—প্রতীকী ছবি।
আজ থেকে ১০ বছর আগে নিফটি ৫০ সূচক কোথায় ছিল জানেন? আজকাল তো গুগ্ল করলেই সব পাওয়া যায়। তাই গুগ্ল করে দেখুন ২০১৩ সালে এই অক্টোবর মাসে বাজার ছিল ৫০০০-এর আশেপাশে! আর আজ? নিফটি সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম আঁকড়ে ২০ হাজার ছুঁয়ে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে অনিশ্চয়তার শিকার। কিন্তু তাতে কি লগ্নিকারী হিসাবে আপনি সংশয়ে?
আপনার কাছে লগ্নি মানে যদি ফাটকা হয় তা হলে এই লেখা আপনার জন্য নয়। তবে আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে লগ্নি করে লাভ ঘরে তুলতে চান তা হলে বলব আপনি আপনার মতো লগ্নি ভাবনায় মেতে থাকুন। কারণ দীর্ঘমেয়াদে শেয়ার সূচক কিন্তু পিছনে হাঁটে না। আর তাই রিচার্ড থালার বা ওয়ারেন বাফেটরা সাধারণ লগ্নিকারীদের শেয়ারে টাকা ঢেলে খবরের কাগজে শুধু খেলার পাতা পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে কি, এটাও ঠিক যে একেবারে চোখ সরিয়ে নিলেও বিপদ। কারণ, সুযোগ হারাতে পারেন। তাই দেখে নেওয়া যাক অক্টোবর-নভেম্বরের সময়টা। জ্যোতিষের ভাষায় বললে, এই সময়টায় বাজারে অস্থিরতা চালু থাকবে। রাশিয়া আর সৌদি আরব বলেই দিয়েছে তেলের উৎপাদনে রাশ টানবে তারা। তাই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে।
তারই সঙ্গে যোগ দিয়েছে ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ। তাই বিশ্ববাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। সেই সঙ্গে ইউরোপ এবং আমেরিকায় দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিশ্ববাজারে সুদের হার নিয়েও একটা অনিশ্চয়তার আবহ বজায় থাকছেই।
তা হলে আপনি কী করবেন? আপনার ঝুলিতে যদি ভাল সংস্থার শেয়ার থাকে তা হলে আপনি একদম চুপচাপ বসে থেকে আরও ভাল বিনিয়োগের খোঁজ করবেন। কারণ আবার সেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং সফল শেয়ার ব্যবসায়ী রিচার্ড থালারের কথায়, বড় বাজারে, ভাল সংস্থার শেয়ারের দাম রাজনীতি বা অন্য কারণে নড়লেও দীর্ঘমেয়াদে তার বৃদ্ধি অব্যাহতই থাকে।
ভাবুন তো, ২০১৩ সালে বছর শেষের আলোচনায় সংবাদ মাধ্যমে লেখা হয়েছিল যে— ওই বছর নিফটি ৬৩০৪ ছুঁয়ে রেকর্ড করেছিল! আর আজ যদি নিফটি এই স্তরে নেমে যায় তা হলে তো বাজার রসাতলে যাবে! কারণ আপনি ১৯ হাজারের উপর নিফটি দেখে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছেন।
এ বার ভাবুন ২০১৩ সালে আপনি বিনিয়োগ করে ওয়ারেন বাফেটের পরামর্শ মেনে শুধুই খেলার খবর পড়েছিলেন। তা হলে আজ আপনার ওই বিনিয়োগ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? আমি একজনকে চিনি যাঁর ২০১৮ সালে নানান ভাল সংস্থায় অল্প অল্প শেয়ার কেনা ছিল। সেই সময় তার মূল্য ছিল মাত্র ৮০ হাজার টাকা। আর আজ পাঁচ বছর বাদে সেই বিনিয়োগের মূল্য তিন লক্ষ টাকার উপরে!
আপনি বিনিয়োগ করেছেন লাভের জন্য। উন্নয়নের হিসাব কিন্তু আপনার কাছে আপনার ব্যক্তিগত লাভের হিসাবেই হবে। ভারতের অর্থনীতি কিন্তু বিনিয়োগকারীদের কাছে দীর্ঘমেয়াদে লাভেরই। জিএসটি আদায়ের হার ঊর্ধ্বমুখী। বিরাট কিছু হারে না হলেও, বাড়ছে। লগ্নি নিয়ে সব সূচকই ধীরে হলেও ঊর্ধমুখী। দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির হারও কমছে। আর বাজারে মানুষ খরচ করতে ভয় পাচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রার সম্ভার উপর নীচ করলেও তার প্রবণতা (ট্রেন্ড) কিন্তু ঊর্ধ্বমুখীই।
বাজার কিন্তু রাজনীতিকে সাময়িক পাত্তা দিলেও দীর্ঘমেয়াদে নিজের মতো নিজেকে সাজিয়ে নেয়। আর এই শতকের হিসাবও ইতিহাসের উল্টোপথে হাঁটছে না। ঠিক-শেয়ারে বিনিয়োগ করলে দীর্ঘমেয়াদে আপনার লাভ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আগামী কয়েক মাস অনিশ্চয়তা থাকবে। কিন্তু তাতে আপনার কী? আপনি তো বাজারে নেমেছেন দীর্ঘমেয়াদী লাভের খোঁজে। আপনার খোঁজ তাই শুধু ভাল শেয়ারের। সূচকের খোঁজ রাখুক অন্যরা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy