বিশ্বজুড়ে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে এক জন কর্মী ছাঁটাই। সম্পদ কমানো। এবং ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের আয়তন ছোট করে আনা। এ সবের হাত ধরে ফের ব্যবসা ঢেলে সাজার কথা জানাল এইচএসবিসি। ২০০৮ সালের মন্দার পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার। এ বার লক্ষ্য মুনাফা বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরানো আর শেয়ারহোল্ডারদের হাতে লাগানো ডিভিডেন্ড (লভ্যাংশ) তুলে দেওয়া।
সংস্থা জানিয়েছে, লক্ষ্য ছোঁয়ার জন্য আড়াই বছরের মধ্যে বার্ষিক খরচ ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত বাঁচাতে চেষ্টা করবে তারা। পিছপা হবে না বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ে। তবে চাঙ্গা হওয়ার জন্য এইচএসবিসি-র এই পরিকল্পনার প্রভাব অবশ্য ভারতে খুব সামান্যই পড়বে বলে আশা সংশ্লিষ্ট মহলের। এমনকী সংস্থা সূত্রেও তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। এমনকী এ সবের জেরে এ দেশ বাড়তি কিছু সুবিধা পেতে পারে বলেও ধারণা তাদের।
বহুজাতিক এইচএসবিসি সম্পত্তির নিরিখে ইউরোপের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। তাদের দাবি, ব্যবসার স্বার্থেই অলাভজনক শাখাগুলি বন্ধ করবে তারা। প্রয়োজনে বেরিয়ে আসবে সেই সব দেশ থেকে, যেখানে ব্যবসা করা মানে লাভের থেকে বেশি লোকসান গোনা। যার জেরে প্রায় ৫০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে হবে। এক বেশির ভাগটাই হবে ব্রাজিল ও তুরস্কে ব্যবসা বিক্রি করে দেওয়ার কারণে।
এই পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি হিসেবে লগ্নিকারীদের আরও বেশি ডিভিডেন্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যাঙ্কের চিফ এগজিকিউটিভ স্টুয়ার্ট গালিভার। তাঁর দাবি, এ ভাবে আগের মতো ফের লম্বা সময় ধরে বেশি ডিভিডেন্ড দেওয়ার মুখে দাঁড়াতে চলেছে ব্যাঙ্ক।
যদিও লগ্নিকারীরা এইচএসবিসির কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে কিছুটা ত্রস্ত। বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মতে, যতক্ষণ না ব্যাঙ্কের পরিচালকেরা কর্মকাণ্ড আরও সহজ করে গ্রাহক টানতে পারছেন, ততক্ষণ এ সব অর্থহীন।
একাংশ অবশ্য মনে করছে, বোঝা হয়ে দাঁড়ানো সম্পদ কমানোর মতো পদক্ষেপ যথেষ্ট শক্তিশালী। তাঁদের মতে, এর ফলে এশিয়ায় সম্পদ বাড়ানোর জন্য তহবিল জোগাতে পারবে ব্যাঙ্কটি। যার মাধ্যমে খরচের একটা বড় অংশ বাঁচাতে পারবে এইচএসবিসি। এবং এর সুবিধা পুরোমাত্রায় নেওয়ার সম্ভাবনা বিশেষত ভারত ও চিনের।
এইচএসবিসি কর্মী কমাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাক অফিসের কাজেও। এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ব্রিটেনেই ছাঁটাই হচ্ছে প্রায় ৭,০০০-৮,০০০ জন।
এইচএসবিসি ইন্ডিয়ার এক শীর্ষ আধিকারিকও বলেন, ‘‘এই সব পদক্ষেপ এশিয়ার জন্য ইতিবাচক হতে পারে। কারণ এশিয়া, বিশেষত ভারতের বাজার মজবুত করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি আমরা।’’ সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কটি আগামী দিনে ভারত ও চিনে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডেভেলপমেন্ট ও ব্যাক অফিসের কাজ বাড়াতে পারে। বিশেষত যেখানে নিজেদের সদর দফতরও লন্ডন থেকে এশিয়ায় সরিয়ে আনার কথা ইতিমধ্যেই ভাবতে শুরু করেছে এইচএসবিসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy