ছবি: সংগৃহীত
কোনও ব্যাঙ্ক গুটিয়ে নেওয়া হলে তার গ্রাহকেরা আমানতের উপরে বিমার টাকা যাতে দ্রুত হাতে পান, তার ব্যবস্থা করতে বাজেটে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে ব্যাঙ্ক শিল্পের ইউনিয়নগুলি। তাদের প্রশ্ন, এই মুহূর্তে কোনও ব্যাঙ্কই গুটিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই। তা হলে আচমকা এই প্রস্তাব কেন? সরকার কি তেমন কোনও পরিকল্পনা ছকছে, সেই প্রশ্নও তুলছেন একাংশ।
কর্মী সংগঠনগুলির নেতাদের বক্তব্য, গত বছরই ব্যাঙ্কে বিমাকৃত আমানতের অঙ্ক ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। তার পরে এ বার বাজেটে ওই টাকা যাতে দ্রুত পাওয়া যায়, তড়িঘড়ি তার ব্যবস্থাও করা হল। ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবকের সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলছেন, ‘‘ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের আমানতে বিমার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ডিপোজ়িট ইনশিওরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন আইনটি ১৯৬১ সালে চালু হয়েছিল। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত গত ৬০ বছরে কোনও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেই এই আইন প্রয়োগ করার দরকার পড়েনি। তা হলে এখন কী এমন হল যাতে বিমাকৃত আমানতের অঙ্ক বাড়ানোর পরে দ্রুত সেই টাকা পাওয়ার সুরাহায় মন দিলেন অর্থমন্ত্রী?’’
একই আশঙ্কা প্রকাশ করেন ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরও। তাঁর মতে, ‘‘ওই বিমা বহু ক্ষেত্রেই অর্থহীন। কারণ, এমন অনেক আমানতকারী আছেন, যাঁদের ব্যাঙ্কে ৫ লক্ষের থেকে অনেক বেশি টাকা আছে। বিশেষত বহু অবসরপ্রাপ্ত ব্যাক্তির। তাঁদের ক্ষেত্রে বাকি টাকার কী হবে? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিমার ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে বাকি দায়টা ঝেড়ে ফেলবেন? ফলে এত সহজে ওই আইন প্রয়োগ হওয়ার নয়।’’
এই প্রেক্ষিতে রাজেন এবং সঞ্জয়, দু’জনেই বাজেটে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং একটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা বেসরকারিকরণের প্রস্তাবের কথা তুলেছেন। ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ কিনে নেওয়া এবং তা পরিচালনা করার জন্য একটি সম্পদ পুনর্গঠন সংস্থা এবং একটি সম্পদ পরিচালন সংস্থা গঠনের প্রস্তাবের প্রসঙ্গও টেনেছেন। তার পরেই তাঁদের কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রের উদ্দেশ্য, সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককেই ধাপে ধাপে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া। সে জন্য তাদের হিসেবের খাতাকে পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ লোকসান এবং অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা ঘাড়ে থাকলে কোনও ব্যাঙ্ককে বেসরকারি উদ্যোগপতিরা কিনতে চাইবেন না। ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের জন্যই এ বারের বাজেটে ওই সব প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।’’ তাঁদের মতে, সংস্থা গ়ড়ে অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা মেটানো যায় না। উল্টে ব্যাঙ্ক কর্মীদের তোপ, অনুৎপাদক সম্পদ উদ্ধারের বিষয়টিকে ফৌজদারি আইনের আওতায় আনার দাবি করা হলেও, কেন্দ্র কান দিচ্ছে না কেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy