—প্রতীকী ছবি।
দামে বেদম। আয় ব্যয়ে অমিল। পকেটে টান। মন উচাটন। দিন চলে কীসে। টাকা যে খোলামকুচি। কাঁড়ি কাঁড়ি ঢাললেও থলে খালি। সব দেশের এক হাল। বাংলাদেশও বাদ নয়। মুদ্রাস্ফীতি গগনচুম্বী। দোকানদারের ওপর হম্বিতম্বি করে কী লাভ। তাদের অবস্থাও সসেমিরা। বেশি দামে কেনা, কম দামে দেবে কোত্থেকে। ডাঁয়ে আনতে বাঁয়ে কুলোয় না। হাল বুঝেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বছর আগে সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করেছিলেন। নিচুতলার কর্মীদের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়াইয়ে সঙ্গতি জুগিয়েছিলেন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বেতন ছিল ৪ হাজার ১০০ টাকা। নতুন স্কেলে হয় ৮ হাজার ২৫০ টাকা। বেতন বৃদ্ধিতে উল্লাস। বারো মাস কাটতে না কাটতেই ফের হতাশ। বাজার আগুন। হাত ছোঁয়ালেই পুড়ছে।
বাংলাদেশের সরকারি কর্মীদের মুখে আবার হাসি ফোটাতে পারেন হাসিনা। কিন্তু কত দিনে? প্রশ্ন এখন সেটাই। —ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা বাড়িয়েও লাভ হচ্ছে না। সে আর কতটুকু। রকেটের সঙ্গে আতসবাজি কখনও পাল্লা দিতে পারে! রকেট ছুটছে মহাকাশে। আতসবাজি একটু উঠেই পুড়ে ছাই। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিয়মিত মহার্ঘ ভাতা বাড়ায়। টাকাটা প্রথমে হাতে এলে মনে হয়, যাক অনেকটা পাওয়া গেল। দু'দিন পরেই বেজার। এটুকুতে কী হবে! বাংলাদেশেও ব্যতিক্রম নয়। হাসিনা সব জেনে চুপ করে থাকতে রাজি নন। যারা দেশের সেবা করেন, তাঁদের অর্থনৈতিক সংকট থেকে টেনে বার করতে ব্যস্ত। সমস্যাটা টাকার। সরকার বৈভব সাগরে ভাসছে না। যেটুকু আছে হিসেব করে খরচ করা দরকার। দেশ জুড়ে উন্নয়নের জোয়ার। অর্থ অপ্রতুল। এখান সেখান থেকে এনে জোগান দেওয়া হচ্ছে। তার উপর সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির বোঝা ঘাড়ে চাপালে চলে কী করে। স্কেল বৃদ্ধিতেও বিপদ। বাড়তি টাকা বাজারে প্রভাব ফেলবে। দাম আরও চড়বে। সে যাই হোক, সরকারী সেবকদের হাতে অতিরিক্ত টাকা তুলে দিতেই হবে। আর্থিক দুর্বলতায় তারা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললে কাজ করবে কী করে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিলে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান, আটক চার
২০১৫-র ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভায় অষ্টম বেতন কাঠামো অনুমোদিত হলেও কার্যকর হয় ২০১৬-র ১ জুলাই। তাতে বেতনের সঙ্গে বৈশাখী ভাতা দেওয়াও শুরু হয়। কর্মচারীরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। বিশেষ করে যেখানে বাংলাদেশ-ভারতের সরকারি কর্মচারীরা একসঙ্গে কাজ করেন সেখানে বেতনের ব্যবধানটা যন্ত্রণাদায়ক। ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে দু'দেশের কর্মীরা যৌথভাবে কাজ করেন। একই কাজে দু'য়ের তফাৎ ছিল বিস্তর। সেই ফাঁকটা পূরণ হওয়ায় স্বস্তি। অস্বস্তি সরকারের। বেতন বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত খরচ ২৩ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। টাকাটা তো আর আকাশ ফুঁড়ে পড়বে না। তখনই ঘোষণা করা হয়, বেতন বৃদ্ধির জন্য আর কোনও কমিশন হবে না। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে বেতন খাপ খাওয়াতে সমন্বয় আর সংস্কার দফতরের সচিব সচেষ্ট হবেন। তিনি এখন একটি কমিটি গড়েছেন, তাঁরা প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছেন, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি হতে পারে। সেটাও তড়িঘড়ি করা যাবে না। আরও ভাবনা চিন্তার পর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy