প্রচারে সায়নী ঘোষ। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
সাদা শাড়ি-চপ্পল-খোঁপা: ‘নেত্রী’ শুনলে চোখ বুজেও যে আদল দেখতে পায় বাঙালি, সেই ছাঁদ হুবহু ছেঁকে তুলেছেন সায়নী ঘোষ। শাড়িতে প্রচার নতুন নয়। বছর দু’য়েক আগে আসানসোলের ধুলোপথেও সাদা শাড়ি পরে, স্নিকার্স পায়ে দৌড়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোটপ্রচারের শেষ বেলায় তিনি হাঁটলেন যাদবপুরের রাস্তায়। সাদা শাড়িতেই। তবে সে দিনের পরিপাটি প্লিটের আঁচল এখন আলগা জড়িয়ে গায়ে। ‘নেত্রী’র মতো। সে দিনের ধুলো এড়ানো স্নিকারের জায়গায় পায়ে ধুলো-বেপরোয়া চপ্পল। ‘নেত্রী’র মতোই। বব ছাঁটের বেড় ছেড়ে বড় হওয়া চুলও হাতখোঁপায় বাঁধা থাকে টঙে। তবে এ সবের পাশাপাশি এখন আরও একটি আবরণ রয়েছে সায়নীর গায়ে— গত প্রায় আড়াই মাসে রোদে জ্বলে যাওয়া চামড়ার বাদামি রং। যে রং হয়তো গর্বের সঙ্গেই এখন পরেন অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হওয়া সায়নী।
শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরানোর ছবি পোস্ট করে বিতর্কে। সেখান থেকে রাজনীতি। বিধানসভার টিকিট এবং যুবনেত্রী। সেই সায়নী লোকসভার টিকিট পেয়ে প্রচারের শুরুতেই হাজির শিবমন্দিরে। শিবলিঙ্গে জল ঢেলে পুজোও দিলেন। বিজেপি সমালোচনা করতেই সায়নীর সপাট জবাব, ওদের সবেতেই আপত্তি! অবশ্য সায়নী যে জবাব দিতে ভালই জানেন, সেই শংসাপত্র দিয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সায়নীর প্রচারে গিয়ে বলেছেন, ‘‘অনেকের বাড় বেড়েছিল, তাই কোমর বেঁধে ঝগড়া করার জন্য সায়নীর মতো ক্যান্ডিডেট দিয়েছি।’’ তবে সায়নী সত্যি সত্যি ঝগড়া করেননি। বরং প্রচারে বেরিয়ে পানীয় জল আর নিকাশি সমস্যা নিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে ঠান্ডা মাথায় সমস্যার সমাধান করেছেন। পরিণত রাজনীতিকের মতো বলেছেন, ‘‘তৃণমূলে ভরসা করে বলেই তো বলতে এসেছে!”
প্রচারে বেরিয়ে কখনও বানিয়েছেন মোমো। কখনও চায়ের দোকানে ঢুকে তৈরি করেছেন ডিম-পাউরুটি। সাইকেল চালিয়ে গ্রামের রাস্তাতেও ঘুরতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আবার রামনবমীতে পাগড়ি পরে মিছিল করেছেন। সায়নীকে দেখতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ। আবার কোথাও কোথাও বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। তবে ভাল-মন্দ যা-ই হোক, মানুষ কাছে এসেছেন। কথা বলেছেন। বিমুখ হয়ে থাকেননি।
গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।