দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে চড়চড় করে। স্মার্টফোন তাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। সেই বাজার ধরতে যখন বেসরকারি সংস্থাগুলি উদ্যোগী, তখন টেলিকম শিল্পের আর পাঁচটা ব্যবসার মতো দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রেও প্রতিযোগিতায় কয়েক কদম পিছিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল। ঘুরে দাঁড়াতে দেশে ‘ওয়াই-ফাই হটস্পট’ চালু করলেও পূর্বাঞ্চল এখনও সেই পরিষেবা থেকে ব্রাত্য। তবে সংস্থা সূত্রের দাবি, আন্দামান ও কলকাতার বেশ কিছু এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বছরের মধ্যেই সেই সব জায়গায় এই পরিষেবা চালুর ব্যাপারে আশাবাদী কর্তারা।
ভারতে নেট সংযোগ বেড়েছে লাফিয়ে। সমীক্ষা বলছে, ২০১০ সালের ২১ কোটি থেকে ২০১৫-এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭.৩ কোটিতে। এই বার তা ৩৩.৭ কোটিতে পৌঁছবে বলে ধারণা। এর মধ্যে অবশ্য সিংহভাগই মোবাইল ফোনের সংযোগ। বাজার ধরতে ৩জি-র পরে ৪জি পরিষেবা নিয়ে হাজির হচ্ছে এয়ারটেল, ভোডাফোন, আইডিয়ার মতো সংস্থা। মুকেশ ও অনিল অম্বানীর দুই সংস্থাও শীঘ্রই ৪জি পরিষেবা চালু করবে। কিন্তু বিএসএনএল এখনও তা চালু করতে পারেনি। শুধু চণ্ডীগড়ে পরীক্ষামূলক ভাবে তা চালু হয়েছে।
তবে পথেঘাটে চলার মাঝে, রেল স্টেশন বা কর্মব্যস্ত এলাকা, পর্যটন কেন্দ্র, হোটেল, মল, বাস টার্মিনাসে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ওয়াই-ফাই পরিষেবা। সেই প্রতিযোগিতাতেও ঝাঁপাচ্ছে টেলিকম সংস্থাগুলি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই পরিষেবা চালু করছে বিএসএনএল-ও। সংস্থার সিএমডি অনুপম শ্রীবাস্তব সম্প্রতি জানিয়েছেন, তিন বছরে গোটা দেশে ৪০ হাজার এমন ওয়াই-ফাই-হটস্পট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।
আন্দামান ও পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলে সংস্থার চিফ জেনারেল ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ ঝা জানান, পোর্ট ব্লেয়ার-সহ আন্দামানের ৫০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এই পরিষেবার জন্য চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। আগামী ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসেই তা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এ জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসাতে সদর দফতরের কাছে অনুমোদনও চেয়েছেন তাঁরা। তিনি অবশ্য আগে জানিয়েছিলেন, দিঘা-সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু করতে আগ্রহী তাঁরা। সেই সব এলাকা চিহ্নিত করার কাজ শীঘ্রই শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
একই ভাবে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় ২০০টি জায়গায় এই পরিষেবা চালুর জন্য সদর দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে ক্যালকাটা টেলিফোন্স-ও। সংস্থার প্রিন্সিপাল জেনারেল ম্যানেজার অপূর্ব কুমার কুণ্ডু জানান, এক একটি ‘লোকেশন’-এর মধ্যে একাধিক পয়েন্টে এই পরিষেবা পাওয়া যাবে। সদর দফতরের অনুমোদন ও যন্ত্রপাতি পাওয়ার পরে দু’তিন মাসের মধ্যে তা চালু করা সম্ভব বলে তাঁর দাবি।
বাজার মাপতে ইতিমধ্যেই রিলায়্যান্স–জিও কলকাতার কিছু এলাকায় বিনামূল্যে এই পরিষেবা চালু করেছে। বিএসএনএল-ও অবশ্য আগে কলকাতা বিমানবন্দরে পরীক্ষামূলক ভাবে ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু করেছিল। কিন্তু কার্যত সেটি বন্ধ। এ বার অবশ্য আটঘাট বেঁধেই নামতে চাইছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। বাণিজ্যিক ভাবেই পরিষেবা চালু করবে তারা। সংস্থা সূত্রের খবর, যে কেউ এই পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবেন। এ জন্য বিভিন্ন দামের প্রি-পেড কার্ড মিলবে। সেই কার্ড দিয়ে মোবাইল, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেটে ওই সব নির্দিষ্ট জায়গায় ওয়াই-ফাই-এর মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা পাবেন ক্রেতা।
কিন্তু বিএসএনএল-এর ইন্টারনেট পরিষেবা ও তার গতি নিয়ে গ্রাহক মহলে অভিযোগ ওঠে। যদিও বিএসএনএলের কর্তাদের দাবি, উন্নত মানের ওয়াই-ফাই পরিষেবাই দেবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy