প্রতীকী ছবি
ঘোর অমাবস্যার রাত, নিষ্ঠাভরে কালীপুজো চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। আপনিও চললেন বাড়ির খুদে সদস্যকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে। তবে প্যান্ডেলে ঢুকতেই তার প্রথম চোখ পড়ল ভয়াল দর্শন দুই মুর্তির দিকে। ডাকিনী-যোগিনী! তাঁদের বেশ-ভূষা থেকে রূপ, সবটাই যেন ভয়াবহ। ব্যস! নিমেষে ধেয়ে এল প্রশ্নবাণ- ওরা কে, কী এবং কেন! উত্তর তো দিতে হবে! তার আগে বরং জেনে নিন, কে এই ডাকিনী এবং যোগিনী, আর কী-ই বা তাঁদের ইতিহাস।
নানা রকমের পুঁথিপত্র ঘাঁটলে জানা যায়, কোথায় উৎস এই ডাকিনী এবং যোগিনীর। তবে তা নিয়ে রয়েছে নানা মতভেদও। দেবী দক্ষিণা কালীর পূজাপদ্ধতি থেকে জানা যায় যে, মূল দেবতার পুজার আড়ম্বর শেষ হলে পুজা হয় তাঁর সঙ্গে থাকা আবরণ দেবতাদের, যারা পুরাণমতে হলেন মূল দেব-দেবীর পার্শ্বচর, পারিষদ কিংবা সহচর। দেবী কালীরও তেমনই আবরণ দেবতা আছেন। তাঁরাই ডাকিনী আর যোগিনী। বিধি অনুযায়ী কালীপুজোর সময়ে এঁদেরও পঞ্চোপচারে পুজো করা হয়।
শব্দের বুৎপত্তিগত দিক থেকে দেখতে গেলে ‘ডাক’ শব্দটি এসেছে তিব্বতি ভাষা থেকে, যার অর্থ হল জ্ঞান। তবে ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেনের মতে, মূল শব্দটির উৎপত্তি ডঙ্কা থেকে, যা অতীতে কোনও গুরুত্বপূর্ণ খবর ঘোষণা করতে বাজানো হত। সেই থেকেই এসেছে ডাকিনী শব্দটি, যার অর্থ হল জ্ঞানী নারী। আবার যোগিনী এসেছে যোগী শব্দটির থেকে, যার আক্ষরিক অর্থ হল উপাসক বা অনুচর। এখানে মাতৃধর্মের উপাসক ও মাতৃমুর্তির অনুচর যোগিনী। আবার অনেকের মতে, গৌড়বঙ্গে মা কালীর উপাস্য রূপ এসেছিল পাল যুগে সহজ তান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রে। রাজা মহীপাল ও নয়পালের সময়ে ওই আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন নারোপা ও নিগুডাকিনী। ব্রজযোগিনীর দুই ধারে পাল যুগ থেকে যে দুই সহচর থাকেন, তাঁরা বজ্রবর্ণনী ও বজ্রবৈরোচনী প্রতিফলন বহন করেন এখনও। আরও বলা হয়, কোনও সনাতনী শাস্ত্র বা পুরাণে মা কালীর এই দুই পার্শ্বচরের কোনও ধ্যানমন্ত্র না পাওয়ার কারণই হল এঁরা বাঙালীর নিজস্ব তন্ত্রধর্মের অতন্দ্র প্রহরী। আবহমানকাল ধরে এঁদের উপস্থিতি বর্তমান।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ ফিচারের' একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy