আর মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে ভারত। আর্থিক সংস্থা ‘মর্গান স্ট্যানলি’র এ-হেন পূর্বাভাস ঘিরে দুনিয়া জুড়ে পড়ে গিয়েছে হইচই। তাদের দাবি সত্যি হলে ২০২৮ সালের মধ্যে নয়াদিল্লির আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.৭ লক্ষ কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছবে। যাকে এক কথায় ‘অবিশ্বাস্য’ বলছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হিসাবে ভারতের আত্মপ্রকাশ করার নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলেছে আর্থিক সংস্থা ‘মর্গান স্ট্যানলি’। তাদের যুক্তি, ২০২৮ সালের মধ্যে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে এই দেশ। ফলে এখানেই বিক্রি হবে বিশ্বের উৎপাদিত পণ্যের একটি বড় অংশ। এটি সামগ্রিক ভাবে আর্থিক বৃদ্ধির দিক থেকে বড় ভূমিকা পালন করবে।
২০২৩ সালে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল সাড়ে তিন লক্ষ কোটি ডলার। আগামী বছর সেটাই বেড়ে ৪.৭ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ওই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির ঘরে ঢুকে পড়বে ভারত। নয়াদিল্লির সামনে থাকবে তিনটি মাত্র দেশ। সেগুলি হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং জার্মানি। ২০২৮ সালের মধ্যে এই দৌড়ে বার্লিন পিছিয়ে পড়বে বলে স্পষ্ট করেছে ‘মর্গান স্ট্যানলি’।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে ১২ তম স্থানে ছিল ভারত। ২০০০ সালে আর এক ধাপ নীচে নেমে যায় নয়াদিল্লি। এর পর অবশ্য ধীরে ধীরে উপরের দিকে চড়তে থাকে অর্থনীতির সূচক। ফলে ২০২০ সালে নবম এবং ২০২৩ সালে পঞ্চম স্থানে চলে আসে সেটি।
বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২০২৯ সালে বিশ্বের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্টস বা জিডিপি) ক্ষেত্রে ভারতের অবদান ৩.৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। এদেশের আর্থিক বৃদ্ধির তিনটি স্তরের কথা উল্লেখ করেছে ‘মর্গান স্ট্যানলি’। সেগুলি হল, বিয়ার, বেস এবং বুল। তিনটি ক্ষেত্রেই সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে আশাবাদী আর্থিক সংস্থাটির বিশ্লেষকেরা। বিয়ারের ক্ষেত্রে এ বছরের ৩.৬৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি ২০৩৫ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৬.৬ লক্ষ কোটি ডলার।
একই ভাবে বেস অর্থনীতির অঙ্ক ৮.৮ লক্ষ কোটি ডলার এবং বুল অর্থনীতির অঙ্ক ১০.৩ লক্ষ কোটি ডলারে গিয়ে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ এ বছরের ২,৫১৪ ডলার থেকে বেড়ে ২০৩৫ সালে ৫,৬৮৩ ডলারে গিয়ে পৌঁছবে। আর্থিক পরিস্থিতি বুল থাকলে এটি ৬,৭০৬ ডলার পর্যন্ত যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে ‘মর্গান স্ট্যানলি’।