পঞ্চমীর দুপুরে মধ্য কলকাতায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ আর গণেশচন্দ্র অ্যাভেনিউ সংলগ্ন অফিসপাড়ার পরিচিত হোটেল-রেস্তরাঁর বড় অংশ ভর্তি! ভিড়ের বেশির ভাগটা জুড়ে নবীন প্রজন্ম।
কোভিড, শ্লথ অর্থনীতি এবং চড়া মূল্যবৃদ্ধির ঝাপ্টা সয়ে আসার পরে এই ছবিটা ভরসা জোগাচ্ছে, দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্পের। তারা বলছে, ষষ্ঠীর আগেই এমন ভিড় সাধারণত পার্ক স্ট্রিট এলাকায় দেখা যায়, বিশেষত অল্প বয়সিদের। হোটেল-রেস্তরাঁগুলির সংগঠন এইচআরএইআই সূত্রের দাবি, কলকাতা এবং শহরতলির পাশাপাশি শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর, আসানসোলের মতো জেলা শহরেও পুজো শুরুর আগের ভিড় এ বছর অনেক বেশি। যা ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত প্রায় ২০-৩০ শতাংশ বাড়তি ব্যবসার প্রত্যাশায় জ্বালানি জোগাচ্ছে।
গত পুজোর মরসুমে হোটেল-রেস্তরাঁর ব্যবসা প্রাক-কোভিড পর্বকে ছাপালেও, সংশয় দানা বাঁধে চড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে। তার উপর কাঁচামাল, জ্বালানি ইত্যাদির চড়া দামে যে বাড়তি খরচের বোঝা তাদের ঘাড়ে চেপেছে, তার কিছুটা হালকা করতে এ বছর অনেকে পুজোর আগে খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে তার পরেও ভিড়ের ঢল দেখে ব্যবসার চাকায় আরও গতির আভাস পাচ্ছে তারা। এইচআরএইআই-এর প্রেসিডেন্ট তথা মন্থন এবং সং হে রেস্তরাঁর কর্ণধার সুদেশ পোদ্দারের দাবি, ইতিমধ্যেই গড়ে অন্তত ১০% বাড়তি অতিথি আসছেন। আগ্রহে ইন্ধন জুগিয়েছে কলকাতার পুজোকে ইউনেস্কোর দেওয়া ‘হেরিটেজ’ স্বীকৃতি। যা এখন ১০ দিনের উৎসবে পরিণত।
আমিনিয়ার অন্যতম মহম্মদ আজহারের দাবি, দুর্গা পুজো এখন ‘কার্নিভাল’। বিদেশিরা তো বটেই, ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছেও দেখার মতো বিষয়। গত রবিবার থেকে ভিড়ের স্রোত বাড়ছে। যে কারণে তাঁদের বিভিন্ন শাখায় ষষ্ঠীর আগেই ব্যবসা বেড়েছে প্রায় ৩০%।
ছবিটা এ বার একটু আলাদা, বলছেন ব্রডওয়ে হোটেলের কর্ণধার সন্দীপ সেহগাল। তাঁর দাবি, অন্যান্য বার (করোনাকাল বাদে) পুজোর মুখেও অফিসের দিনে রেস্তরাঁর ৬০-৭০ শতাংশ ভর্তি থাকে। এ বার তা প্রায় ৯০%। ব্যবসা বৃদ্ধি প্রায় ২০%। পুজোর শেষে ৩০% ছাড়ানোর আশা। সেহগালের কথায়, ‘‘নবীন প্রজন্ম বাইরে বেরোচ্ছে বেশি। তার সুবিধা পাচ্ছি আমরা।’’ আর এক হোটেল ওপিয়ামের কর্ণধার প্রণব সিংহও প্রত্যাশা পূরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)