Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bangladesh News

ঢাকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোয় আতঙ্ক কাটছে কাটছে করেও কাটছে না

শঙ্কার মেঘ ধীরে ধীরে কাটছে ঢাকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে। পুরোপুরি পরিষ্কার হতে আগস্ট মাসটা যাবে। এখানে ফের সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে। অনেক স্কুল ইদের ছুটির পর খোলেনি। যে সব স্কুল খোলা সেখানেও হাজিরা কম।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ১৪:০৮
Share: Save:

শঙ্কার মেঘ ধীরে ধীরে কাটছে ঢাকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে। পুরোপুরি পরিষ্কার হতে আগস্ট মাসটা যাবে। এখানে ফের সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে। অনেক স্কুল ইদের ছুটির পর খোলেনি। যে সব স্কুল খোলা সেখানেও হাজিরা কম। ২৫ থেকে ৭০ শতাংশ। একশো ভাগ কোথাও নেই। বেশি ভয় অভিভাবকদের। তাঁরা ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না। কী হয় কী হয় ভাবটা তাঁদের মনে চেপে বসেছে। অধৈর্য শিশুরা। ভয়ডরের বালাই নেই। স্কুলে যাওয়ার বায়না ধরে নিরাশ হচ্ছে।

ভীতির ভিত বিদেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী। স্কুলগুলোতে তাদের সংখ্যা কম নয়। ভারতীয়রাও আছে। ১ জুলাই গুলশন হামলায় টার্গেট ছিল বিদেশিরাও। স্কুলেও যে তেমন ঘটবে না তার গ্যারান্টি কোথায়। বিদেশি নেই বলে ঢাকার বাইরে অন্য শহরের স্কুলে সেই ভয়টা নেই। বাংলাদেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ৩৫০। শিক্ষার্থী তিন লাখ। লাখ লাখ পড়ুয়ার তুলনায় সংখ্যাটা তেমন কিছু না। বাংলা মাধ্যম স্কুলে নির্বিঘ্নে পঠনপাঠন চলছে। মাদ্রাসাগুলোও নিশ্চিন্ত। আগে সমালোচনার অভিমুখ ছিল তারাই। কিছু হলেই কাঠগড়ায়। সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত। মান্ধাতা আমলের মাদ্রাসা আর নেই। আধুনিকতার চাপে সপ্রতিভ। ইংরেজি, অঙ্ক, বিজ্ঞান চর্চা সমান তালে। কম্পিউটারে সড়গড় হওয়ার ট্রেনিং, উচ্চ শিক্ষায় বাধা নেই, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত।

জুলাইয়ে দুটি নাশকতার একটিতেও মাদ্রাসার নাম জড়ায়নি। দরিদ্ররাও দায়মুক্ত। অভিযোগের আঙুল ইংরেজিয়ানায় অভ্যস্তদের দিকে। ফাঁদে বিত্তবানদের সন্তানরাই। প্রশ্ন উঠছে বার বার, এটা হয় কী করে। সংস্কার মুক্ত মন নিয়ে যাদের এগোনের কথা, তারা পিছিয়ে পড়ে কেন। যে কারণে নিজেদের ধ্বংস করে শহিদ হতে চাইছে তারও তো কোনও বাস্তবতা নেই।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পুলিশ জেরা করল মুসাকে

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলেও শ্রেণি বিভাগ। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তদের আলাদা স্কুল। যেখানে পড়াতে পাহাড় প্রমাণ টাকা ঢালতে হয় তার নাগাল মধ্যবিত্তরা পায় না। বিত্তশালীদের গোটা বারো স্কুল নিরাপত্তা দফতরের নেক নজরে। তার মধ্যে অন্যতম স্কলাশটিকা, মাস্টারমাইন্ড, সানবিম, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আগা খান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সানিডেল, ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুল। গুলশনে নিহত জঙ্গি রোহাম ইমতিয়াজ, মির সমিহ পড়ত স্কলাশটিকাতে। নিরবাস ইসলাম পড়েছে ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুলে। দুটি স্কুলের প্রিন্সিপাল শৈশব থেকে তিনজনকে দেখেছেন। স্নেহের ছাত্রদের পরিণতি দেখে তাঁরা হতবাক। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। কী করে পারবেন! তিনজনই ছিল নিরীহ গোবেচারা। ক্লাসে দুষ্টুমি করার জন্য কোনও দিন শাস্তি পায়নি। শিক্ষকদের খুব ভয় পেত। বড় হয়ে তারাই যদি হাতে বন্দুক নিয়ে মানুষ খুন করে শিকড়ের দোষ দেওয়া যায় না।

বাছাই করা কিছু স্কুলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিষ্কৃতি চাইছে না সরকারও। ছেলেরা বড় হয়ে যদি বিপজ্জনক রাস্তায় পা রাখে স্কুল কী করবে। সেক্ষেত্রে অভিভাবক আর পরিবারের দায় বেশি। তাঁরা সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াতেই বিপদ। সেই দূরত্ব মেটাতে হবে। ছেলেমেয়েদের ব্যবহারে অসঙ্গতি দেখলেই ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি। কিছু না বলে দূরে চলে গেলে খবর দিতে হবে পুলিশকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Dhaka English Medium School Dhaka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE