সাংবাদিক বৈঠকে পটেল। বুধবার মুম্বইয়ে।—ছবি রয়টার্স।
প্রত্যাশা মতোই সুদ অপরিবর্তিত রাখল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। জানাল, মূল্যবৃদ্ধি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। তবে তার আকাশে অনিশ্চয়তার মেঘ কিছুটা রয়েছে এখনও। তাই আপাতত একই থাকছে সুদ।
তবে গভর্নর উর্জিত পটেল জানিয়েছেন, আগামী দিনে এই সব অনিশ্চয়তা উড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধির হার যদি আর সে ভাবে না বাড়ে, তবে সে ক্ষেত্রে সুদ কমানোর পথও খোলা রাখবেন তাঁরা। যে সুদ কমানোর জন্য শিল্প, সরকারের তরফে চাপ যথেষ্ট।
তবে বোর্ড বৈঠকে দেওয়া ‘কথা রেখে’ অর্থনীতিতে নগদের জোগান বাড়ানোর বিষয়টি কিছুটা নিশ্চিত করতে চেয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যাতে আরও বেশি ধার দিতে পারে সে জন্য তাদের তহবিলের যে অংশ সরকারি ঋণপত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে তুলে রাখতে হয় (এসএলআর), তা কমানোর দাওয়াই দিয়েছে তারা। বর্তমানে এসএলআর ১৯.৫০%। শীর্ষ ব্যাঙ্ক চায় তা ১৮ শতাংশে নেমে আসুক। কারণ তাতে ব্যাঙ্কগুলির হাতে আরও বেশি তহবিল থাকবে। আর সেটা তারা ধার দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারবে।
যা ঘটল...
• রেপো রেট ৬.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত।
• বদল নেই রিভার্স রেপো (৬.২৫%), ব্যাঙ্ক রেট (৬.৭৫%) এবং সিআরআরে (৪%)।
• অক্টোবর থেকে মার্চে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই। ৩.৯-৪.৫ শতাংশ থেকে তা কমে ২.৭-৩.২ শতাংশ।
• চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস থাকছে ৭.৪ শতাংশেই।
• বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে কমানো হবে এসএলআর (সরকারি ঋণপত্রে বাধ্যাতমূলক ভাবে যে টাকা তুলে রাখে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি)।
• ১৮ শতাংশে পৌঁছনো পর্যন্ত প্রতি ত্রৈমাসিকেই ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে কমবে এসএলআর।
• ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম দফায় ওই অনুপাত ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে হবে ১৯.২৫%।
এ দিন চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ভাগে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা ছেঁটেছে আরবিআই। সারা বছরে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ধরে রেখেছে ৭.৪ শতাংশে। যা দেখে অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, বৃদ্ধি ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে শীর্ষ ব্যাঙ্কের ভাবনা সরকারের মতোই।
শিল্প মহল বলছে, ডলারে টাকার দাম বাড়া, বিশ্ব বাজারের তেল কিছুটা সস্তা হওয়া ও মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোর পরেই মনে হচ্ছিল এ দফায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে সুদে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক স্বল্প মেয়াদে ধার দেয় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে) অপরিবর্তিত রাখবে। তবে তাদের দাবি, অর্থনীতিতে ঋণের জোগান বাড়াতে আরবিআইয়ের আরও পদক্ষেপ করা জরুরি। ফিকির প্রেসিডেন্ট রাশেশ শাহ বলছেন, ‘‘বৃদ্ধি ইতিমধ্যেই শ্লথ হয়েছে। অবিলম্বে ঋণ বাড়ানো দরকার।’’
রুপোলি রেখা
• অর্থনীতির ভিত পোক্ত করার পরিবেশ তৈরি।
• বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম নামায় বৃদ্ধির রথে গতি আসার আশা। আপাতত নিয়ন্ত্রণে মূল্যবৃদ্ধিও।
• আগামী দিনে দেশে সমস্যা হবে না ঋণের পরিমাণ বাড়ানোয়।
দুশ্চিন্তা যেখানে
• রবি শস্যের বপন কম হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে ও গ্রামীণ চাহিদায় বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা।
• অস্থির থাকতে পারে আর্থিক বাজার।
• আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় শ্লথ হতে পারে চাহিদা।
• রক্তচাপ বাড়তে পারে বাণিজ্য ঘিরে।
• এ সবের ঝুঁকি বইতে হতে পারে রফতানিকে।
অনেকেই বলছেন, নগদের জোগান না বাড়লে লগ্নির পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই যার ছাপ পড়েছে বৃদ্ধিতে। এসবিআই চেয়ারম্যান রজনীশ কুমারের দাবি, সুদের সিদ্ধান্ত বাজারের প্রত্যাশা মতোই নেওয়া হয়েছে। তবে ঋণনীতিতে অর্থনীতি সম্পর্কে যে দিশা দেখিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক, তা আসলে বাস্তবমুখী চমক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy