দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনতে হলে কাজের জগতে আরও বেশি মহিলাকে টেনে আনার পক্ষে সওয়াল করছেন অর্থনীতিবিদ-সহ বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থার বিশেষজ্ঞেরা। সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রেরও দাবি, কর্মক্ষেত্রে মহিলা কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। মঙ্গলবার শ্রম মন্ত্রকের প্রকাশিত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩ সালে দেশের কাজের বাজারে বেড়েছে মহিলাদের অংশগ্রহণ। তবে শহরের তুলনায় গ্রামে সেই হার অনেক বেশি।
সমীক্ষাটিতে অংশ নেন ২৫ লক্ষেরও বেশি মহিলা, যাঁরা কাজ করেন কিংবা কাজ খুঁজছেন। অনুসন্ধান আবর্তিত হয়েছে তিনটি ক্ষেত্রে— মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়ার সার্বিক পরিস্থিতি, কর্মজীবনে বিয়ে-সন্তানের প্রভাব এবং বয়স অনুযায়ী পুরুষদের নিরিখে কাজ।
সমীক্ষায় প্রথমটির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, শহরের তুলনায় এগিয়ে গ্রাম। গত ১০ বছরে মূলত গ্রামাঞ্চলে মুদ্রা যোজনা থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য চালু আর্থিক সুবিধা-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প মহিলাদের কাজে উৎসাহিত করেছে। যার হাত ধরে সেখানে কাজের ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৬৯%। তা ২৪.৬% থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ৪১.৫ শতাংশে। শহরে বৃদ্ধির হার ২৫%। তা ২০.৪% থেকে হয়েছে ২৫.৪%।
দ্বিতীয় মাপকাঠিতে সারা দেশেই মহিলাদের কাজে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে বিবাহিতেরা। তবে সেই হারও শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি। সামগ্রিক ভাবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম ভারতের ক্ষেত্রে শহরের বিবাহিত মহিলাদের কাজের ছবিটা গ্রামের তুলনায় খারাপ। আবার সন্তান রয়েছে, এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে শহরে সরাসরি কর্মসংস্থান কমেছে অন্ধ্রপ্রদেশের মতো জায়গায়।
তৃতীয় মাপকাঠিতে মহিলা-পুরুষের মধ্যে বিচার করলে ছেলেরা অনেক বেশি দিন নিজেদের কর্মজীবন ধরে রাখতে পারেন। ৩০-৫০ বছর বা তার বেশি বছর বয়সেও কাজ করেন তাঁদের অনেকে। কিন্তু মহিলাদের চাকরি জীবন সাধারণ ভাবে ৩০-৪০ বছরের পরে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে আসে। যার অন্যতম কারণ সন্তান-সহ সংসারের দায়িত্ব। শহরে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। বিশেষত, ১৪ বছরের কম বয়সি সন্তান থাকলে ২০-৩৫ বছর বয়সি শহুরে মহিলাদের কাজের সুযোগ কমে আসে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)