয়ারহোল্ডারদের জন্য) ঘোষণা স্পেনসার্সের। প্রতিটি ৫ টাকার শেয়ার ইসু হবে ৭৫ টাকায়। প্রতি ১৫টি শেয়ারে মিলবে ২টি করে রাইট শেয়ার।
• স্টক ব্রোকার হিসেবে কাজ করবে পেটিএম।
(মতামত ব্যক্তিগত)
আরও পড়ুন: বাণিজ্যে দেওয়াল তুলতে ১৬৫টি সিদ্ধান্ত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy