Kasinathuni Nageswara Rao, Freedom fighter gave India its favourite balm Amrutanjan dgtl
Kasinathuni Nageswara Rao
স্বাধীনতা সংগ্রামী থেকে ব্যবসায়ী, কলকাতা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ‘অম্রুতাঞ্জন’ তৈরি করেন ইনি
আট এবং নয়েক দশকে প্রায় প্রতি ভারতীয়ের ঘরে অন্তত একটা অম্রুতাঞ্জন থাকা যেন ছিল বাধ্যতামূলক।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
অনেকের নিত্যসঙ্গী এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মাথাব্যথার বাম অম্রুতাঞ্জন। আট এবং নয়েক দশকে প্রায় প্রতি ভারতীয়ের ঘরে অন্তত একটা অম্রুতাঞ্জন থাকা যেন ছিল বাধ্যতামূলক।
০২২০
হলুদ রঙের মোটা কাচের মধ্যে লুকিয়ে থাকত ‘ম্যাজিক’। মাথা ব্যথা থেকে শরীরের কোনও অংশে যন্ত্রণা সবই নিমেষে গায়েব হয়ে যেত এর ছোঁয়ায়।
০৩২০
জানেন কি এই ম্যাজিক বাম আমাদের উপহার দিয়েছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী! তিনি একাধারে সাংবাদিক এবং সমাজসেবীও। তাঁর নাম কাসিনাথুনি নাগেশ্বর রাও।
০৪২০
তবে কাসিনাথুনি অধিক পরিচিত নাগেশ্বর রাও পন্টুলু নামে। গাঁধীজির সঙ্গে সত্যাগ্রহ আন্দোলন, খদ্দর আন্দোলন এবং মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি থেকে অন্ধ্রপ্রদেশকে পৃথক রাজ্য গড়ে তোলার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর।
০৫২০
১৮৬৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গ্রামের স্কুল থেকে পাশ করে মাদ্রাজ ক্রিশ্চিয়ান কলেজে ভর্তি হন।
০৬২০
তার পর ওষুধ ব্যবসায় হাত লাগান তিনি। কলকাতা থেকে ওষুধ তৈরির প্রশিক্ষণ নেন।
০৭২০
প্রশিক্ষণ নিয়ে মুম্বই এসে তিনি এক ইউরেপীয় সংস্থায় কাজে যোগ দেন। খুব দ্রুত কর্মোন্নতি হয় তাঁর। ওই সংস্থারই উচু পদে তাঁকে নিয়োগ করা হয়। দেশীয় চিন্তায় সম্পৃক্ত নাগেশ্বর ইউরোপীয় সংস্থায় কাজ করতে পছন্দ করতেন না।
০৮২০
তিনি কলকাতায় নেওয়া প্রশিক্ষণ কাজে লাগাতে শুরু করেন। কয়েক দিনের মধ্যে অম্রুতাঞ্জনের ফর্মুলা আবিষ্কার করে ফেলেন।
০৯২০
১৮৯৩ সালে মুম্বইয়ে তিনি নিজের কোম্পানি গঠন করেন। ঈষৎ হলুদ রঙের কড়া গন্ধযুক্ত মাথাব্যথার বাম অম্রুতাঞ্জন প্রস্তুত করতে শুরু করেন।
১০২০
যে কোনও ব্যবসা দাঁড় করানো খুব কঠিন। প্রথম দিকে প্রচুর শ্রম দিতে হয়। নাগেশ্বরও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না।
১১২০
প্রথম প্রথম বিনামূল্যে এই মাথাব্যথার বাম তিনি জনে জনে বিতরণ করতে শুরু করেন। ঠিক একই কৌশল নিয়েছিলেন জামা কাপড় ধোওয়ার পাউডার ‘নিরমা’র মালিক কারসানভাই পটেলও।
১২২০
অম্রুতাঞ্জন দ্রুত তার ম্যাজিক দেখাতে শুরু করল। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা পেল তা।
১৩২০
খুব কম টাকায় এই বাম বিক্রি করতে শুরু করলেন নাগেশ্বর। দেখতে না দেখতেই নাগেশ্বরের জীবনেও ম্যাজিক করল অম্রুতাঞ্জন।
১৪২০
ব্যবসায় তিনি প্রতিপত্তি জমানোর পর তেলুগু মানুষদের পাশে দাঁড়ান তিনি। তেলুগু মানুষদের জন্য পৃথক রাজ্যের প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলব্ধি করতেন।
১৫২০
মুম্বইয়ে ছিল তাঁর ব্যবসা। সেখানেই তিনি পৃথক অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের জন্য লোকবল বাড়াতে শুরু করেন। ‘অন্ধ্র পত্রিকা’ নামে এক সংবাদপত্রও চালু করে দেন।
১৬২০
তাঁর পত্রিকাও তেলুগু মানুষদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নতুন রাজ্যের ওই আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। ১৯২৪ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত অন্ধ্র স্টেট কংগ্রেস কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
১৭২০
১৯৩৭ সালে মুম্বইয়ে তাঁর বাড়িতেই তেলুগু নেতারা বৈঠক করেন এবং পৃথক রাজ্য নিয়ে যাবতীয় পরিকল্পনা করেন। তাঁর সক্রিয় ভূমিকার জন্য তিনি ‘দেশোদ্ধারাকা’ নামে পরিচিত হন।
১৮২০
কিন্তু ব্রিটিশদের হাত থেকে ভারতকে মুক্ত করা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী কাজকর্মের জন্য পৃথক অন্ধ্রপ্রদেশের দাবি অনেক বছর ধামাচাপা হয়ে গিয়েছিল।
১৯২০
১৯৫২ সালে পৃথক রাজ্য ঘোষিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার আগেই ১৯৩৮ সালে মৃত্যু হয় তাঁর।
২০২০
নাগেশ্বরের মৃত্যু হলেও তাঁর স্বপ্ন, তাঁর পাবলিশিং হাউস, তাঁর লাইব্রেরি এবং সর্বোপরি ভারতবাসীর প্রিয় মাথাব্যথার বাম অম্রুতাঞ্জন অমর হয়েই রয়ে গিয়েছে।