খবরের কাগজ পড়া, দেদার আড্ডা বা রেস্তোরাঁ বাছাই করা থেকে শুরু করে নতুন শহরে রাস্তাঘাট চেনা, গেম খেলা অথবা ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা— মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের (অ্যাপ) দৌলতে এই সব কিছুই এখন নতুন প্রজন্মের হাতের মুঠোয়। সেই সঙ্গে এ বার অ্যাপ-এর হাত ধরে ব্যবসা বাড়াতেও পিছপা হচ্ছে না তারা।
গুগল ইন্ডিয়ায় অ্যাপস-এর দায়িত্বে থাকা তুষার ভাল্লা ও সুব্রত বিশ্বাসের মতে, ডিজিটাল দুনিয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণে ভারতে অ্যাপ ব্যবহারের দিকে নজর দিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা। তাঁদের দাবি, শুধু ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে নয়, কাজের সমন্বয়ের জন্য সংস্থার মধ্যেও অ্যাপ ব্যবহার লাভজনক। এমনকী দক্ষতার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ তৈরি করাও এখন সম্ভব।
তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, দিনের মধ্যে একশো বারের বেশি মোবাইল দেখেন ভারতীয়রা। গড়ে তিন ঘণ্টা সময় খরচ করেন মোবাইলে, যার এক-তৃতীয়াংশ সময় বরাদ্দ থাকে মোবাইল অ্যাপের জন্য। আর এই স্মার্ট ফোন মালিকদের থেকে ব্যবসা পেতে মোবাইল অ্যাপ যে উপযুক্ত ডিজিটাল হাতিয়ার, তা প্রমাণ করেছে উবের, ওলা ক্যাবের মতো ট্যাক্সি পরিষেবা সংস্থা থেকে শুরু করে মেকমাইট্রিপের মতো ভ্রমণ সংস্থার সাফল্য। এ বার সেই পথে হাঁটল অঞ্জলি জুয়েলার্স-ও।
অঞ্জলি জুয়েলার্সের কর্ণধার অনর্ঘ চৌধুরীর দাবি, তাঁরাই পূর্বাঞ্চলের প্রথম গয়না সংস্থা, যাঁরা গয়না বিক্রির জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু করল। তাঁর মতে, ডিজিটাল দুনিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা নতুন প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে চাই ডিজিটাল হাতিয়ার। যে কারণে মুঠোয় ধরা মোবাইলের মাধ্যমেই এই প্রজন্মকে নিজেদের ক্রেতা হিসেবে পাওয়া সহজ বলে মনে করছেন অনর্ঘ।
এ ছাড়া, অ্যাপের মাধ্যমে অর্থাৎ অনলাইনে ব্যবসা করার অন্য একটি বড় সুবিধাও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া দামে জায়গা কিনে বা ভাড়া করে দোকান চালানো বেশ খরচসাপেক্ষ। অনলাইন দুনিয়ায় এই খরচ নেই। প্রাথমিক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির একটি পরিকাঠামো তৈরি করে ফেললে পরবর্তী ধাপে সামান্য বাড়তি খরচেই বিক্রির নিত্যনতুন কৌশল ছকে ফেলা সম্ভব।
আর, এই বাজারের রমরমার দিকে চোখ রেখেই জন্ম হচ্ছে নিত্যনতুন অ্যাপ-এর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোবাইল অ্যাপের দ্রুততম হারে বাড়তে থাকা বাজার ভারত। বিশ্ব বাজারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, ইন্দোনেশিয়ার পরেই চতুর্থ স্থানে এ দেশ। আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা কেপিএমজি-র সমীক্ষা অনুসারে, ২০১৫ সালে ভারতে মোট ৯০ কোটি অ্যাপ ডাউনলোড করা হবে। ২০১২ সালেও যে-সংখ্যা ছিল দেড় কোটির সামান্য বেশি।
অ্যাপ নির্মাতাদের দাবি, স্মার্ট ফোনের হাত ধরেই আসবে স্মার্ট ব্যবসার নতুন দিশা। সমীক্ষায় পূর্বাভাস, ২০১৯-এ স্মার্ট ফোন মালিকের সংখ্যা ৪৩ কোটি ছাড়াবে। যেখানে ২০১৪-তে তা ছিল ১১ কোটির বেশি। বাড়বে অ্যাপ ডাউনলোডের সংখ্যাও। আর এই হিসেব কষেই বিভিন্ন মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে বার করার পাশাপাশি ব্যবসা বাড়ানোর পথ তৈরি করে দিতেও কোমর বেঁধে ঝাঁপাচ্ছে অ্যাপ নির্মাতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy