টাটা গোষ্ঠী কারও ব্যক্তিগত জমিদারি নয় বলে সোমবার রতন টাটার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন তিনি। আর মঙ্গলবার সাইরাস মিস্ত্রি সওয়াল করলেন টাটা স্টিলে নিজের নেতৃত্বের পক্ষে। মূলত ইস্পাত সংস্থাটির ইউরোপীয় কর্মকাণ্ড সামলানো নিয়ে। যেখানে তাঁর দাবি, যে-বিপুল মূলধন দীর্ঘ দিন ধরেই ইউরোপীয় ব্যবসায় লাগাচ্ছে টাটারা, তা আদপে লোকসানেরই মুখ দেখেছে। যা গোটা গোষ্ঠীর পক্ষে মারত্মক ঝুঁকির। অথচ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থে মিিস্ত্র ব্রিটেনের ইস্পাত ব্যবসা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, আঙুল তোলা হয়েছে তাঁর দিকে। মিস্ত্রি বলেন, ‘‘ওই সব শেয়ারহোল্ডার দশকের পর দশক ধরে সংস্থার পাশে রয়েছেন এবং নিজেদের লগ্নির ক্ষেত্রে টাটা স্টিলের উপর আস্থা রাখেন।’’
একই সঙ্গে ‘ব্যক্তি বিশেষের খামখেয়ালি নিয়ন্ত্রণ’ গোষ্ঠীকে সংস্থা পরিচালনার নিয়ম-কানুন ভাঙার মুখে দাঁড় করিয়েছে বলেও এ দিন তোপ দাগেন মিস্ত্রি। তিনি গোষ্ঠীর সব কর্মকাণ্ডের রাশ নিজের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে তোলা টাটাদের অভিযোগ উড়িয়ে মিস্ত্রির দফতর বলেছে, পরিচালন ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে ওই সব ব্যক্তি গোষ্ঠীর নথিভুক্ত সংস্থাগুলির দাম সংক্রান্ত স্পর্শকাতর গোপন তথ্য সংগ্রহ করতে চেয়েছেন। মিস্ত্রির দাবি, এ বার তাঁর লক্ষ্য অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান রতন টাটার সমস্ত খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত থেকে গোষ্ঠীকে বাঁচানোর লড়াই চালানো।
টাটা সন্স অবশ্য এ দিনও সব অভিযোগ নস্যাৎ করেছে। বরং উল্টে তাদের অভিযোগ, পরিচালনার বিধি আসলে ভেঙেছেন মিস্ত্রি নিজেই।
• টাটা স্টিল ইউরোপের মোট পুঁজি বিনিয়োগের উপর আয় কমছে, যা গোটা গোষ্ঠীর জন্যই ঝুঁকির সঙ্কেত
• টাটা স্টিল ইউরোপে মূলধন লগ্নি ২০১১-’১২ সালের ৬৭ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০১৪-’১৫ সালে ৯৩,৫০০ কোটি
অক্টোবরে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর পরে বিভিন্ন সংস্থার পর্ষদ থেকেও মিস্ত্রিকে সরাতেও শেয়ারহোল্ডারদের ইজিএম ডাকা হয়েছে চলতি মাসে। এই পরিস্থিতিতেই দিনকে দিন তীব্র হচ্ছে টাটা-মিস্ত্রি দ্বন্দ্ব। তাঁর বিরুদ্ধে টাটা স্টিলে অদক্ষ নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ নাকচ করতে এ দিন মিস্ত্রির অভিযোগ, ব্রিটেনের ইস্পাত ব্যবসায় লগ্নির ক্ষেত্রে তারা স্বল্পমেয়াদি আর্থিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়েছে বলে যে দাবি করেছে সংস্থার পর্ষদ, তা ডাহা মিথ্যে। তাঁর দাবি, ‘‘এই সব সম্পদে টানা লগ্নি করে যাওয়া হচ্ছিল এবং উৎপাদন বাড়ানোর কাজে পরিচালন গোষ্ঠীর বড় এক অংশকে নিযুক্ত করা হয়েছিল।’’ সে ক্ষেত্রে ২০১১-’১২ সাল থেকে ২০১৪-’১৫ পর্যন্ত টাটা স্টিল ইউরোপে মূলধন লগ্নি ৬৭ হাজার কোটি থেকে বেড়ে ৯৩,৫০০ কোটি টাকা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
এ সবের মধ্যেই এই দিন টাটা পাওয়ার তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জানিয়েছে, সংস্থার স্বাধীন ডিরেক্টররা গত ২০১৫ ও ২০১৬ সালের মার্চে আয়োজিত দু’টি বৈঠকে মিস্ত্রির কাজের প্রশংসাই করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy