ভারতীয় টাকার নতুন দিন প্রতীকী ছবি।
ডলারের অনুপাতে টাকার দাম অনেকটাই কম। তেমনই এক পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ভারতীয় টাকাকে নতুন গুরুত্বে নিয়ে যেতে চলেছে। শীর্ষ ব্যাঙ্ক ঘোষণা করেছে, টাকার মাধ্যমেই যাতে আন্তর্জাতিক লেনদেন করা যায় তেমন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এই সংক্রান্ত নির্দেশও দিয়ে দিয়েছে আরবিআই। তাতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে, বিশেষ করে রফতানিতে গতি আনতেই এই উদ্যোগ।রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের রফতানি বাণিজ্য-সহ সার্বিক আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায় যুক্তদের মধ্যে ভারতীয় মুদ্রায় লেনদেনের ইচ্ছা দেখা যাচ্ছিল। সেটা মাথায় রেখেই এই নতুন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর ফলে বর্তমান ব্যবস্থার পাশাপাশি ইনভয়েসিং, পেমেন্ট এবং আমদানি বা রফতানির সেটেলমেন্ট ভারতীয় মুদ্রার মাধ্যমে করা যাবে। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই এমন উদ্যোগ নেওয়ার আর্জি শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে জানিয়েছিল দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)। স্টেট ব্যাঙ্কের বক্তব্য ছিল, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক লেনদেনে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সময়ে ছোট করে হলেও ভারতীয় মুদ্রার মাধ্যমে বিদেশি লেনদেন শুরুর জন্য উদ্যোগী হওয়া যেতে পারে।
কোনও দেশের মুদ্রাকে তখনই ‘আন্তর্জাতিক’ বলা হয় যখন তার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লেনদেন করতে চায়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য আমেরিকার ডলার। এর পরেই রয়েছে ইউরোপের মুদ্রা ইউরো। ভারতীয় মুদ্রা অতীতেও আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবহার হয়েছে। ১৯৬০-এর দশকে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কুয়েত এবং ওমান ভারতীয় টাকা গ্রহণ করত। কিন্তু পরবর্তীকালে তা বন্ধ হয়ে যায়।কী ভাবে ভারতীয় মুদ্রায় আন্তর্জাতিক লেনদেন হবে তার কিছু নিয়মও জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্থায়ী ভাবে টাকার গুরুত্ব আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়াতে রফতানি বৃদ্ধি করতে হবে। ভারতকে বেশি করে উৎপাদনশীল দেশ হয়ে উঠতে হবে। এখন শুরুতে টাকা সবার কাছে মান্যতা না পেলেও ধীরে ধীরে ভারতের উৎপাদনের উপরে নির্ভর দেশেরা টাকাকে লেনদেনের মাধ্যম হিসাবে বেছে নেবে। এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের উদাহরণ রাশিয়া। কিছুদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন তাদের থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস নিতে হলে ইউরোপের দেশগুলিকে ইউরো বা ডলার দিলে হবে না। দিতে হবে রাশিয়ার মুদ্রা রুবেল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিন এই দাবি জানাতে পেরেছেন কারণ, ইউরোপের দেশগুলিতে ৪০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস যায় রাশিয়া থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy