অভিযুক্ত কিশোর ফারদিন হুদা মুগ্ধ।
ইদে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কিনে দিতে হবে। কিন্তু, ১৭ বছরের ছেলের এই আবদার না মানায় মা ও বাবাকে আগুনে পুড়িয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল ফারদিন হুদা মুগ্ধ নামে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুরে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সিলভিয়া হুদা এবং তাঁর স্বামী এটিএম রফিকুল হুদা ফরিদপুরের কমলাপুর ডিআইবি বটতলা এলাকার বাসিন্দা। রফিকুল প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এটিএম শামসুল হুদার ছোট ভাই।
দগ্ধ অবস্থায় রফিকুল হুদা এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁর ভগ্নিপতি আকরাম উদ্দিন আহমেদ জানান, এ বছর ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুগ্ধ তার বাবার কাছে নতুন মডেলের একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। কিন্তু, বাবা কিনে দিতে রাজি না হওয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়। একটা সময়ে মুগ্ধ ঘরের মধ্যে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মা-বাবার গায়ে। এতে রফিকুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গা এবং সিলভিয়ার পায়ের কিছু অংশ পুড়ে যায়। পুড়ে যায় মুগ্ধরও পায়ের কিছু অংশ। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই রফিকুলকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। শুক্রবার বিকেলে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। সিলভিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুগ্ধ তার মায়ের সঙ্গেই আছে।
রফিকুলের ভাগ্নে ইফতেখার আলম বলেন, নতুন মডেলের মোটরসাইকেল কেনা নিয়ে মামা-মামির সঙ্গে মুগ্ধর ঝগড়া চলছিল। হঠাৎই ঘরে থাকা পেট্রোল দিয়ে সে আগুন ধরিয়ে দেয় তাঁদের গায়ে। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তিন তলা একটি বাড়ির দোতলায় একমাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকেন রফিকুল-সিলভিয়া দম্পত্তি। ছেলের জন্য ৫ লক্ষ টাকার একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। সেটি পাল্টে নতুন মডেলের বাইক দাবি করে মুগ্ধ।
অন্য দিকে, নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে মুগ্ধ লিখেছে, ‘যদি বাচঁতে হয়, বাঘের মতো বাচঁব। কাউকে ভয় করি না। মৃত্যুর কোনও ভয় নেই আমার। আল্লাহ ইজ এনাফ ফর মি!’ ইদের রাতেও তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে মুগ্ধ লিখেছে, ‘পৃথিবীতে নিজে ভাল থাকতে হলে স্বার্থপর হতে হবে। আর অন্যকে ভাল রাখতে গেলে নিঃস্বার্থ হতে হবে। এটাই সত্য।’
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. নাজিম উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
পায়রা বন্দর দিয়েই উন্নয়নের ঢেউ আসছে পিছিয়ে থাকা দক্ষিণ বাংলাদেশে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy