শক্তি চক্র কী?
মানব দেহ হল ব্রহ্মান্ডেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ। বিশালাকায় এই ব্রহ্মান্ডের সঙ্গে মানবদেহের সমন্বয় সাধন বা সেতু বন্ধন করার জন্য শক্তির প্রয়োজন পড়ে। যে শক্তি নিহিত রয়েছে মানবদেহের ১১৪টি স্নায়ুসন্ধিতে। প্রতিটি স্নায়ুসন্ধি এক একটি শক্তি চক্র, যার মাধ্যমে জগতের শক্তি মানব দেহে সঞ্চালিত হয়। তবে সেই শক্তি তখনই প্রবাহিত হতে পারে, যখন স্নায়ুসন্ধি বা চক্রগুলি জাগ্রত হবে। ১১৪টি শক্তি চক্র জাগরন? কী ভাবে সম্ভব? কী এই চক্র?
এই চক্র আদতে ত্রিভুজাকৃতি, উর্দ্ধমুখী। নিরন্তর ঘূর্ণনের ফলে ত্রিভুজাকৃতি স্নায়ুসন্ধিগুলি চাকার মতো দেখায়, ফলতঃ চক্র। মানব দেহের সূক্ষ্ম শরীরে ১১৪টি শক্তি চক্র থাকলেও, মূল চক্র ৭টি।
১. মূলাধার বা রুট চক্র
২. স্বাধিষ্ঠান বা স্যাক্রাল চক্র
৩. মণিপুর বা সোলার প্লেক্সাস চক্র
৪. অনাহত বা হার্ট চক্র
৫. বিশুদ্ধ বা থ্রোট চক্র
৬. আজ্ঞা বা থার্ড আই চক্র
৭. সহস্রার বা ক্রাউন চক্র।
মানব শরীরের মেরুদন্ড বরাবর নীচ থেকে উপর পর্যন্ত বিস্তৃত এই ৭টি প্রধান চক্র। এই চক্র জাগ্রত হলে যেমন বিশাল ব্রহ্মান্ডের শক্তি কুন্ড থেকে নির্গত শক্তি মানবদেহে প্রবেশ করে বিন্দু থেকে বিন্দুতে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে এক বা একাধিক চক্রের ভারসাম্য নষ্ট হলে মানব জীবনে তার কু-প্রভাব পড়ে। ৭টি চক্র, বাস্তুর ৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিককে নির্দেশ করে, আবার ৭টি গ্রহ এই শক্তিচক্রগুলিকে প্রভাবিত করে। কোনও ব্যক্তির জন্মছকে গ্রহদের নেতিবাচক প্রভাব বা বাস্তুদোষ থাকলে তা সেই ব্যক্তির শক্তি চক্রও ভারসাম্য হারায়।
শক্তি চক্র-গ্রহ-বাস্তু ও তার প্রভাব:
রুট চক্র: মেরুদণ্ডের গোড়ায় অবস্থিত। রুট চক্র বা মূলাধার চক্র অবরুদ্ধ হলে সেই ব্যক্তি অতি প্রতিক্রিয়াশীল, উদ্বিগ্ন এবং ভীত হয়। কর্মক্ষেত্রে সম্পর্কের মধ্যে স্থিতিশীলতার অভাব দেখা দেয়। আগ্রাসী মনোভাব, লোভ তৈরি হয় অথবা সেই ব্যক্তি কোনও লোভী ব্যক্তির পাল্লায় পরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাস্তুতে বাড়ির দক্ষিণ দিক এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিক রুট চক্রকে প্রভাবিত করে। বাড়ির এই অংশে বাস্তু দোষ থাকলেও রুট চক্র অবরুদ্ধ হয়। (চক্রের রঙ: লাল)
স্যাক্রাল চক্র: নাভির প্রায় এক ইঞ্চি নীচে অবস্থিত। সাক্রাল চক্র অবরুদ্ধ হলে সেই ব্যক্তি নিজেকে গুটিয়ে নেয়, ঘনিষ্ঠতায় ভয় পায়, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হওয়া বা ম্যানুপুলেটিভ হওয়া স্যাক্রাল চক্র অবরুদ্ধ হওয়ার অন্যতম লক্ষ্মণ। এই চক্র নিয়ন্ত্রণ করে শুক্র গ্রহ এবং বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব দিক। জন্মছকে শুক্রের নেতিবাচক প্রভাব অথবা বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাস্তুদোষ থাকলে স্যাক্রাল চক্রে প্রভাব পড়ে। (চক্রের রং: কমলা)
সোলার প্লেক্সাস চক্র: নাভির প্রায় তিন ইঞ্চি উপরে পিঠে, মেরুদণ্ডের উপর অবস্থিত। এই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করে সূর্য এবং বাড়ির পূর্ব দিক। জন্মছকে সূর্যের নেগেটিভ প্রভাব বা বাড়ির পূর্বদিকে নোংরা-আবর্জনা, টয়লেট বা অন্যান্য বাস্তুদোষ থাকলে এই চক্র অবরুদ্ধ হয়। সোলার প্লেক্সাস চক্র অবরুদ্ধ হলে সেই ব্যক্তি খুঁতখুঁতে, জটিল, প্রবল আত্মাভিমানী এবং অতিরিক্ত প্রভাববিস্তারকারী হয়। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দেয়, সম্মানহানিও হতে পারে। (চক্রের রং: হলুদ)
হার্ট চক্র: চার নম্বর চক্র অনাহত চক্র বা হার্ট চক্র চন্দ্র গ্রহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ঠিক বুকের মধ্যদেশে অবস্থিত এই চক্রটি বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিককে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনও ব্যক্তির জন্ম রাশিচক্রে চন্দ্র নেতিবাচক হলে বা বাড়ির উত্তর-পশ্চিম অংশ ত্রুটিযুক্ত হলে হার্ট চক্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি অসহিষ্ণু, পরনির্ভরশীল, হিংসুটে প্রকৃতির হয়ে ওঠে। অপরকে বিশ্বাস করতে ভয় পায়, কখনও কখনও অতিমাত্রায় আত্মত্যাগী হয়ে ওঠে। নিজেকে বিলিয়ে দিতেও পিছপা হয় না। (চক্রের রং: সবুজ)
থ্রোট চক্র: কণ্ঠে অবস্থিত থ্রোট চক্র বা বিশুদ্ধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করে বুধ এবং বাড়ির উত্তর দিক। এই চক্র অবরুদ্ধ হলে সেই ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করতে পারে না, কথা শোনার ধৈর্য্য থাকে না, পরনিন্দা-পরচর্চা করতে পছন্দ করে, ভুল বোঝে, চিৎকার করে, অপশব্দ প্রয়োগ করে। জন্মছকে বুধ গ্রহ নেতিবাচক হলে বা বাড়ির উত্তর দিকে বাস্তুদোষ তৈরি হলে থ্রোট চক্র অবরুদ্ধ হয়। ( চক্রের রং : আকাশী )
থার্ড আই চক্র: দু’টি ভ্রু-এর মধ্যে অবস্থিত ছয় নম্বর চক্রটি হল থার্ড আই চক্র বা আজ্ঞা চক্র। বাস্তু মতে এই চক্রের দিক হল বাড়ির পশ্চিম দিক, নিয়ন্ত্রণকারী গ্রহ শনি। আজ্ঞা চক্র অবরুদ্ধ হলে ব্যক্তির দূরদর্শিতা চলে যায়, মনোসংযোগ করতে পারে না, দুঃস্বপ্ন দেখে, দৃষ্টিভ্রম তৈরি হয়। বিচারক্ষমতা লোপ পায়। (চক্রের রং: নীল)
ক্রাউন চক্র: সাত নম্বর চক্র ক্রাউন বা সহস্রার চক্র। বৃহস্পতি গ্রহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই চক্রের অবস্থান মাথার উপর। বাস্তু মতে উত্তর-পূর্ব দিক এবং বাড়ির মধ্যস্থান ক্রাউন চক্রকে প্রভাবিত করে। ক্রাউন চক্র অবরুদ্ধ হলে মানুষ অবসাদের শিকার হয়, আসক্তি তৈরি হয়, ছটফট করতে থাকে, অতিমাত্রায় ধর্মভীরু এবং গোঁড়া হয়। অধিক মাত্রায় বিচারপ্রবণতা বা নাস্তিকতা তৈরি হয়। এঁরা যাদেরকে বিশ্বাস করে, তারাই এদের ক্ষতি করে। (চক্রের রং : বেগুনি )
মানসিক ও আর্থিক সমৃদ্ধি লাভে সাতটি শক্তি চক্রের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সঠিক ধ্যান, মন্ত্র, বাস্তুদোষের সঠিক প্রতিকার এই শক্তির উন্মেষ ঘটাতে পারে।
বিস্তারিত জানতে 18 December কলকাতায় Prosperity Seminar এ যোগ দিতে পারেন (payable & non-refundable)।
হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর: 8617372545
ডিসক্লেইমার: এটি একটি বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন এবং বিজ্ঞাপনদাতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত। প্রতিবেদনে প্রকাশিত সমস্ত বক্তব্য / মন্তব্য একান্তই বিজ্ঞাপনদাতার নিজস্ব। এর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও সম্পর্ক নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy