অরুণ জেটলির এ বারের বাজেট প্রস্তাবে আয়করদাতারা বেশ হতাশ। আশার তুলনায় জুটেছে নামমাত্র ছাড়। প্রবীণরা শুধু হতাশই নন, কিছুটা ক্ষুব্ধও। অনেকেরই ধারণা, তাঁদের ছাড়ের চেয়ে সুযোগ-সুবিধা ছাঁটাই বেশি হয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের মানুষকে ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে কোনও কর দিতে হবে না। প্রবীণদের ক্ষেত্রেও করমুক্ত আয়ের পরিমাণ সেই ৩ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ নবীনে-প্রবীণে আর কোনও পার্থক্য রইল না। এ বার একটু উপরের দিকে তাকানো যাক। যে-সব প্রবীণ করদাতার আয় ৩.৫ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁরা ক্ষুব্ধ এই স্তর থেকে ৫,০০০ টাকার রিবেট তুলে নেওয়ার কারণে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ৫ লক্ষ টাকা আয়ে ১০% কর ধরে তা ১৫,০০০ টাকা (২০,০০০-৫,০০০ রিবেট)। নতুন নিয়মে এঁদের ৫% কর ধরে দিতে হবে ১০,০০০ টাকা। অর্থাৎ সাশ্রয় মাত্র ৫,০০০ টাকা। যখন অন্যদের সাশ্রয় ৭,৫০০ টাকা (আগে কর ছিল ২৫ হাজার, এখন ১২,৫০০। কিন্তু রিবেট খাতে ৫ হাজার মিলবে না বলে নিট সাশ্রয় ৭,৫০০ টাকা)। এ বার তাকানো যাক আরও উপরে। যাঁদের আয় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি ও ১ কোটি টাকা পর্যন্ত, তাঁদের করের উপর গুনতে হবে ১০% সারচার্জ। অর্থাৎ, যাঁর আয় ৬০ লক্ষ টাকা, তাঁকে ২০১৭-’১৮ সালে গুনতে হবে অতিরিক্ত ১,৫৫,৫৩০। যাঁর আয় ১ কোটি, তাঁকে ২,৭৯,১৩০ টাকা। এঁদের মধ্যেও অনেক প্রবীণ আছেন। আছেন সৎ করদাতা। কেন্দ্রের তরফে নোট বাতিলের পরে বলা হয়েছিল, সৎ করদাতাদের সম্মান জানানো হবে। এ বার প্রবীণদের প্রশ্ন, এটাই কি সম্মান জানানোর নমুনা?
বাজেটে প্রবীণদের জন্য জীবনবিমা নিগমের ১০ বছর মেয়াদে ৮% সুদের প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। রাখা যাবে সর্বাধিক ৭.৫ লক্ষ টাকা। এই প্রকল্পে প্রবীণরা অবশ্য তেমন কোনও নতুনত্ব খুঁজে পাননি। বাজেটের অনেক আগেই (৩০ ডিসেম্বর) নরেন্দ্র মোদী নিজে ঘোষণা করেছিলেন এই প্রকল্প। পড়তি সুদের জমানাতেও প্রায় একই বা তার থেকে বেশি সুবিধাযুক্ত প্রকল্প এখনও বাজারে আছে। ৫ বছর মেয়াদি সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে সুদ ৮.৫%। ৫ বছর শেষে এর মেয়াদ আরও ৩ বছর বাড়ানোর ব্যবস্থা আছে। সর্বাধিক লগ্নি ১৫ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া আছে ৮% সুদযুক্ত ৬ বছরের আরবিআই বন্ড। জমার কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে মোদী-জেটলির নতুন প্রকল্পে নেই তেমন নজর-কাড়া আকর্ষণ।
সুখের কথা, আরবিআই এই দফায় সুদ কমায়নি। কারণ তাঁর আশঙ্কা, নতুন নোটের জোগান বাড়লে আবার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। তবে প্রাহাড়প্রমাণ নগদ জমায় ব্যাঙ্কগুলি আমানতে এরই মধ্যে বেশ খানিকটা সুদ কমিয়েছে। সুদ অবশ্য কমেছে বাড়ি-গাড়ি ঋণেও। এতে অবশ্য প্রবীণদের তেমন লাভ নেই। অতি প্রবীণ, অর্থাৎ যাঁদের বয়স ৮০ বছরের বেশি, কোনওই হেরফের হয়নি তাঁদের কর-কাঠামোয় ও হারে। আগামী বছরেও তাঁদের প্রথম ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় থাকবে করমুক্ত।
এই দফায় সুদ না-কমলেও আগামী দিনে তা কমার আশঙ্কা থাকছে। এই অবস্থায় প্রবীণরা খুঁজছেন বড় মেয়াদে ভাল সুদ এবং সুরক্ষাযুক্ত প্রকল্প।
সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল প্রবীণদের জন্য বড় মেয়াদে, সুরক্ষা ও ভাল সুদের কিছু প্রকল্পের হদিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy