Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্পেকট্রাম এ বার খোলা বাজারে

কিছু দিন আগে টেলিকম সংস্থাগুলির স্পেকট্রাম ভাগাভাগি করে ব্যবহার করার নিয়ম-কানুন জানিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার নিলামে জেতা স্পেকট্রাম সংস্থাগুলির নিজেদের মধ্যে কেনা-বেচা করা নিয়েও নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর (ডট)।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

কিছু দিন আগে টেলিকম সংস্থাগুলির স্পেকট্রাম ভাগাভাগি করে ব্যবহার করার নিয়ম-কানুন জানিয়েছিল কেন্দ্র। এ বার নিলামে জেতা স্পেকট্রাম সংস্থাগুলির নিজেদের মধ্যে কেনা-বেচা করা নিয়েও নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর (ডট)। ফলে নিলামের বাইরে খোলাবাজারেও তা কেনার সুযোগ পাবে সংস্থাগুলি।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর ফলে মূলত দু’টি সুবিধা খুলল দেশের টেলিকম শিল্পের সামনে। প্রথমত, বাড়তি স্পেকট্রাম পেলে তারা বাড়াতে পারবে পরিষেবার মান। সুরাহা করতে পারবে কথা বলার মাঝখানে ফোন কেটে যাওয়া বা কল-ড্রপ সমস্যার।

দ্বিতীয়ত, বিপুল খরচে স্পেকট্রাম কেনার ফলে বা অন্য কোনও কারণে যে সব সংস্থা লোকসানের চক্করে পড়েছে, স্পেকট্রাম বেচে তাতে কিছুটা রাশ টানতে পারবে তারা। মেরামত করতে পারবে বেহাল আর্থিক দশার। এমনকী চাইলে কেউ স্পেকট্রাম বেচে এই ব্যবসা ছেড়ে বেরিয়েও যেতে পারবে।

এ দিন স্পেকট্রাম কেনা-বেচার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, একটি টেলিকম সংস্থা নিলামে কেনা স্পেকট্রাম ব্যবহারের স্বত্ব সেই সার্কেলেরই অন্য টেলিকম সংস্থাকে আংশিক বা পুরোটা বিক্রি করতে পারবে। এত দিন শুধু কেন্দ্র নিলাম করলেই স্পেকট্রাম কেনার সুযোগ পেত সংস্থাগুলি। যে সব ব্যান্ড-এর স্পেকট্রাম কেনা-বেচা করা যাবে সেগুলি হল— ৮০০ মেগাহার্ৎজ, ৯০০ মেগাহার্ৎজ, ১৮০০ মেগাহার্ৎজ, ২১০০ মেগাহার্ৎজ, ২৩০০ মেগাহার্ৎজ ও ২৫০০ মেগাহার্ৎজ।

তবে এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে ডট। যেমন, শুধুমাত্র নিলামে কেনা (২০১৩ সালের নিলামে কেনা ৮০০ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম বাদে) অথবা কেন্দ্রকে বাজার দর মিটিয়ে দেওয়া স্পেকট্রামই এ ভাবে হাতবদল করা যাবে। নিলামে স্পেকট্রাম কেনার দু’বছরের মধ্যে কেনা-বেচা করা যাবে না। দু’বছর অপেক্ষা করতে হবে। ২০১৩ সালের নিলামে কিছু ৮০০ মেগাহার্ৎজ স্পেকট্রাম কিনেছিল সিস্টেমা শ্যাম টেলিসার্ভিসেস। তাদের ২০১৩ সালের দাম ও ২০১৫ সালের নিলামের দরের ফারাক কেন্দ্রকে দিতে হবে।

পাশাপাশি নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, সংস্থাগুলি এই কেনা-বেচার জন্য নিজেরাই দর ঠিক করতে পারবে। তবে কখনওই তা সর্বশেষ নিলামের দরের চেয়ে কম হলে চলবে না। এবং কেন্দ্রও বাজার দরের নিরিখে সে ক্ষেত্রে কর বা অন্য চার্জ বসাতে পারবে। তবে নিলামের দর যদি এক বছরের বেশি পুরনো হয়, তা হলে নতুন করে স্পেকট্রামের বাজার দর স্থির করতে স্টেট ব্যাঙ্কের ‘পিএলআর’-এর হারকে সূচক ধরে সর্বশেষ নিলামের দরের ভিত্তিতে তা নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া, একটি সংস্থা যখন আর একটিকে এ ভাবে স্পেকট্রাম বেচবে, তখন প্রথম সংস্থার সব বকেয়া দায় (পরিকাঠামো তৈরি বা বকেয়া অর্থ) নতুন সংস্থার উপর চাপবে বলে জানিয়েছে ডট।

একই সঙ্গে, সংস্থাগুলির আপত্তি সত্ত্বেও স্পেকট্রাম হস্তান্তরের ক্ষেত্রে মোট লেনদেন মূল্যের উপর ১% ‘ট্রান্সফার ফি’ ধার্যের কথাও বলা হয়েছে ।

প্রসঙ্গত, টেলি পরিষেবার মান বাড়ানোর সমস্যা হিসেবে প্রয়োজনের অনুপাতে স্পেকট্রাম না-থাকার অভিযোগ প্রায়ই তোলে টেলিকম শিল্পমহল। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই স্পেকট্রাম ভাগাভাগি (শেয়ারিং) এবং স্পেকট্রাম কেনা-বেচার (ট্রেডিং) জমি তৈরি হয়েছে। যাতে মাস কয়েক আগে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্র।

এর আগে ডট স্পেকট্রাম ভাগাভাগি নিয়ে নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, কোনও একটি বৃত্তে দু’টি টেলিকম সংস্থার হাতে একই ধরনের স্পেকট্রাম থাকলে তারা তা প্রয়োজনমতো ভাগাভাগি করে নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে কোনও সংস্থার স্পেকট্রামে গ্রাহকদের কথা বলা বা ইন্টারনেট পরিষেবার ভিড় জমে গেলে, চুক্তি মেনে অন্যের স্পেকট্রামে ভাগ বসাতে পারবে সংস্থাটি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE