Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Share Market

বাজারের নজর ভোট, বর্ষা ও সংস্থার হিসেবে

করোনা ছাড়াও পতনের পিছনে অন্যতম দু’টি কারণ, আমেরিকা ও ভারতে বন্ডের কমতে থাকা দাম এবং খুচরো বাজারের পরে পাইকারিতেও মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলা।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র। ফাইল চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২১ ০৭:২০
Share: Save:

এ সপ্তাহেই লকডাউনের প্রথম বর্ষপূর্তি। গত বছর সেই লকডাউনের আগে ২৩ মার্চ সর্বকালের বৃহত্তম ধস দেখেছিল ভারতের শেয়ার বাজার। এক দিনে সেনসেক্স খুইয়েছিল প্রায় ৪০০০ পয়েন্ট (৩৯৩৪)। ১১১০ পয়েন্ট পড়ে নিফ্‌টি। করোনার হানা যে আতঙ্ক তৈরি করেছিল তা পরে অনেকটা কমলেও, এক বছর পেরিয়ে তার আবার ফিরে আসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বাড়ছে সংক্রমণ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের ছাড়িয়েছে ৪০ হাজার। বিধিনিষেধ কড়া হতে শুরু করেছে কিছু জায়গায়। আরও হবে কিনা সময় বলবে। তবে অতিমারির এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঁচে গত ছ’টি কাজের দিনের মধ্যে পাঁচটিতে টানা ২০৬২ পয়েন্ট নেমেছে সেনসেক্স। ওই পাঁচ দিনে নিফ্‌টির মোট পতন ৬১৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের শেষ দিনে অবশ্য শেয়ার সূচক দু’টি যথাক্রমে ৬৪২ এবং ১৮৬ ওঠায় লগ্নিকারীরা কিছুটা স্বস্তি বোধ করেন। তবে সেনসেক্স এখনও ৫০ হাজারের নীচেই রয়েছে। আর নিফ্‌টি ১৫ হাজারের নীচে।

করোনা ছাড়াও পতনের পিছনে অন্যতম দু’টি কারণ, আমেরিকা ও ভারতে বন্ডের কমতে থাকা দাম এবং খুচরো বাজারের পরে পাইকারিতেও মূল্যবৃদ্ধির মাথা তোলা। এই অবস্থায় বাজার এখন অপেক্ষা করছে তিনটি বিষয়ের। এক, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আদতে কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারল। যা বোঝা যাবে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক ফল আসতে শুরু করলে। দুই, এ বার বর্ষা ভাল হয়ে চাষবাসের সুবিধা করে দেবে কি না, যাতে আগামী দিনে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ নিয়ে কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। কিছু দিনের মধ্যেই আসবে সেই পূর্বাভাস। তিন, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট কেমন হচ্ছে। মে মাসের গোড়ায় বেরোবে যার ফল। এই সব কিছুর কম-বেশি প্রভাব থাকবে সূচকের উপরে। অতএব মাস দু’য়েক বাজার চঞ্চল থাকার সম্ভাবনা।

তার উপরে ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি
মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৭ মাসে সর্বাধিক।
খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছাড়িয়েছে ৫%। আশঙ্কা, পণ্যের মূল্য এ ভাবে বাড়লে যদি সুদ বাড়ানোর পরিবেশ তৈরি হয়, তা হলে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াটা হোঁচট খেতে পারে। কারণ, তাতে শিল্পের ঋণ তথা লগ্নির খরচ বাড়বে। তেমনই বাড়বে ধার নিয়ে বাড়ি-গাড়ি-ভোগ্যপণ্য কেনার খরচ। যা চাহিদা বাড়ার পথ আটকাতে পারে। যদিও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এখনই সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটবে বলে মনে হচ্ছে না।

বরং কেন্দ্র এবং আরবিআই, দু’পক্ষেরই ধারণা, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভাল রকম এগোবে দেশের অর্থনীতি। কারণ সংক্রমণ বাড়লেও, প্রতিষেধক প্রয়োগের কাজ চলছে জোরকদমে। অর্থনীতি যদি সত্যিই এগোতে শুরু করে তবে আবার শক্তি ফিরে পাবে বাজার। গত এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত আট বার বাজারের পতন হয়েছে ৪%-১০%। প্রতিবারই তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং উঠেছে নতুন উচ্চতায়। এমন উত্থান হয়েছে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে, এই আশায় ভর করে। এ বার সেই ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। বাস্তবে সেটা হলে বাজার তেতে উঠবেই। তবে মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি চিন্তায় রাখছে বন্ড বাজারও। এই দু’য়ের ধাক্কা শেয়ারে লাগলে মিউচুয়াল ফান্ডগুলিও ভুগবে।

বাজার খানিকটা নেমেছে ঠিকই। তবে এখনও তা বেশ উঁচুতে। এই সুযোগে শেয়ার এবং শেয়ার নির্ভর (ইকুইটি) ফান্ড বেচে কিছুটা মূলধনী লাভ তোলা যেতে পারে চলতি অর্থবর্ষ শেষের আগেই। মনে রাখতে হবে বছরে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ পুরো করমুক্ত। এ ছাড়া, যাঁরা পুরনো কর ব্যবস্থাতেই থাকতে চান, তাঁদের হাতে মাত্র ন’দিন সময় আছে কর সাশ্রয়ের জন্য লগ্নি করার। ফলে এই ক’দিন সকলকে একটু সজাগ থেকে সব কাজ গুছিয়ে নিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Share Market Business
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy