গাড়ি বিক্রিতে ভাটার টানের কথা বেশ কয়েক মাস ধরেই বলছিল সংশ্লিষ্ট শিল্প মহল। সেই ছবি বদলায়নি নতুন অর্থবর্ষের শুরুতেও। আর এ বার দেশের গাড়ি বাজারের বিবর্ণ ছবি তুলে ধরে ডিলারদের সংগঠন ফাডার দাবি, চাহিদা এমনই তলানিতে ঠেকেছে যে, খরচ সামলে আর ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেননি ২৫০ জন ডিলার। মাত্র দেড় বছরের মধ্যে যে কারণে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই আড়াইশো ডিলারশিপের। কাজ খুইয়েছেন অন্তত ১৭ হাজার কর্মী।
‘অচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির তখ্তে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বছরে দু’কোটি চাকরির আশ্বাসও মিলেছিল। কিন্তু পরে সেই কাজের সুযোগ তৈরি না হওয়া নিয়েই বিরোধীদের সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। মূলত কর্মী পিএফের হিসেবকে ঢাল করে কেন্দ্র সেই অভিযোগ ওড়ালেও, বিভিন্ন বেসরকারি তথ্য আর সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া সরকারি পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে কর্মসংস্থানের রঙচটা ছবি। এখন এই ১৭ হাজার কাজ যাওয়াও সরকারের পক্ষে খুব ভাল খবর নয়।
অস্বস্তি আরও বেশি এই কারণে যে, নোটবন্দির পরে বিরোধীরা যখন দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে মোদী সরকারকে নাগাড়ে বিঁধছিলেন, তখন তার জবাব দিতে এই গাড়ি শিল্পকেও হাতিয়ার করেছিলেন মোদী। ওই সময়ে গাড়ি বিক্রির হিসেব ভাল থাকায় সেই সংখ্যা তুলে ধরে তিনি দাবি করেছিলেন যে, তা অর্থনীতির ভাল স্বাস্থ্যের লক্ষণ। ফলে এখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে, গাড়ির চাহিদা এমন তলানিতে ঠেকা কি তবে বেহাল অর্থনীতির আয়না? বিশেষত যেখানে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮% আসে শুধু গাড়ি শিল্প থেকে।
বুধবার ফাডা-র প্রেসিডেন্ট আশিস হর্ষরাজ কালে জানান, গত মার্চের থেকে এপ্রিলে শুধু বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বেড়েছে। আর গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় গত মাসে সব ধরনের গাড়ির বিক্রি কমেছে। সিইও সহর্ষ দামানি জানান, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা (এনবিএফসি) থেকে ঋণ প্রায় বন্ধ। এক দিকে বিক্রিতে টান ও অন্য দিকে কার্যকরী মূলধনের অভাবে ২৫০ জন ডিলার ঝাঁপ বন্ধ করেছেন। বিক্রি না হয়ে ডিলারের ঘরে দীর্ঘ দিন মজুত হিসেবে পড়ে থাকা গাড়ি কামড় বসাচ্ছে মুনাফাতেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy