বিএসএনএল। প্রতীকী চিত্র।
দেশের বিভিন্ন সার্কলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএলের ঠিকা কর্মীদের বেতন বাকি পড়েছে প্রায় ছ’মাস। এই অবস্থায় তাঁদের পাশে দাঁড়াতে স্থায়ী কর্মীদের কাছে জুনের বেতন না নেওয়ার আবেদন জানালেন সংস্থাটির শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্সের (ক্যাল-টেল) সিজিএম বিশ্বজিৎ পাল। ওই এক মাসের সমবেত বেতন থেকে ঠিকা কর্মীদের পাওনার অন্তত কিছুটা মেটানোর প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এখন ক্যাল-টেলে ঠিকা কর্মী রয়েছেন প্রায় ৪,৮০০ জন।
গত বছর থেকে আর্থিক সমস্যায় জেরবার বিএসএনএল। গোড়ায় ঠিকা কর্মীদের বেতন বকেয়া পড়ার পরে, ফেব্রুয়ারিতে বেতন পাননি সংস্থার স্থায়ী কর্মী-অফিসারেরাও। আগে কখনও যা ঘটেনি। পরে স্থায়ী কর্মীদের সমস্যা মিটলেও, ঠিকা কর্মীদের বকেয়া গড়িয়েছে পাঁচ-ছ’মাসে। তা মেটানোর দাবিতে তাঁরা প্রায় নিয়মিত বিক্ষোভ-ধর্নায় বসছেন। মঙ্গলবারও দেশ জুড়ে সেই কর্মসূচি পালন হয়।
সোমবার স্থায়ী কর্মীদের সমস্ত ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বজিৎবাবু। মঙ্গলবার তাদের জুনের বেতন না নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে এ ব্যাপারে লিখিত সম্মতি দেওয়ার আর্জি জানান। যুক্তি দেন, ঠিকা কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর। বলেন, বেতন বকেয়ার ধাক্কায় এই প্রতিযোগিতার বাজারে পরিষেবা ব্যাহত হলে, তা সংস্থার বিপর্যয় ডেকে আনবে। সংস্থা সূত্রের খবর, সংগঠনগুলি বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলবে। তবে অনেকের প্রশ্ন, সিজিএমের প্রস্তাবটি মানবিক হলেও, দীর্ঘ মেয়াদে কেন্দ্র সংস্থাটিকে বাঁচাতে কেন উদ্যোগী হচ্ছে না কেন?
সঞ্চার নিগম এগ্জ়িকিউটিভ অ্যাসোসিয়েশনের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সাহার প্রশ্ন, এই টুকরো পদক্ষেপে কী ভাবে সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হবে? তিনি বলেন, ‘‘প্রস্তাব মানবিক। সকলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এ ভাবে অল্প দিনের জন্য সমস্যা মিটলেও, সংস্থা পরিচালনায় জরুরি বাকি খরচ মেটাতে অর্থের সঙ্কট থাকছেই। পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। কেন্দ্র কেন সাহায্য করছে না?’’ তাঁর অভিযোগ, টেলি সংস্থাগুলির মধ্যে বিএসএনএলের ঋণ সব চেয়ে কম হলেও, তাদের নতুন ধার নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
এর আগে অন্যান্য সংগঠনেরও অভিযোগ ছিল, টেলিকমে তীব্র মাসুল যুদ্ধের জেরেই অন্যান্য সংস্থার মতো বিএসএনএলের আয়ও কমছে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলির প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার চেয়ে তাদের ঋণ অনেক কম (১৩ হাজার কোটি)। সংস্থাটির পুনরুজ্জীবন নিয়ে সরকারি স্তরে কথা হলেও, এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
এ দিকে সংবাদ সংস্থার খবর, মঙ্গলবার বিএসএনএল, এমটিএনএল ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজতে প্রথম বৈঠকে বসেছিল ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী গোষ্ঠী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে বৈঠকে ছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, বিএসএনএল চেয়ারম্যান পি কে পুরওয়ার প্রমুখ। তবে আলোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy