প্রতীকী ছবি
দুর্গাপুজোর আরও চার মাস বাকি। অন্যান্য বছর এ সময় দম ফেলার ফুরসত থাকে না মেটিয়াবুরুজের। এখানকার কারখানাগুলির উপর বাড়তে থাকে নতুন ফ্যাশনের রকমারি পোশাক তৈরির চাপ। জুলাই থেকে যা কিনতে ভিড় জমান পাইকারি খদ্দেররা। কিন্তু করোনার কামড়ে এ বছর ছবিটা একেবারে অন্য রকম। ছোট ওস্তাগরদের পুঁজি প্রায় শেষ। আর যাঁদের হাতে কিছুটা হলেও পুঁজি আছে, চাহিদার অভাবে তাঁদের কাজের বরাত নেই। সব মিলিয়ে রাজ্যের আর্থিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গা আজ ধুঁকছে।
প্রায় আড়াই মাস লকডাউনের পরে সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হয়েছে অর্থনীতির চাকাকে ফের চালু করার প্রক্রিয়া। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো পুঁজি এবং বরাতের অভাবে বিপর্যস্ত রাজ্যের ছোট ছোট বহু পোশাক কারখানা। দরজা বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েক হাজারের। কাজ খুইয়েছেন বহু মানুষ। যার বড় অংশ মেটিয়াবুরুজে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, অর্থনীতির ঝিমুনির ফলে গত বছর থেকেই বাজার খারাপ হচ্ছিল। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা দিয়েছে লকডাউন।
সূত্রের খবর, মেটিয়াবুরুজে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার ছোট ছোট কারখানা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অন্যান্য পোশাকের পাশাপাশি মূলত ছোটদের বাহারি পোশাকের জন্যই এখানকার ওস্তাগরদের দেশ জুড়ে সুনাম। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সমস্ত বড় হাটে তাঁদের পোশাক বিক্রি হয়। রফতানি হয় শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, আফগানিস্তানের মতো কিছু দেশে। আর এই কারখানাগুলির সঙ্গে জড়িয়ে দু’লক্ষ মানুষের রুজিরুটি। যাঁদের অনেকের হাতেই এখন কাজ নেই।
আরও পড়ুন: এসঅ্যান্ডপি-র বার্তা কতখানি স্বস্তির
এই পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানাগুলির জন্য কম সুদে পুঁজি চেয়ে রাজ্যের দ্বারস্থ হয়েছে মেটিয়াবুরুজ, বড়বাজার-সহ বিভিন্ন জায়গার পোশাক সংস্থাগুলির পাঁচটি সংগঠন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তার মাধ্যমেই ঋণের আর্জি জানিয়ে নবান্নে চিঠি দিয়েছে তারা।
মেটিয়াবুরুজের বাংলা রেডিমেড গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা দাবি করেছেন, পুঁজির অভাবে ওই অঞ্চলে ইতিমধ্যেই হাজার তিনেক ছোট কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ হারিয়েছেন কারখানাগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তিনি আরও জানান, অধিকাংশের ছোট কারখানার ওস্তাগরদের হাতে ব্যবসা চালানোর জন্য মাত্র ৫-৭ লক্ষ টাকার পুঁজি থাকে। কিন্তু লকডাউনের বাজারে আয় না-থাকায় এখন হাত পুরোপুরি খালি। ফলে অনেকেই আর কারখানা খুলতে পারছেন না। তাই তাঁরা সাহায্য চেয়ে রাজ্যের দ্বারস্থ হয়েছেন, দাবি নজরুল ইসলাম মোল্লার।
পশ্চিমবঙ্গ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স ও ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি হরিকিষেণ রাঠির দাবি, মেটিয়াবুরুজের মতো বড়বাজার, হাওড়া-সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গার ছোট পোশাক তৈরির কারখানাগুলিরও প্রায় একই অবস্থা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুতের অপেক্ষায় ২ লক্ষ গ্রাহক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy