—ফাইল চিত্র।
করোনার মোকাবিলায় কেন্দ্রের পেশ করা আর্থিক প্যাকেজ যে অনেকেরই মন ভেজাতে পারেনি, তা মোটামুটি স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী বা অর্থমন্ত্রী যেটিকে ২০ লক্ষ কোটি টাকা বা তার থেকেও বড় মাপের সুরাহা বলছেন, বিভিন্ন মূল্যায়ন ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থার দাবি, তা বড়জোর ২ লক্ষ কোটির। জানাচ্ছে, জিডিপি-র ১০% তো দূর, এতে সরকারের প্রকৃত খরচ খুব বেশি হলে ১.৮%। এবং এই ত্রাণে এখনই বর্তমান আর্থিক সঙ্কট কাটানোর রসদ তেমন নেই। রেটিং সংস্থা ফিচ, মুডি’জ় ও ক্রিসিলের পরে এই মতের শরিক আর্থিক পরিষেবা বহুজাতিক ক্রেডিট সুইস ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টও। এই অবস্থায় অর্থনীতিবিদদের একাংশের দাবি, বিপর্যস্ত মানুষ ও সংস্থাগুলিকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের খরচ এতটাই কম যে, চাপ বাড়ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপরে। হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে তাদের। আগ্রাসী ভাবে অনেকখানি ছাঁটতে হতে পারে সুদ। কারণ, কেন্দ্রের প্যাকেজ দ্রুত অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাবে, এমনটা আশা নেই।
মন্ত্রিসভার সায়
পাঁচ দিন ধরে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আর্থিক প্যাকেজে যা যা ঘোষণা করেছেন, তার বেশ কয়েকটিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়ল বুধবার। এতে আছে—
কয়লায়
• কয়লা ক্ষেত্রকে পুরো খুলে দেওয়া হবে। খনি নিলামের সময় কেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থার মাসে মাসে রাজস্ব ভাগাভাগির ন্যূনতম হার ৪%।
• এর পরে ওই রাজস্ব ভাগের হার ১০% ছোঁয়া পর্যন্ত নিলামে তা ০.৫%
করে বাড়বে। ১০% পেরোলে হবে ০.২৫%।
• খনির কয়লা বিক্রি বা ব্যবহারে কোনও বিধিনিষেধ থাকবে না।
ছোট শিল্পে
• ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থা (বছরে ব্যবসা ১০০ কোটি ও বকেয়া ঋণ ২৫ কোটি পর্যন্ত হলে) ও মুদ্রা প্রকল্পে ঋণগ্রহীতাদের জন্য ৩ লক্ষ কোটি টাকার আপৎকালীন ঋণ প্রকল্পে সায়।
• আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্ক
থেকে ধার নিলে সুদ সর্বোচ্চ ৯.২৫%। এনবিএফসিতে ১৪%।
• ঋণে পুরো গ্যারান্টি ন্যাশনাল ক্রেডিট গ্যারান্টি ট্রাস্টি কোম্পানির।
যদিও ওই ত্রাণ প্রকল্পের অনেক প্রস্তাবে বুধবারই সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে বলেছেন, ‘‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেগুলি মানুষের উপকারে আসবে।’’
ক্রেডিট সুইস ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান (ইন্ডিয়া ইকুইটি রিসার্চ) জিতেন্দ্র গোহিলের দাবি, এখনই যে সব ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য জরুরি, মোদী সরকারের ত্রাণ তা দিতে ব্যর্থ। এমনকি তাতে আর্থিক বৃদ্ধির হারে গতি আনার মাল-মশলাও নেই তেমন। অথচ লকডাউনে ব্যবসায় তালা ঝোলায় দেশ যে মন্দার মুখে পৌঁছেছে, ইতিমধ্যেই তার পূর্বাভাস শুনিয়েছে গোল্ডম্যান স্যাক্স। এ দিন মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রেটিং সংস্থা ইক্রাও। দাবি করেছে, চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি সঙ্কুচিত হতে পারে ৫%। ডিবিএসের অর্থনীতিবিদ রাধিকা রাও বলছেন, ‘‘ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে যে চাহিদা ধুয়েমুছে গিয়েছে, তাতে প্রাণ আনবে না কেন্দ্রের ত্রাণ। বরং মূল্যহ্রাসের প্রেক্ষিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটিকে এ বার আরও আগ্রাসী হতে হবে বৃদ্ধিকে ঠেলে তোলার জন্য।’’ অর্থাৎ ভরসা এখন আরও সুদ কমানোই। একই মতের শরিক ব্যাঙ্ক অব বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ সমীর নারাঙ্গও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy