প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার প্রায় ৮.৩ কোটি মহিলা গ্রাহক তিন মাসে তিনটি নিখরচার সিলিন্ডার কেনার সুযোগ পাবেন—নিজস্ব চিত্র
লকডাউনে কোপ পড়েছে রোজগারে। অবস্থা সামাল দিতে সম্প্রতি ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যার আওতায় গরিব মানুষদের জন্য আনা একগুচ্ছ সুরাহার অন্যতম প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার প্রায় ৮.৩ কোটি মহিলা গ্রাহকদের তিন মাসে তিনটি নিখরচার সিলিন্ডার কেনার সুযোগ। বৃহস্পতিবার তিন রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা, ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ও ভারত পেট্রোলিয়া জানিয়েছে, এই সপ্তাহ থেকেই তা কার্যকর হবে। যদিও নিখরচায় তিন মাসে তিনটি সিলিন্ডার পাওয়ার এই সুবিধায় আখেরে কতটুকু লাভ হবে, তাই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধীদের একাংশ বলছেন, সাধারণত দু’তিন মাস অন্তর যাঁরা গ্যাস কেনেন, তাঁরা হঠাৎ প্রতি মাসে কিনবেন কেন?
আর পাঁচজন গ্রাহকের মতো উজ্জ্বলা গ্রাহকেরাও বছরে ১২টি ভর্তুকির সিলিন্ডার পান। তবে গোড়ায় বাজারদরেই ভর্তুকিহীন সিলিন্ডার কিনতে হয়। তারপর তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকি জমা হয়। গরিব কল্যাণ যোজনায় এখন তাঁরা তিন মাসে যে তিনটি সিলিন্ডার বিনামূল্যে পাবেন, সেগুলির বাজারদরের অর্থ সংশ্লিষ্ট মাসের প্রথম দু’তিন দিনের মধ্যে তাঁদের অ্যাকাউন্টে অগ্রিম পাঠাবে সংশ্লিষ্ট তেল সংস্থা। সূত্রের খবর, যেমন আজ-কালের মধ্যেই এপ্রিলের অগ্রিম অর্থ জমা পড়বে। তারপর গ্রাহক সিলিন্ডার বুক করবেন। ফলে সিলিন্ডার কেনার অর্থ তাঁর হাতে থাকবে।
এই তিনটি সিলিন্ডারের জন্য তিনি অবশ্য আর ভর্তুকি পাবেন না। সংস্থাগুলির দাবি, এই সুবিধা যাতে সঠিক গ্রাহকের কাছে পৌঁছয়, সে জন্য কড়া নজরদারি চালাবে তারা। তবে সূত্রের দাবি, উজ্জ্বলা গ্রাহকেরা মাসে একটি তো দূরের কথা, সাধারণত দু’তিন মাসে একটি সিলিন্ডার কেনেন। ফলে মাত্র তিন মাসে এই সুবিধার পুরোটা ক’জন পাবেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। সংস্থাগুলির বক্তব্য, জুন পর্যন্ত কোনও গ্রাহকের কাছে যে অগ্রিম পড়ে থাকবে, তা তাঁরই টাকা। সিলিন্ডার না-কিনলেও, এই অগ্রিম ফেরতযোগ্য নয়। জুনের পরেও ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সেই টাকা পরের সিলিন্ডার কিনতে খরচ করতে পারবেন তিনি।
ঘোষণা
• এপ্রিল থেকে জুন, তিন মাসে একটি করে ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দামের পুরো টাকা আগাম দেবে কেন্দ্র।
• দু’এক দিনের মধ্যেই সব গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে এপ্রিলের সিলিন্ডারের টাকা।
• এর পরের প্রক্রিয়া উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় গ্যাস পাওয়ার জন্য গ্রাহকের মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত থাকলে এক রকম, আর না-থাকলে আর এক রকম।
• মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত থাকলে, এর পর গ্রাহককে এসএমএস পাঠিয়ে গ্যাস বুক করতে বলবে সংস্থা।
• সিলিন্ডার বুক করলেই তাঁর ফোনে একটি ওটিপি যাবে।
• ডেলিভারি বয়কে সেই ওটিপি দিয়ে সিলিন্ডার কিনতে হবে।
• গ্রাহকের ‘ব্লু বুকে’ সিলিন্ডার বিক্রির তথ্য নথিভুক্ত করবেন ডেলিভারি বয়।
• তার পর ডিলারের দোকানে ওটিপি নথিবদ্ধ হবে।
• গ্রাহক সরকারের দেওয়া টাকায় এপ্রিলের সিলিন্ডার কিনলে তবেই পরের মাসের (মে) জন্য বরাদ্দ সিলিন্ডারের অগ্রিম পাবেন।
• তেমনই মে মাসের অগ্রিম দিয়ে সিলিন্ডার কিনলে তবে জুনের বরাদ্দ সিলিন্ডারের অগ্রিম মিলবে।
• সিলিন্ডার পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে নতুন বুকিং করা যাবে না।
• মাসে একটির বেশি বিনামূল্যের এই সিলিন্ডার মিলবে না।
• কেউ ৫ কেজির সিলিন্ডার নিলে তিন মাসে মোট ৮টির টাকা অগ্রিম পাবেন। এর মধ্যে মাসে সর্বাধিক ৪টির টাকা মিলবে।
• একটি ৫ কেজির সিলিন্ডার কেনার ৭ দিনের মধ্যে নতুন বুকিং নয়।
• এ ক্ষেত্রেও একটি কিনলে তার পরেরটির অগ্রিম টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
• যে ৩০ শতাংশের মতো গ্রাহকের মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত নেই, তাঁদের দ্রুত তা সেরে ফেলতে হবে সুবিধাটি নেওয়ার জন্য।
• কারও মোবাইল না-থাকলে এত দিন যে ভাবে গ্যাস
বুক করতেন, সে ভাবেই করতে হবে।
• তবে মোবাইল না-থাকলে বা তা নথিভুক্ত না-থাকলে অথবা কেউ ওটিপি দিতে না-পারলে, শর্তসাপেক্ষে মুচলেকা দিলে নিখরচার সিলিন্ডার দেওয়া হবে।
• সেই মুচলেকা গ্রাহককে দেবেন ডিলার।
অন্য দিকে, বহু সাধারণ গ্রাহকের অভিযোগ সিলিন্ডার সময়ে মিলছে না। তেল সংস্থা ও ডিলারদের দাবি, বহু ডেলিভারি বয় কাজে আসলে সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ছেন। ফলে একাংশ না-আসায় গ্যাস দেওয়ার প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে। তবে তাদের দাবি, রাজ্যের সহযোগিতায় সমস্যার সমাধান হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থাগুলি জানিয়েছে, করোনায় ডেলিভারি বয় ও গ্যাস সরবরাহে যুক্ত অন্য কর্মীর মৃত্যু হলে, তাঁদের পরিবার ৫ লক্ষ টাকা করে এক্সগ্রাশিয়া পাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy