তিয়াসা সরকার
সমাজ ও শিক্ষার পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এক দিকে যেমন সহনশীলতা, স্নেহের পরশ, তেমনই অন্যদিকে প্রয়োজন বিশেষে বকাঝকা, শাসন আর গাম্ভীর্য। বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে কোনও সমাজের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন প্রজন্মের বিকাশ। আর একটা প্রজন্মের চারিত্রিক ও নৈতিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা। আর এই শিক্ষাদানের অন্যতম প্রধান কারিগর হল শিক্ষক-শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন ধরে সেই করিগরের কাজই অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে করে চলেছেন তিয়াসা সরকার। বর্তমানে তিনি সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমি -তে শিক্ষকতা করছেন। শুধুমাত্র শিক্ষকতাই নয়, এর পাশপাশি তিয়াসা একজন নৃত্যশিল্পীও বটে!
‘যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে’ – বহুল প্রচলিত এই বাংলা প্রবাদকে মনেপ্রাণে সমর্থন করেন তিয়াসা। তাঁর মতে, যে কোনও শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই যত্ন সহকারে পঠনপাঠনের পাশাপাশি সামাজিক মূল্যবোধের শিক্ষাদানও অত্যন্ত জরুরি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি নাচের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন তিয়াসা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে বহু প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। নাচ তাঁর ভালবাসা। তাই রোজকার কাজ-কর্ম আর সংসার সামলে আজও সেই চর্চা জারি রেখেছেন।
তবে এত কিছুর মধ্যেও কখনও খামতি আসেনি পারিবারিক দায়িত্ববোধে। অত্যন্ত নিপুণ ভাবে ও দক্ষতার সঙ্গে তিয়াসা সামলে যাচ্ছেন সব দিক। সংসারে কখন কোনটা দরকার, কার কী প্রয়োজন, এই সব কিছুর খুঁটিনাটির কোনওটাই বাদ পড়ে না তিয়াসার নজর থেকে। সেই কারণে স্বাভাবিক ভাবেই পরিবারের অন্য সদস্যরাও বেশ গর্বিত তিয়াসাকে নিয়ে। পরিবারের কাছে তিনি যেন কাছে স্বয়ংসিদ্ধা।
সন্তান রয়েছে তিয়াসার। পেশা, শখ এবং পরিবার সামলানোর পাশাপাশি তাকেও অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বড় করে তুলছেন। পৃথিবীর যে কোনও মায়ের কাছেই এই অনুভূতি স্বর্গীয়। মাতৃত্বকেও চুটিয়ে উপভোগ করছেন তিনি। সন্তানকে শেখাচ্ছেন জীবনের মানে।
নারীদিবস নিয়ে তিয়াসাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “নারীশক্তি ছাড়া এই পৃথিবী সত্যিই অকল্পনীয়। আমার কাছে বছরের প্রতিটি দিনই নারী দিবস। যেখানে স্বয়ং নারী প্রতিটি দিন নিজে নতুন প্রতিভা ও কর্মক্ষমতার রস আস্বাদন করে। আমি ধন্য যে শিক্ষিকা সত্ত্বা, নৃত্যশৈলী ও মাতৃত্বের মধ্যে সমতা বজায় রেখে হাজারো কাজের মধ্যে যত্ন নিয়ে পরিবারের খেয়ালও রাখতে পারছি।”
এই একবিংশ শতকেও প্রায়ই বিভিন্ন নারীবিদ্বেষ মূলক ঘটনার সাক্ষী থাকে দেশ। শিকড় থেকে তা উপড়ে ফেলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিয়াসা বলেন, “সমাজে নারীকে পণপ্রথা, গার্হস্থ্য হিংসা, বাধ্য বাধকতার জালে আটকে না রেখে প্রতিটা দিন তাঁকে যোগ্য সম্মান দিয়ে জয়যাত্রার দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করা উচিত। তাতেই নারী দিবসের উদযাপন সফল হবে।”
তবে তিয়াসা মনে করেন ধীরে ধীরে সময় পাল্টাচ্ছে। আগামী দিনে তা আরও প্রসারিত হবে। নারীশক্তির নজির হয়ে উঠছেন তিয়াসা। ছাত্রছাত্রীদের মানসিক গঠন বা বিকাশের ক্ষেত্রেও তিনি এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, সমাজে নারী পুরুষের অধিকার সমান। কেউ কারওর থেকে কোনও অংশে কম নয়। একাধারে শিক্ষিকা, নৃত্যশিল্পী এবং সর্বোপরি মাতৃসত্ত্বা—সবটা নিয়েই তিনি অনেকের কাছে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণা। তাই তিনি আজ ‘সর্বজয়া’।
এই প্রতিবেদনটি 'উই মেক আস' -এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy