ঘোর সঙ্কটে ধনকুবের মার্কিন শিল্পপতি মার্ক জ়ুকেরবার্গ। ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াট্সঅ্যাপ বিক্রির জন্য তাঁকে বাধ্য করতে পারে আমেরিকার প্রশাসন। বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে মামলায় জড়িয়েছেন ফেসবুক কর্ণধার। তাতে হারলে জ়ুকেরবার্গের কপাল যে পুড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেসবুকের মূল সংস্থা মেটার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে সেই মামলার শুনানি। সূত্রের খবর, ৩৭ দিন পর্যন্ত এটি স্থায়ী হতে পারে। তার মধ্যেই টেক জায়ান্ট সংস্থাটির দু’টি শাখা ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াট্সঅ্যাপ বিক্রির জন্য জ়ুকেরবার্গকে আমেরিকার ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) বাধ্য করতে পারে বলে খবর প্রকাশ্যে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের এ-হেন পদক্ষেপকে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এর মাধ্যমে মেটার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে তারা। উল্লেখ্য, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াট্সঅ্যাপ অধিগ্রহণ করেন জ়ুকেরবার্গ।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইনস্টাগ্রাম অধিগ্রহণে ১০০ কোটি ডলার খরচ করেন মেটা কর্ণধার। আর হোয়াট্সঅ্যাপকে হাতে পেতে ২,২০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছিলেন তিনি। এফটিসির অভিযোগ, সমাজমাধ্যমের জগতে অবৈধ ভাবে দীর্ঘমেয়াদি একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখতে ওই দুই সংস্থা কিনে নেন জ়ুকেরবার্গ।
ফেসবুক কর্ণধারের বিরুদ্ধে করা মামলায় বলা হয়েছে, মূল প্রতিদ্বন্দ্বীরা যাতে সময় কিনতে না পারেন, তাই বেছে বেছে সেই সংস্থাগুলিকে অধিগ্রহণ করে মেটা। অত্যন্ত সুকৌশলে গোটা বিষয়টিকে সাজানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
এফটিসির দাবি, ঘটনার তদন্তে নেমে জ়ুকেরবার্গের করা বেশ কিছু ইমেলের হদিস মেলে। সেখানে ফেসবুক কর্ণধার ‘প্রতিযোগিতার চেয়ে অধিগ্রহণ ভাল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর এই মানসিকতাকে নতুন প্রযুক্তি ‘উদ্ভাবনের পথে দমনমূলক পদক্ষেপ’ বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থাগুলি জানিয়েছে, বিচারক জেমস বোসবার্গের সভাপতিত্বে জ়ুকেরবার্গের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত সমাজমাধ্যম পরিষেবাগুলির উপর মেটার একচেটিয়া আধিপত্যে আছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন তিনি।
এফটিসির অভিযোগ, ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সমাজমাধ্যমের ৮০ শতাংশ সময় নিয়ন্ত্রণ করতেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। এই নিয়ে পাল্টা মুখ খুলেছে মেটা। তাদের যুক্তি, বাজার সম্পর্কে এফটিসির দৃষ্টিভঙ্গি খুবই সীমিত।