মোট ৫৬ পাতার বাজেট নথির অলিগলিতে কর্মসংস্থানের উল্লেখ থাকলেও বড় কোনও ঘোষণা অনুপস্থিত। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, আয়করে বিপুল ছাড় দিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতে অতিরিক্ত টাকার ব্যবস্থা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পণ্য ও পরিষেবার বাজারে। তার পরে বর্ধিত চাহিদা পূরণের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি এবং উৎপাদন পরিকাঠামো বাড়ানোর দায়িত্ব নিতে হবে সংস্থাগুলিকেই।
এর আগে কর্পোরেট করের হার ৩৫% থেকে ২২ শতাংশে নামিয়েছিল কেন্দ্র। আশা ছিল, সেই উদ্বৃত্তকে কাজে লাগিয়ে লগ্নি বাড়াবে তারা। তৈরি হবে কাজ। তবে অর্থমন্ত্রীর একাধিক বার অনুরোধেও তা হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের বক্তব্য, এ বার ঠিক বিপরীত পদক্ষেপ করেছেন নির্মলা। বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ শৈবাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রী মধ্যবিত্তের হাতে উদ্বৃত্ত টাকার ব্যবস্থা করে বিক্রি বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। পরবর্তী কালে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমালে বাজারে আরও নগদ নিশ্চিত হবে। তার পরে চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের জোগান বাড়ানোর জন্য পরিকাঠামো সম্প্রসারণ, উৎপাদন এবং কাজ তৈরির দায়িত্ব কর্পোরেটকেই নিতে হবে।’’
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, ন্যাশনাল ম্যানুফ্যাকচারিং মিশন, খেলনা উৎপাদন তালুক, জাতীয় সড়ক খাতে ২.৮৭ লক্ষ কোটি টাকা, বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ (পিএলআই) প্রকল্পে ১৮,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে কাজের প্রসঙ্গ। বলা হয়েছে চর্ম শিল্পে ২২ লক্ষ কাজ তৈরি এবং সরকারের মূলধনী খাতে ১১.২১ লক্ষ কোটি বরাদ্দের কথা। আবার আগের বাজেটে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা ইন্টার্নশিপ কর্মসূচি সম্পর্কে একটি কথাও উল্লেখ করা হয়নি। অ্যাকুইল-এর ট্যাক্স লিডার রাজর্ষি দাশগুপ্তের মতে, ন্যাশনাল সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর স্কিলিং, আইআইটি-র পরিকাঠামো বৃদ্ধি, কৃত্রিম মেধা শিক্ষা, স্টার্ট-আপ তহবিল ও পরিকাঠামো বৃদ্ধির বিভিন্ন প্রকল্প কর্মসংস্থানে সাহায্য করবে।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের অবশ্য অভিযোগ, আগে পিএলআই, স্কিল ইন্ডিয়া এবং কর্মসংস্থান প্রকল্পের কথা বলে যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছিল সরকার। চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে ২৬,০১৮ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলা হলেও, তা ১৫,২৮৬ কোটিতে নামানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)