Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
লক্ষ্য ছোট চাষিদের দক্ষতা বাড়ানো

চা চাষে অনুমোদিত কীটনাশকের মোড়কে লোগো রাখার পরিকল্পনা

চা গাছে নিষিদ্ধ কীটনাশক বা রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার বন্ধ করতে উত্তরবঙ্গে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর। এ বার অনুমোদিত কীটনাশক ও রাসায়নিক বিক্রির ক্ষেত্রে মোড়কে টি বোর্ডের লোগো ব্যবহারের কথা ভাবছে কেন্দ্র। অনুমোদিত কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহারবিধি ও তালিকা তৈরি হয়েছে।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

চা গাছে নিষিদ্ধ কীটনাশক বা রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার বন্ধ করতে উত্তরবঙ্গে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে রাজ্যের কৃষি দফতর। এ বার অনুমোদিত কীটনাশক ও রাসায়নিক বিক্রির ক্ষেত্রে মোড়কে টি বোর্ডের লোগো ব্যবহারের কথা ভাবছে কেন্দ্র। অনুমোদিত কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহারবিধি ও তালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তারপরও যাতে সেগুলির ব্যবহার নিয়ে চা শিল্পে কোনও বিভ্রান্তি না-থাকে সে জন্যই লোগো ব্যবহারের ভাবনা বলে সরকারি সূত্রের খবর। এতে বিশেষ করে ছোট চাষিদের দক্ষতা বাড়বে বলে দাবি চা শিল্পের।

চা শিল্প ও টি বোর্ডের অবশ্য দাবি, ভারতীয় চায়ে কীটনাশক ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। এই চা নিরাপদ। তবুও কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে গত বছর থেকেই নতুন ‘প্লান্ট প্রোটেকশন কোড’ (পিপিসি) চালু করেছে টি বোর্ড। সেখানে বিভিন্ন কীটনাশক বা রাসায়নিকের নাম ও ব্যবহারবিধি (প্লান্ট প্রোটেকশন ফর্মুলা বা পিপিএফ) নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

সাধারণ ভাবে সংগঠিত ক্ষেত্রে বড় বাগানগুলি রাসায়নিক ব্যবহার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। কিন্তু ক্ষুদ্র চা চাষিদের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতার অভাব আছে বলেই অভিযোগ। পিপিএফ-এর তালিকায় সে- গুলির রাসায়নিক নাম থাকায় অনেক ছোট চাষি তা বুঝতে পারেন না। কারণ তাঁদের কাছে সাধারণত পণ্য সংস্থার ব্র্যান্ড-নামেই রাসায়নিকের পরিচিতি। তার সুযোগ নিয়ে অনেক জায়গায় জাল ও অনুমোদনহীন কীটনাশক ও রাসায়নিক বিক্রি হয় বলে অভিযোগ। যা আখেরে ক্ষতি করে চা গাছেরই।

টি বোর্ড-এর দাবি, সচেতনতা বাড়াতে সর্বত্র কর্মশালা হচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি অনুমোদিত কীটনাশক ও অন্য রাসায়নিক বিক্রির সময়ে তার প্যাকেট বা পাত্রের গায়ে বোর্ডের লোগো ব্যবহার করা যায় কি না, সে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। বোর্ডের বক্তব্য, সরকারি ছাপ দেখলে ক্ষুদ্র চা চাষিরা কিছুটা আশ্বস্ত হবেন সেই রাসায়নিক সম্পর্কে। দিল্লিতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব আর আর রশ্মির সঙ্গে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা-র বৈঠকেও বিষয়টি উঠেছিল বলে দাবি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর। তবে অনেকেই আবার মনে করছেন, সে ক্ষেত্রে হলোগ্রাম বা সেই জাতীয় আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা না-নিলে লোগো জাল হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। টি বোর্ডের অবশ্য দাবি, এটি এখন পরিকল্পনা স্তরে রয়েছে। তা কার্যকর হলে সব দিক মাথায় রেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ক্ষুদ্র চা চাষিদের আর একটি সমস্যার প্রসঙ্গও তোলেন বিজয়বাবু। আবহাওয়া-জনিত বা পোকামাকড়ের দাপটে বা বিশ্ব বাজারে চায়ের দাম কমে গেলে দেশের চা শিল্পেও তার প্রভাব পড়ে। সেই সময়ে খরচের চেয়েও কম দামে চা পাতা বিক্রি করতে হয়, তাতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন ক্ষুদ্র চাষিরা। সে সময়ে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে আগে একটি তহবিল ‘প্রাইস স্টেবিলাইজেশন ফান্ড’ গড়ার কথা হলেও তা কার্যকর হয়নি। বিজয়বাবুর দাবি, বৈঠকে রশ্মি সেটি খতিয়ে দেখে ফের চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে শস্য বিমাও অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ‘পাইলট প্রকল্প’ জলপাইগুড়িতে চালু হওয়ার কথা। পাতার দাম নির্ধারণে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে ৭০% পাতা নিলামে বিক্রির বাধ্যতামূলক নিয়ম চালুর কথাও ভাবছে কেন্দ্র।

অন্য বিষয়গুলি:

pesticides tea plantation debopriya sengupta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE