রাজ্যে দু-তিন লক্ষ সরকারি চাকরির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় বুধবার তিনি বলেন, ‘‘এক লক্ষ শিক্ষক, আরও দু’লক্ষ পুলিশ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে চাকরি তৈরি রয়েছে।’’ সর্বোচ্চ আদালতে চলা মামলার মীমাংসা হলেই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারবে বলেও জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বিলেত যাচ্ছেন শনিবার। অক্সফোর্ডের কলেজে তিনি আমন্ত্রিত বক্তা। সেই সঙ্গে বাণিজ্যিক বৈঠকের কর্মসূচিও রয়েছে। যাওয়ার আগে এ দিন বিধানসভায় স্বাস্থ্য দফতরের বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে ভোটের সুরই বাঁধতে চেয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক ভাবে বিরোধী বিজেপির হিন্দুত্বের পাল্টা নিজের মত জানানোর পাশাপাশি তুলে ধরেছেন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার কথাও। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘ওখানে খারাপ কিছু বলেনি। এর পর নিয়োগ চালু হলে এক লক্ষ শিক্ষক নেওয়া হবে। পুলিশেও চাকরি হবে। সব মিলিয়ে দু-তিন লাখ কাজের সুযোগ রয়েছে।’’
এই প্রসঙ্গেও বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার জন্য ঘুরিয়ে তাঁদের দায়ী করে মমতা বলেন, ‘‘দয়া করে নিয়োগ আটকাবেন না। এ সব খেলা খেলবেন না!’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য নিয়োগে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) সংরক্ষণ বাতিলের প্রসঙ্গ এনে সরকারকে আক্রমণ করেন। বলেন, “ওবিসি সংরক্ষণের নামে দু’কোটি হিন্দুকে বঞ্চিত করছেন। সুপ্রিম কোর্টে আপনার আইনজীবী বলেছেন, আমরা আবার সমীক্ষা করব। নজর রাখছি। আপনার তোষণের রাজনীতির জন্য হিন্দুরা বঞ্চিত হচ্ছে, এর প্রতিবাদ বিধানসভায় করেছি আমরা।’’
স্বাস্থ্য দফতরের সাফল্যকেও তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যে সরকারি কাঠামো নিয়ে বাম আমলের সঙ্গে তুলনা করে তাঁর বার্তা, ‘‘আমাদের রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেশে সেরা। আন্তর্জাতিক স্তরেও স্বীকৃতি মিলেছে।’’ হাসপাতালের শয্যা, চিকিৎসক, নার্সিং-কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দও বেড়েছে বহু গুণ।’’ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৭০,০০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।
বিধানসভায় এ দিনের বিতর্কে বিরোধী হিসেবে উপস্থিত একমাত্র আইএসএফের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী জেলার পরিকাঠামো নিয়ে কিছু অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, জেলায় জেলায় যে মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে সরকার প্রচার করে, সেখান থেকে কলকাতায় রোগী পাঠানোর ঘটনা কমেনি। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)