Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Budget

শুল্ক কমেও তেলে সুরাহার পথ বন্ধ করে বসল সেস

এ বারের বাজেটে কিছু পণ্যের উপরে কৃষি-পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস চাপিয়েছে কেন্দ্র, যার মধ্যে দু’টি হল পেট্রল এবং ডিজেল।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

মেধা রায় এবং শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:২২
Share: Save:

তেলের ছেঁকায় নাভিশ্বাস উঠছে মানুষের। বাড়ছে পণ্য পরিবহণের খরচ। যার জেরে করোনার আবহে জিনিসপত্রের দর বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আশা ছিল আমজনতাকে সুরাহা দিতে বাজেটে পেট্রল-ডিজেলে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ইতিমধ্যেই যে দাবি বারবার উঠেছে। তা শেষ পর্যন্ত সত্যি হল ঠিকই। কিন্তু সেই স্বস্তি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছনোর রাস্তা খুলল না। কারণ, এ বারের বাজেটে কিছু পণ্যের উপরে কৃষি-পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস চাপিয়েছে কেন্দ্র, যার মধ্যে দু’টি হল পেট্রল এবং ডিজেল। এই দুই পণ্যে সেস বেড়েছে লিটারে যথাক্রমে ২.৫ টাকা এবং ৪ টাকা। কৃষি-সেসের হাত ধরে বাড়তি ৩০,০০০ কোটি টাকা আসবে কেন্দ্রের ঘরে। যদিও অর্থমন্ত্রীর দাবি, মূল ও অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক কমানোয় সেস বসলেও জ্বালানির দর বাড়বে না।
এর আগে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর কম থাকার সময়ে দেশে শুল্ক রেকর্ড বেড়েছে। তার পরে লকডাউনে একটানা বহু দিন দাম একই জায়গায় থেমে থাকার পরে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকটা বাড়তে দেখা গিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এ বারও সে রকম হবে না তো? এখন না-হয় কয়েক দিন বাড়ল না। পরে তা লাগামছাড়া গতিতে দৌড়বে না তো? বিশ্বজিৎ সাহা ও রবীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পাম্পে তেল কিনতে আসা মানুষের অভিযোগ, যাঁরা ভাল চাকরি করেন, তাঁরা না-হয় প্রায় ১০০ টাকা দিয়ে তেল কিনতে পারেন। কিন্তু যেখানে করোনার কারণে আয় কমেছে, সেখানে যাঁরা নেটে খাবার সরবরাহের কাজ করেন বা চাকরির প্রয়োজনে অনেকটা ঘুরতে হয়, তাঁরা কী করবেন?
তার উপরে উৎপাদন শুল্কের কিছুটা ভাগ রাজ্যগুলি পায়। কিন্তু সেসের ক্ষেত্রে তা পুরো যায় কেন্দ্রের ঘরে। ফলে শুল্ক কমে সেস বাড়ায় রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় ধাক্কা খাওয়ারও আশঙ্কা থাকছে। নির্মলা যদিও জানাচ্ছেন, উৎপাদন শুল্ক থেকে কেন্দ্রের যেখানে লিটারে ১৩-১৫ টাকা রাজকোষে আসে, সেখানেই রাজ্যের ক্ষেত্রে তা ৩০-৩৫ টাকা।
এর আগে অতিমারির মধ্যেই গত মার্চে রেকর্ড হারে তেলে উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্র। খোদ কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টসের হিসেব বলছে, এপ্রিল-নভেম্বরে এই শুল্ক খাতে ২০১৯ সালের ওই সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৪৮%। পৌঁছেছে ১,৯৬,৩৪২ কোটি টাকায়। যা সম্ভব হয়েছে তেলের কারণে। ফলে ফের প্রশ্ন উঠছিল, ‘অচ্ছে দিনের’ স্বপ্ন দেখানো মোদী সরকার কেন শুল্ক ছেটে স্বস্তি দিচ্ছে না আমজনতাকে?
সোমবার নির্মলার দাবি, এই কৃষি-পরিকাঠামো ও উন্নয়ন সেসে মানুষের উপরে চাপ বাড়বে না। কারণ, উৎপাদন শুল্ক কমানো হয়েছে। অ্যাকুইল’-এর এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর রাজর্ষি দাশগুপ্তের মতো বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সেস বসলেও পেট্রল ও ডিজেলে মূল উৎপাদন শুল্ক কমে হচ্ছে লিটারে যথাক্রমে ১.৪ এবং ১.৮ টাকা। আর বিশেষ অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক হচ্ছে যথাক্রমে ১১ এবং ৮ টাকা। ফলে মূল উৎপাদন শুল্ক, অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক ও সেস মিলিয়ে আদতে কর প্রায় একই (পেট্রলে লিটারে ১৪.৯ টাকা, ডিজেলে ১৩.৮ টাকা) থাকছে।
যদিও শিয়ালদহের একটি পাম্পে তেল কিনতে আসা শেখ সেলিমের অভিযোগ, ‘‘দাম কমার তো কোনও লক্ষণই নেই। কয়েক দিন পরেই হয়তো দেখব আবার বেড়েছে। কোনও দিন দেখবেন ৫০০ টাকা লিটার হয়ে যাবে। সে দিনও মধ্যবিত্ত মানুষকে নিজের রুজিরুটির জন্য বাইকে সেই টাকা দিয়েই তেল ভরতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmala Sitaraman Budget Budget 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy