প্রতীকী ছবি।
খাদে হুমড়ি খেয়ে পড়া বিক্রিকে টেনে তুলতে এ বার ফ্ল্যাট-বাড়িতে বাড়তি আয়কর ছাড়ই অন্যতম ভরসা হতে পারে বলে মনে করছে আবাসন শিল্পের একাংশ। বাজেটে চোখ রেখে সরকারের কাছে পেশ করা তাদের দাবিতে তাই সব থেকে জোরালো সেটাই। আবাসন সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই থেকে নারেডকো, সকলেই বলছে প্রায় বছর দুই-তিন ধরে বিবর্ণ চাহিদা। শুরু হয়েছিল নোটবন্দি থেকে। অতিমারিতে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাঁচার অন্যতম পথ হতে পারে কর ছাড়ের সুবিধা বাড়িয়ে ক্রেতা টানা।
একই কারণে গৃহঋণের সুদে ভর্তুকি বা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঋণে ভর্তুকির মেয়াদ বাড়ার সওয়াল ঠাঁই পেয়েছে দাবির তালিকায়। ফ্ল্যাট-বাড়ি তৈরির খরচ কমাতে নির্মীয়মাণ বাড়িতে জিএসটি প্রত্যাহার, সিমেন্টের মতো উপাদানে কর কমানো বা সব ধরনের বাড়িকে পরিকাঠামো শিল্পের তকমা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, অর্থনীতির অগ্রগতির স্বার্থেই পুঁজির অভাবে আটকে থাকা প্রকল্পকে শেষ করার তহবিল জোগানোর ঘোষণা থাকা উচিত বাজেটে।
নারেডকো-র জাতীয় প্রেসিডেন্ট নিরঞ্জন হিরানন্দানির দাবি, ‘‘গত তিন বছর অত্যন্ত কঠিন কেটেছে আবাসন শিল্পের। কেন্দ্র এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য চাহিদা বাড়াতে কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু আর করার প্রয়োজন আছে।’’ কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তির ধাঁচে আবাসন বিপ্লব চেয়েছেন তিনি। তবে হিরানন্দানির মতে, তার আগে কর্পোরেট সংস্থাগুলির মতো সাধারণ মানুষের আয়করেও সুরাহা দিক কেন্দ্র। যার মাধ্যম হোক আবাসন। তাতে দু’পক্ষেরই উপকার।
আবাসন শিল্পের অভিযোগ ব্যবসায় ধাক্কা এসেছে টানা তিন বছর ধরে। এগুলি হল—
• নোট বাতিল।
• কেন্দ্রের নতুন আবাসন আইন রেরা (পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য বসেনি)।
• ব্যাঙ্ক নয় এমন প্রতিষ্ঠানগুলিতে (এনবিএফসি) নগদের চূড়ান্ত অভাব।
• প্রথমে অর্থনীতির ঝিমুনি এবং তার পরে করোনার জেরে চৌচির চাহিদা।
• নতুন পুঁজির অভাবে মাঝপথে প্রকল্প থমকানো।
• দীর্ঘ সময় ধরে বিক্রিতে ভাটা। লাফিয়ে অবিক্রীত ফ্ল্যাট-বাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি।
কেন্দ্রের কাছে একগুচ্ছ দাবি
বিক্রি ও ব্যবসা বাড়াতে বাজেটে মেটানো
হোক চাহিদা। এগুলি হল—
• আয়কর আইনের ২৪ নম্বর ধারায় গৃহঋণের সুদে আয়কর ছাড় ২ লক্ষ টাকা থেকে বেড়ে হোক ৫ লক্ষ।
• ফের সুদে ভর্তুকির সুবিধা চালু হোক।
• যে ক্রেডিট লিঙ্কড সাবসিডি প্রকল্পে ২.৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি পান ক্রেতা (কম দামি বাড়িতে), তার মেয়াদ বাড়ুক।
• বাড়ি ভাড়ায় উৎসাহ দিতে এই খাতে বার্ষিক আয়ে ৩০% কর ছাড় বেড়ে
হোক ৫০%।
• থমকে যাওয়া আবাসন প্রকল্প তহবিল জুগিয়ে সম্পূর্ণ করা হোক।
• শেয়ারের মতো আবাসনেও দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ কর হোক ১০%। আর এই কর বসুক বাড়ি-ফ্ল্যাট ১২ মাস পর্যন্ত ধরে রাখলেই। এখন তা ২৪/৩৬ মাস।
বাড়ি বিক্রির সংস্থা প্রপটাইগারের পরিসংখ্যানে স্পষ্ট কলকাতা-সহ দেশের প্রথম আটটি বড় শহরে উপচে পড়ছে অবিক্রীত আবাসন। তাদের দাবি, হালে তার বেশ খানিকটা বিক্রি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার পরিমাণ এত কম যে, মজুত খালি করতে নির্মাতাদের চার বছর গড়িয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, তা হলে নতুন আবাসন তৈরি জোর পাবে কী করে? টাকা কোথা থেকে আসবে? ঘুরে দাঁড়াতে তাই বাজেটের দিকেই তাকিয়ে তারা।
তবে রাজ্যে ক্রেডাইয়ের প্রেসিডেন্ট সুশীল মোহতার বার্তা, অক্টোবর-ডিসেম্বরে কলকাতায় পড়ে থাকা আবাসন বিকিয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জ দাম ঠিকঠাক জায়গায় নিয়ে আসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy