Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হাসিনার আর্জি বিফল, সংঘর্ষ ছড়াচ্ছে ঢাকায়

নিরাপদ সড়কের দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলন আট দিনে পা দেওয়ার পরে বিক্ষোভকারীদের মুখগুলি যেন বদলে গিয়েছে। এত দিন রাস্তায় নেমে যান নিয়ন্ত্রণ থেকে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্কুলের ছেলেমেয়েদের। এ দিন আন্দোলনকারীরা তাদের থেকে বয়স্ক, নিজেদের তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের দাবি, এরা আসলে সরকার-বিরোধী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলির কর্মী।

উত্তাল: ছাত্রদের ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস পুলিশের। রবিবার ঢাকায়। —নিজস্ব চিত্র।

উত্তাল: ছাত্রদের ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস পুলিশের। রবিবার ঢাকায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৫৩
Share: Save:

চট্টগ্রামের পড়ুয়ারা রবিবার ঘোষণা করেছে, সোমবার থেকে তারা রাস্তা ছেড়ে স্কুল-কলেজে ফিরে ক্লাস শুরু করবে। কিন্তু ঢাকার রাস্তা এ দিনও ছিল উত্তাল। ফেসবুকের গুজবে মাঝে মাঝেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ফের শাসক দলের দফতরে হামলা চালাতে গেলে কাঁদানে গ্যাস চালিয়ে রুখে দিয়েছে পুলিশ। শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষও বেধেছে পড়ুয়াদের। তাতে আহত হয়েছে দু’পক্ষের অনেকেই। দিন শুরু হয়েছিল আন্দোলন শেষ করে ক্লাসে ফেরার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবেদন দিয়ে, আর শেষ হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে— ধৈর্যের সীমা ছাড়াচ্ছে। এ বার কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে অরাজকতাকে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলন আট দিনে পা দেওয়ার পরে বিক্ষোভকারীদের মুখগুলি যেন বদলে গিয়েছে। এত দিন রাস্তায় নেমে যান নিয়ন্ত্রণ থেকে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্কুলের ছেলেমেয়েদের। এ দিন আন্দোলনকারীরা তাদের থেকে বয়স্ক, নিজেদের তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশের দাবি, এরা আসলে সরকার-বিরোধী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলির কর্মী।

এ দিন সকালেই আন্দোলনকারীদের ক্লাসে ফেরার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘তোমরা অনেক করেছ। তোমাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এ বার রাস্তা ছেড়ে তোমরা ক্লাসে যাও।’’ তবে সকাল গড়াতেই আন্দোলনকারীরা ফের রাস্তায় নেমে আসে। নানা দাবি তুলে তারা রাস্তা অবরোধ করে। এক সময়ে কয়েকশো আন্দোলনকারী লাঠিসোঁটা নিয়ে ধানমণ্ডিতে আওয়ামি লিগের দফতরের উদ্দেশে রওনা হয়। জিগাতলায় পুলিশ তাদের আটকালে ছাত্ররা ইট ছুড়তে থাকে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তার পরেও ছোট ছোট দল গড়ে আওয়ামি লিগ অফিসের উদ্দেশে যাবার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। সে সময়ে শাসক দলের কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। দু’পক্ষই ইট-পাটকেল ছোড়ে। তাতে অনেকে আহত হয়।

রবিবারই নতুন ট্রাফিক আইন সংসদে পেশের জন্য মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে পাঠানো হয়েছে। সোমবার বৈঠকে সেটি অনুমোদন পেলে সংসদে পাশ করানো হবে। তাতে বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণে কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে। এ দিনই আবার পুলিশ ঢাকায় ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু করেছে। কিন্তু পরিবহণ মালিকেরা রাস্তায় বাস বার করেননি। ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সারাটা দিন।

আরও পড়ুন: ঢাকায় আজও পড়ুয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষ, বিএনপি-জামাতের ঘাড়ে দোষ

শনিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঢাকার মহম্মদপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়ির কনভয় আক্রান্ত হয়। রাষ্ট্রদূত পুলিশকে না জানিয়ে রাতে কেন ওই অঞ্চলে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রদূতের গাড়ির কনভয়ে কয়েক জন ইট ছোড়ে। তবে তিনি বা কোনও কর্মী জখম হননি। কনভয়ের দু’টি গাড়ির সামান্য ক্ষতি হয়েছে।’ তবে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

অন্য বিষয়গুলি:

Dhaka Student Protest Violence Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE