আশা: ছ’দশক পরে প্রথম মুনাফার অপেক্ষায়। ফাইল চিত্র
ইঙ্গিত ছিলই। ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষ শেষে সেই ইঙ্গিতকেই সত্যি করে ছ’দশক পরে এই প্রথম লাভের মুখ দেখতে চলেছে বেঙ্গল কেমিক্যালস (বিসিপিএল)। বাঙালিকে ব্যবসামুখী করতে যে সংস্থার গোড়াপত্তন করেছিলেন দেশের অন্যতম অগ্রণী রসায়নবিদ আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়।
গত অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে বিসিপিএল-এর লাভের অঙ্ক দাঁড়িয়েছিল ১.১৬ কোটি টাকা। তখনই সংস্থার কর্তারা আশা করেছিলেন, বছর শেষে মোট মুনাফা ৩-৫ কোটি টাকায় দাঁড়াবে। এই মুহূর্তে বাজার বিশেষজ্ঞদের হিসেব, সংস্থার পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী মুনাফা ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার মধ্যে থাকা উচিত। লাভ ঘরে তুললে ব্যবসা পরিচালনায় কিছুটা বাড়তি সুবিধা পাবে সংস্থাটি। আগামী ১২ এপ্রিল পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে তাদের আর্থিক ফলাফল পেশ হওয়ার কথা। গত ষাণ্মাসিকে আয় ছিল ৫১.৩৭ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে পুনর্গঠনের পরেও সংস্থার হাল বেশ খারাপ হয়ে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত ২০১৩-’১৪ সালে তাদের আয় কমে দাঁড়ায় ১৭ কোটি টাকায়, যা সংস্থা জাতীয়করণের পরে সর্বনিম্ন। পরের বছর থেকে অবশ্য চাকা ঘোরে। ২০১৫-’১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৬ কোটিতে।
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৯০১ সালে চালু করেছিলেন এই সংস্থা। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই খারাপ হতে থাকে সংস্থার হাল। ১৯৫৪-র পরে আর লাভের মুখ দেখেনি সংস্থা। মানিকতলার প্রথম কারখানা থেকে পরে এ রাজ্যের পানিহাটি এবং মুম্বই, কানপুরে কারখানা বিস্তৃত করলেও দীর্ঘ লোকসানের জেরে ১৯৭৭-এ সংস্থা জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। কিন্তু তারপর গরিমা আরও হারিয়ে ১৯৯২ সালে বিআইএফআরে চলে যায় সংস্থাটি।
গত বছর কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক সমস্ত রুগ্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলি বন্ধ করা ও তার রূপরেখা জানতে চাওয়ায় নতুন করে শঙ্কার মেঘ ঘনায়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্প্রতি সংস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বিকল্পটি খতিয়ে দেখতে বলায় অনিশ্চয়তা বাড়ে। যদিও তার আগে থেকেই সংস্থার দাবি ছিল, বেঙ্গল কেমিক্যালস এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বেসরকারিকরণের আদৌ প্রয়োজন নেই। বছর শেষে লাভের অঙ্ক সেই যুক্তিকে আরও জোরালো করবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। পানিহাটি কারখানার বাড়তি জমি বিক্রির যে-অনুমতি সংস্থা চেয়েছিল, সম্প্রতি তাতেও সায় দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ওই জমি বিক্রি বাবদ পাওয়া টাকা সংস্থার হাল ফেরাতে ও কার্যকরী মূলধন জোগাড়ে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy