যাত্রী গাড়ির ব্যবসায় সাফল্যের শিখর ছোঁয়ার পরে এ বার পরীক্ষা বাণিজ্যিক গাড়ি নিয়ে।
সেই লক্ষ্যেই মারুতি-সুজুকি-র প্রথম হাল্কা বাণিজ্যিক গাড়ি ‘সুপার-ক্যারি’। যার ক্রেতা টানতে কিছুটা হলেও নিজেদের যাত্রী গাড়ির ক্রেতাদের উপরই ভরসা করছে দেশের বৃহত্তম এই গাড়ি সংস্থা। কারণ তাদের যাত্রী গাড়ির মালিকদের প্রায় অর্ধেকই স্বনির্ভর। যাঁদের কারও কারও ব্যবসায় বাণিজ্যিক গাড়ির প্রয়োজন হবে বলেই আশা সংস্থার।
বস্তুত, যাত্রী গড়ির সাফল্যের চাবিকাঠিই প্রথম বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রেও তাদের অন্যতম হাতিয়ার। সোমবার সুপার-ক্যারি আনুষ্ঠানিক ভাবে কলকাতার বাজারে এনেছে মারুতি। সেই অনুষ্ঠানে সংস্থার এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর (বিপণন ও বিক্রি) আর এস কলসি জানান, তাঁদের যাত্রী গাড়ির ক্রেতার প্রায় অর্ধেকই স্বনির্ভর। তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্ট। স্বনির্ভর হওয়ার অর্থ, তাঁদের অনেকেরই হয়তো ব্যবসা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের কারও কারও হাল্কা বাণিজ্যিক গাড়ির প্রয়োজন হলে এত দিন প্রতিদ্বন্দ্বী টাটা মোটরস বা মহীন্দ্রার শো-রুমে যেতে হত। কিন্তু ক্রেতাদের পছন্দ ও বিশ্বাসযোগ্যতা যে-কোনও গাড়ি সংস্থার কাছেই মূল বিষয়। সুপার-ক্যারির ক্রেতা টানতে সংস্থার প্রতি যাত্রী গাড়ির ক্রেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই কাজে লাগাতে চাইছে সংস্থা। তাদের দাবি, নিজের যাত্রী গাড়ি সংস্থারই ভাঁড়ারে বাণিজ্যিক গাড়ি থাকলে নানা কারণে স্বাভাবিক ভাবেই সেটির প্রতি কিছুটা বাড়তি আগ্রহ দেখাবেন তাঁরা।
কলসির অবশ্য আরও যুক্তি, দেশে ই-কমার্স বা নেট বাজারে বিক্রি চড়চড় করে বাড়ছে। ফলে ‘লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি’ বা এ ধরনের পণ্য ক্রেতার হাতে বা দোকানে পোঁছে দিতে ছোট ও হাল্কা বাণিজ্যিক গাড়ির চাহিদাও বাড়বে।
আপাতত কলকাতা ছাড়াও আমদাবাদ ও লুধিয়ানায় সুপার-ক্যারি বিক্রি হবে। ২০১৬-’১৭ সালে হরিয়ানা ও রাজস্থানেও মিলবে সেটি। এ জন্য আলাদা ৫০টি শো-রুম খুলবে তারা।
সংস্থার কর্তারা জানান, গাড়িটি তৈরি করতে ৩০০ কোটি টাকা লগ্নি করা হয়েছে। কলকাতায় দাম পড়ছে ৪.১১ লক্ষ টাকা। ৮০০ সিসি-র ডিজেল ইঞ্জিনের এই গাড়িটিতে ৭৪০ কেজি-র পণ্য বহন করা যাবে। গুরুগ্রামের কারখানায় তৈরি হচ্ছে এটি।
অবশ্য আরও আগেই এটি বাজারে আসার কথা ছিল। কিন্তু মূল পরিকল্পনার পরে ফের নকশা বদলের জন্য গাড়িটি তৈরি করতে বাড়তি সময় লেগেছে।
বাণিজ্যিক গাড়ি আনতে মারুতি-সুজুকি কয়েক দশক অপেক্ষা করলেও ইতিমধ্যেই সেই বাজারে রয়েছে টাটা মোটরসের এস, মহীন্দ্রা অ্যান্ড মহীন্দ্রার জিও, অশোক লেল্যান্ডের দোস্ত ইত্যাদি। বাজারে টাটাদের দখলদারিই প্রায় ৫০%।
সার্বিক ভাবে বাণিজ্যিক গাড়ির ব্যবসা গত কয়েক বছরে খুব একটা ভাল নয়। কারণ অর্থনীতির হাল এখনও ততটা ফেরেনি। এর মধ্যে হাল্কা বাণিজ্যিক গাড়ির বাজার মাঝারি ও ভারী বাণিজ্যিক গাড়ির চেয়ে খারাপই ছিল। কারণ তৃণমূল স্তরে অর্থনীতির চাকা না-ঘুরলে খুচরো ব্যবসায় চাহিদা বাড়ে না। তবে গত বারের চেয়ে এ বার এপ্রিল-জুলাইয়ে এ ধরনের গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ১১%, যা মাঝারি ও ভারী বাণিজ্যিক গাড়ির চেয়েও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy