দমদমের তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায়। ছবি: ফেসবুক।
বিরোধীরা বলেন বাহাত্তুরে। কিন্তু তাঁর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, সৌগত রায়ের ‘মনের বয়স আজও বাড়েনি আর সেটাই হল আসল কথা’। ৭৬ বছরের ‘তরুণ’ তৃণমূলপ্রার্থী তাই প্রচারে বেরিয়ে অবলীলায় সাঁতারের পুলে নেমে পড়েন শুধুমাত্র ‘কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত’ (সুইমিং ট্রাঙ্ক) হইয়া। আবার এই তিনিই বেদম ঝড়বৃষ্টির পরে হাঁটুজলে-ডোবা পাড়ার রাস্তায় অবতীর্ণ হন পাটভাঙা দুধসাদা ধুতি-পাঞ্জাবিতে। ধুতির খুঁট উরুর উপরে তুলে বাঁশ দিয়ে খুঁচিয়ে সাফ করেন নর্দমা।
পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। তবে নিউটনের তৃতীয় গতিসূত্রের ধার ধারেন না। ‘বিপরীতমুখী সমান প্রতিক্রিয়া’র পরোয়া না করেই যখন তখন জাঁদরেল শিক্ষক-অবতারে ধরা দেন। উল্টো দিকে বিরোধীরা থাক বা নিজের দল— ছাড় পায় না কেউ। সম্প্রতি তাঁর সমর্থনে মমতার জনসভাতেও মেজাজ হারিয়েছেন। তাঁর বক্তৃতার মাঝপথে তৃণমূলের গান ‘বিরোধীদের বিসর্জন’ শুনে ক্রুদ্ধ হন সৌগত। চিৎকার করে গান থামাতে বলেন। তবে মমতা আসতেই নিজেকে সংবরণ করে নেন। তখন তিনি শক্তির (পড়ুন ক্ষমতার) নিত্যতা সূত্রের পূজারি।
প্রচারে চমকের অন্ত নেই। ঝড়ে বিধ্বস্ত শহরের রাস্তাঘাট থেকে ভাঙা গাছ সরাতে উঠে বসেছেন পে-লোডারের আসনে। পাশে বসিয়েছেন অভিনেত্রী তথা বরাহনগর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূলপ্রার্থী সায়ন্তিকাকে। আবার কখনও বাঁশ হাতে পথে নেমেছেন নর্দমায় জমা জঞ্জাল পরিষ্কার করতে। দুর্যোগের শহরে দমদমবাসী তাঁদের প্রার্থীকে দেখতে ভিড় না জমান, সাড়া মিলেছে বিরোধীদের কাছ থেকে। তাঁদের টিপ্পনী, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে তৃণমূল এই সে দিন তৈরি হল। আর সৌগত নতুন লড়তে নেমেছেন দমদমে।’’
গ্রাফিক— সনৎ সিংহ