ময়মনসিংহে বাড়ি হওয়ার সুবাদে তাঁর খেলার কথা ঢাকা বিভাগে। অথচ মোসাদ্দেক হোসেনকে খেলানো হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সুযোগটা ভালই কাজে লাগিয়েছেন এই তরুণ ক্রিকেটার। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটের জাতীয় লিগে উপর্যুপরি ২ ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি, রংপুর বিভাগের বিরুদ্ধে ২৫০-এর পর চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২৮২। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এমন দু’টি ইনিংসের পর ৮ মাসের ব্যবধানে জাতীয় লিগের পরবর্তী আসর, সেখানেও আর একটি ডাবল, সিলেট বিভাগের বিপক্ষে নট আউট ২০০। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের সঙ্গে মানানসই যে ছেলেটি, তাকেই কি না নামিয়ে দেওয়া হল টুয়েন্টি-২০তে। মোসাদ্দেক নিজেও এমন অভিষেক চাননি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে টি-২০ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের অভিষেকে ১৯ রানে ফিরে প্রকারান্তরে সে কথাই যে জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচকদের।
তবে সোজা ব্যাটে খেলতে পারে যে ছেলেটি, শ্লগে ব্যাটকে চাবুক বানাতে পারে, ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তো এমন ক্রিকেটারকেই চাই। নির্বাচকদের তাই নজর ছিল এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের উপর। আবাহনীর শিরোপা পুনরুদ্ধারের কারিগর এই অল রাউন্ডার ১৪ ম্যাচে করেছেন ৬২২ রান ( গড় ৭৭.৭৫), বোলিংটাও ছিল দারুন ( ১৫ উইকেট, গড় ২৮.৮৬)। ব্যাটিং এবং বোলিং পার্টনার সাকিব নিজেও অভিভুত হয়েছেন। আবাহনী অধিনায়ক তামিমের মতে, “ও যেভাবে খেলে, তাতে অনেক পরিণত দেখায়। আমাদের চেয়েও বেশি পরিণত মোসাদ্দেক।” এমন পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ঘোষিত ১৩ সদস্যের ওয়ানডে দলে তাঁকে বেছে নিয়েছেন নির্বাচকমন্ডলী। বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে নুতন মুখ এই অল রাউন্ডার।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চূড়ান্ত দল ঘোষনার জন্য তাসকিনের বায়ো মেকানিক্স রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন নির্বাচকরা। গত ৮ অগস্ট ব্রিসবেনে বায়ো মেকানিক্স পরীক্ষার রিপোর্টটা বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে হাতে পেলেই বৈধ বোলারের স্বীকৃতিতে তাসকিনকে দলে নিতে পারতেন নির্বাচকরা। কিন্তু সে রিপোর্টটি বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে না আসায় তাসকিনকে বাদ দিয়েই গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচের দল ঘোষনা করেছে বিসিবি। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশ দলে ৪ পেসারের উপস্থিতি বিস্ময়ের সৃ্ষ্টি করেছে। ৫০ ওভারের ম্যাচই হোক বা টি-২০। চার পেসারের ফর্মুলাতেই থেকে গিয়েছে বাংলাদেশ। সেই ছক থেকে এ বার বেরিয়ে এসেছেন নির্বাচকরা। তাসকিন,মুস্তাফিজুরের অনুপস্থিতিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দু’ম্যাচের ঘোষিত দলটি হয়ে পড়েছে স্পিন নির্ভর। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরে ইংল্যান্ডকে হারানোর নায়ক পেস বোলার রুবেল হোসেন সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ১৯ উইকেট পেয়ে নির্বাচকদের পরীক্ষায় পাস করে ফিরেছেন দলে। কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুরের ইনজুরিও রুবেলের ফেরার পথ করেছে সুগম। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ইনজুরির কবলে পড়ে ছিলেন দলের বাইরে, মিস করেছেন গত নভেম্বরে ওয়ানডে সিরিজ। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ফিরলেন ৬৭ ওয়ানডে ম্যাচে ৮৭ উইকেট পাওয়া এই পেস বোলার। হ্যাটট্রিক দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেক তাইজুল ইসলামের। তবে ২ বছরের ওয়ানডে খেলেছেন মাত্র ২ ম্যাচ। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেটহীন কাটানোয় আর বিবেচ্য হননি বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল। ১৮ মাস পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন তিনি। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর ওয়ানডে দলের বাইরে কাটানো পেস বোলার শফিউল ফিরেছেন ২২ মাস পর। তাকে ফিরিয়ে আনতে নির্বাচকরা বাদ দিয়েছেন ধারাবাহিক পেস বোলার আল আমিনকে।
আরও পড়ুন...
ভারতের এক ডজন স্মরণীয় টেস্ট জয়
দুর্গা পূজার আগাম শুভেচ্ছা আনন্দ উৎসবে
গত বছরে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ হোম সিরিজে ৩ ম্যাচে ৪ উইকেট,এ বছরে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে ৭ উইকেটের পর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সর্বশেষ আসরে এই পেস বোলার শিকার করেছেন ২৩ উইকেট ! সেখানে প্রিমিয়ার ডিভিশনের সর্বশেষ আসরে ১১টি উইকেট পেয়েও নির্বাচকদের গুডবুকে শফিউল ইসলাম ! ফিটনেস এবং ফিল্ডিংই নাকি এই দু’জনের মধ্যে একজনকে বেছে নেওয়ার মানদণ্ড ছিল। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, “ফিটনেস এবং অন্যান্য সব কিছু নিয়ে ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করে শফিউলকেই নিয়েছি। কন্ডিশনিং ক্যাম্পে শফিউল খুব উন্নতি করেছে। আল আমিন এবং শফিউলের ফিল্ডিংয়ে পার্থক্যটা চোখে পড়বে।” টি-২০ বিশ্বকাপে তিন তিনটি সহজ ক্যাচ ড্রপের সাজাটা তাহলে পেতে হলো আল আমিনকে।
১৩ সদস্যের বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাসির হোসেন, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও তাইজুল ইসলাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy