ফাইল চিত্র।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জেরে গত ১১ দিনের মধ্যে বৌবাজারে ধসে পড়েছে বেশ কিছু বাড়ি। অনেকগুলি চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত। আর এই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে প্রায় ৩,০০০ গয়না কারিগরের। হয় তাঁদের কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে, নয়তো তা চাপা পড়েছে ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপে। আর যেহেতু তাঁদের রোজগার গয়না পিছু মজুরি হিসেবে, তাই এখন পুরোপুরি বন্ধ রুজি। দিশেহারা ও ক্ষুব্ধ গয়না শিল্পীরা তাই মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের কাছে কাজ হারানোর জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে দাবিপত্র জমা দিয়েছেন।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির বৌবাজার শাখার সম্পাদক সুব্রত কর বলেন, ‘‘যে সব অঞ্চলে বাড়ি ধসে পড়েছে, সেখানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৫৫টি গয়না তৈরির কারখানা। এগুলির মধ্যে প্রায় ২৫টিই ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে রয়েছে। বন্ধ কারখানাগুলির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ৩,০০০ জন গয়না শিল্পী যুক্ত। তাঁদের কারওরই এখন কাজ নেই। ফলে রুটি-রুজিও একেবারে বন্ধ। সংসার চালানো দায় হয়েছে।’’ সুব্রতবাবুর অভিযোগ, গোটা ঘটনার জন্য মেট্রো রেলই দায়ী। তাই রুজিহারাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, যে সব বাড়ি ধসে গিয়েছে, সেগুলি পুরো ভেঙে ফের তৈরি করতে বছর ঘুরে যেতে পারে। যে কারণে তত দিন অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে কারখানা চালু করে ক্ষতিগ্রস্তদের রোজগারের পথ খোলার জন্য মেট্রো রেলের কাছে বিকল্প জায়গার দাবিও জানিয়েছে গয়না শিল্পীদের ওই সংগঠন।
দুশ্চিন্তা
• ৫৫টি গয়না তৈরির কারখানা বন্ধ।
• ২৫টি ভেঙে পড়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপে তলায়।
• রোজগার বন্ধ বৌবাজার এলাকার প্রায় ৩,০০০ গয়না কারিগরের।
• কত দিন কাজ বন্ধ থাকবে ঠিক নেই।
• সংশয় রয়েছে কাজ ফেরত পাওয়া নিয়েও।
• ধসে যাওয়া বাড়িতে থাকা কারখানাগুলির জায়গা ফিরে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা।
সুব্রতবাবুদের এখন সব থেকে বড় চিন্তা, কবে আবার কাজ ফিরে পাবেন তাঁরা। কবে পারবেন পুরনো জায়গায় ফিরতে। যদিও অনেকেই বলছেন, এই মুহূর্তে যা অবস্থা, তাতে কবে কারখানা খুলবে তার স্থিরতা নেই। শুধু তা-ই নয়, যেগুলি ভেঙে পড়েছে, সেগুলি আদৌ খুলবে কি না কিংবা খুললে সেখানে আগের শিল্পীরাই কাজ পাবেন কি না, সে ব্যাপারে সংশয় থাকছেই। ওই সব কারখানার মালিকদের একাংশের মতে, দুশ্চিন্তা বাড়ছে কারখানার জায়গা ফেরত পাওয়া নিয়েও। তাঁদের দাবি, কবে ধসে পড়া বাড়িগুলি আবার তৈরি হবে জানা নেই। নির্মাণের পরে সেখানে তাঁরা কারখানার জন্য সঠিক জায়গা পাবেন কি না, নিশ্চয়তা নেই তারও। বিশেষত কারখানাগুলির সিংহভাগই যেখানে ভাড়ায় নেওয়া।
সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘যে সব কারখানা বন্ধ হয়ে রয়েছে, সেখানকার গয়না শিল্পীদের নাম, ঠিকানা-সহ বিস্তারিত তালিকা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি।’’
পাশাপাশি কারখানা মালিকদের আরও আশঙ্কা, পুরসভার নিয়ম মেনে নতুন নকশায় যখন বাড়িগুলি তৈরি হবে তখন প্রতিটিকে অনেকখানি করে জায়গা ছাড়তে হতে পারে। এর ফলে তাঁরা আদতে কতটা জায়গা পাবেন, তা নিয়ে সংশয় থাকছে বিস্তর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy