প্রথম বছরেই ন্যূনতম ব্যালান্স না রাখার চার্জে বিপুল আয় ব্যাঙ্কগুলির।
এটিএম-এ সুরক্ষার বালাই নেই। অথচ শুধুমাত্র ন্যূনতম ব্যালান্স না থাকায় ব্যাঙ্কগুলির যা আয়, সেটা দেখলে রীতিমতো চোখ কপালে উঠবে। চালু হওয়ার পর প্রথম বছরেই রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি মিলিয়ে দেশের ২৪ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থ বছরে এই খাতেই আয় করেছে ৫০০০ কোটি টাকা।
সার্ভিস চার্জের নামে ত্রৈমাসিক, ষান্মাষিক বা বার্ষিক টাকা কাটার ধুম লেগেই আছে। মাঝে মধ্যেই এসএমএস চলে আসছে, আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কাটা হয়েছে। তার উপর রয়েছে নূন্যতম গড় ব্যালান্স রাখার নির্দেশিকা। যা না থাকলে কেটে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা। আর সেই খাতেই ব্যাঙ্কগুলি এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে।
বার্ষিক আয়-ব্যায়ের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে ন্যূনতম ব্যালান্স না রাখার জরিমানা বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্যাঙ্কগুলি আদায় করেছে ৪৯৮৯.৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার আয়ই প্রায় অর্ধেক ২৪৩৩.৮৭ কোটি। যদিও সরকারি এই ব্যাঙ্কেই ন্যূনতম ব্যালান্স না থাকলে কম টাকা কাটা হয়। কিন্তু গ্রাহক সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই খাতে এসবিআই-এর আয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে। তারপরও অবশ্য চলতি আর্থিক বছরে এসবিআই-এর লোকসান হয়েছে ৬৫৪৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: গ্রাহকই ভরসা ব্যাঙ্কের, টাকা নেই, দায় নেই সুরক্ষারও!
ন্যূনতম ব্যালান্সের জরিমানায় আয়ের নিরিখে এসবিআইয়ের পরেই রয়েছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। গ্রাহকদের কাছ থেকে ঘরে তুলেছে ৫৯০.৮৪ কোটি টাকা যা গত বছর ছিল৬১৯.৩৯কোটি। এরপর এক্সিস ব্যাঙ্কের আয় ৫৩০.১২ কোটি এবং আইসিআইসিআই-এর ৩১৬.৬ কোটি।
চলতি আর্থিক বছরের গোড়াতেই ন্যূনতম গড় ব্যালান্স রাখার নির্দেশিকা জারি করে এসবিআই। নির্দেশিকায় বলা হয়, শহরাঞ্চলের শাখাগুলিতে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের ন্যূনতম ৫০০০ টাকা, মফস্বলে ২০০০ এবং গ্রামাঞ্চলে ১০০০ টাকা রাখতে হবে। পরে অবশ্য গত বছরের পয়লা অক্টোবর থেকে শহরাঞ্চলে এই ন্যূনতম ব্যালান্সের অঙ্ক কমিয়ে ৩০০০ টাকা করা হয়। তবে অন্যক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন হয়নি। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে এই টাকার অঙ্ক আরও অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: ঋণখেলাপি ধনকুবেরদের ফেরার হওয়া আটকাতে বিলে সম্মতি রাষ্ট্রপতির
সম্প্রতি একের পর এটিএম প্রতারণার ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের একটা বড় অংশ। তাঁদের প্রশ্ন, ন্যূনতম ব্যালান্স তো রয়েছেই, তার সঙ্গে এই চার্জ সেই চার্জের নামে টাকা কাটা লেগেই আছে। যেন নিজের টাকা জমা রাখার জন্য গুনাগার দিতে হচ্ছে। তবু সুরক্ষার প্রশ্নে ব্যাঙ্কগুলির মনোভাব কেন এত ঢিলেঢালা। অধিকাংশ এটিএম কার্যত খোলা ময়দান। না আছে রক্ষী, না তার সুরক্ষা ব্যবস্থা। আর সেই ফাঁকে স্কিমিং করে টাকা হাতানো হোক, বা টাকা তোলার সময় হামলার মতো ঘটেই চলেছে। গ্রাহকদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, পরিষেবার জন্য টাকা নিক, কিন্তু গ্রাহকের টাকার নিশ্চয়তাও ব্যাঙ্ককেই দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy