আটক দিনমজুর রফিকুল।
মিলটা শুধু নামেই। ‘অপরাধ’ বলতে সেটাই। আর সেই ‘অপরাধ’য়েই পাঁচ দিন জেলে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম। সন্তানকে জেল থেকে ছাড়ানোর টাকাও যোগাড় করতে পারছেন না ভিক্ষুক মা। পুলিশের দাবি, মানুষমাত্রই ভুল হয়। দারোগারও ভুল হতে পারে। একই মামলাতে এর আগেও বছর দু’য়েক আগে পুলিশ 'ভুল' করে রফিকুলকে গ্রেফতার করেছিল। সে বার আদালতে গিয়ে ভুল ধরা পড়ে। ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলাতে।
একটি হামলার ঘটনায় অভিযুক্তের সঙ্গে নামের মিল থাকাতে গ্রেফতার করা হয় রফিকুল ইসলাম নামের ওই দিনমজুরকে। গত রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করে সখীপুর থানার পুলিশ। পরদিন সোমবার টাঙাইল আদালত তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। অর্থাত্ কোনও অপরাধ না করেই পাঁচ দিন ধরে তিনি জেলে রয়েছেন। দুই বছর আগে ২০১৫ সালের ১৪ মে একই মামলায় রফিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই সময় তিনি তিন দিন জেলে ছিলেন।
মামলার বাদী সাইজুদ্দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান, ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ক্যারম খেলাকে কেন্দ্র করে চতলবাইদ গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২২) দলবল নিয়ে সাইজুদ্দিনের ভাগনে খাইরুলকে মারধর করে। পরদিন তিনি রফিকুল-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে সখীপুর থানায় অভিযোগ করেন। এই মামলাতে গত রবিবার পুলিশ যে রফিকুলকে গ্রেফতারর করেছে, তাঁর বাবার নাম ঠান্ডু। বাড়ি চতলবাইদতেই। দু’বছর আগেও এই একই মামলাতে পুলিশ এবারের আটক দিনমজুর রফিকুলকে গ্রেফতার করেছিল। পরে আদালতে গিয়ে আসল রফিকুল ধরা দিলে এই রফিকুল মুক্তি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: শ্বশুর-জামাতা দ্বন্ধে ভাঙচুর, বাংলাদেশে গ্রেফতার মন্ত্রীর ছেলে
সাংবাদিকরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি রফিকুল ইসলাম ও তাঁর বাবা আবদুর রশিদ বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন। চার মাস আগেও মূল আসামি রফিকুল দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। এখন তার বাড়িতে তালা ঝুলছে।
এই গ্রেফতারের বিষয়ে সখীপুর থানার ওসি মাকছুদুল আলম সংবাদমাধ্যমে বলছেন, “মানুষমাত্রই ভুল হয়। দারোগারও ভুল হতে পারে।” একই থানার এএসআই এমদাদ হোসেন বলেছেন, “নাম ঠিকানা মিলে যাওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।”
জেলে আটক দিনমজুর রফিকুলের বোন রেহেনা আখতার জানান, তাদের মা ভিক্ষা করেন। ভাই রফিকুলকে ছাড়িয়ে আনতে বৃহস্পতিবার টাঙাইল আদালতে গেলে আইনজীবী যে পরিমাণ টাকা চেয়েছেন সে টাকা না থাকাতে দাবি তারা বাড়ি ফিরে এসেছেন।
দিনমজুর রফিকুলের মা রোকেয়া বেগমের কাছে পুলিশ এসে জিজ্ঞেস করেছিল রফিকুল কে? তিনি জানিয়েছিলেন, তার ছেলে। এর পরেই পুলিশ রফিকুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy