সরকারি সিদ্ধান্তের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে অখুশি তেল সংস্থাগুলি।
সরকার বিনিয়োগের রাস্তা প্রশস্ত করে দেওয়ার পরেও দেশে তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে লগ্নি সে ভাবে আসেনি কেন, দেশি-বিদেশি সংস্থার কর্ণধারদের সামনে সেই প্রশ্ন রেখেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তাঁর সামনে কেউ সরাসরি উত্তর দিয়েছেন কি না জানা নেই। তবে পরে প্রশ্নোত্তরের সময়ে বিনিয়োগে সরকারি সিদ্ধান্তের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ব্রিটিশ তেল বহুজাতিক বিপি-র কর্তা বব ডাডলি। জানালেন, ‘ব্র্যান্ড ভারতের’ পক্ষে ওই দেরি ভাল নয়। আপত্তি তুললেন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি হস্তক্ষেপ নিয়েও।
পেট্রল, ডিজেলের আকাশছোঁয়া দরে রাশ টানা যাচ্ছে না কিছুতেই। তার উপরে নভেম্বর থেকে ইরানি তেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শুরু হলে সেই সমস্যা আরও ঘোরালো হওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে দেশি-বিদেশি তেল সংস্থার কর্ণধারদের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন মোদী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সেখানে তাঁর প্রশ্ন ছিল, কেন্দ্র লগ্নির পথ সরল করার পরেও তেল-গ্যাসে লগ্নি সে ভাবে আসেনি কেন? তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনই ডাডলি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতার সময়ে বলেন, ‘‘আশা করি (লগ্নি নিয়ে) সরকারি সিদ্ধান্ত আরও দ্রুত নেওয়া হবে। এখন ওই গতি ভারতের ভাবমূর্তির (ব্র্যান্ড) পক্ষে ভাল নয়। এতে লগ্নির গতি শিথিল হয়।’’ তবে আগামী দিনে তা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
তেলের চড়া দর নিয়ে মানুষের ক্ষোভ সামাল দিতে আড়াই টাকা দাম কমানোর দাওয়াই বাতলেছিল কেন্দ্র। তার মধ্যে এক টাকার বোঝা বইতে বলেছিল তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে। কিন্তু ডাডলির দাবি, দীর্ঘ মেয়াদে এমন পদক্ষেপ আদৌ ফলপ্রসূ হয় না।
দিল্লির চিন্তা
• প্রধানমন্ত্রীর মতে, বিশ্বে তেল উৎপাদন যথেষ্ট। তবু দাম বাড়ছে বিপণনের চতুর কৌশলে। ফলে ধাক্কা খাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতিই।
• তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে লগ্নি আসার পথ প্রশস্ত করেছে কেন্দ্র। তবু দেশে তা সে ভাবে আসেনি।
• আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম যেমন কমা উচিত, তেমনই আপাতত জোর দেওয়া উচিত স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেনে।
সৌদির আশ্বাস
• ভারতে যাতে জোগানে কমতি না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে সৌদি আরব।
• মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি পেট্রো প্রকল্পে ইতিমধ্যেই বিপুল লগ্নির কথা জানিয়েছে সৌদি অ্যারামকো এবং আবু ধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি। আগামী দিনে তেল শোধনের পাশাপাশি পাখির চোখ পেট্রল পাম্প খোলাও।
বৈঠকের পরে জারি করা বিবৃতি অনুযায়ী, তেলের চড়া দামকে বিশ্ব অর্থনীতির বড় বিপদ বলেন মোদী। অভিযোগ করেন, বিশ্বে তেল উৎপাদন যথেষ্ট। তবু দাম বাড়ছে বিপণনের কৌশলে। সম্ভবত ডলারের কাছে কোণঠাসা টাকার কথা ভেবেই আর্জি জানান স্থানীয় মুদ্রায় তেল কেনাবেচা বাড়ানোর। সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী খলিদ আল ফলির অবশ্য আশ্বাস, ভারতে জোগানে কমতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy