ফ্ল্যাক্স, শিয়া, পাম্মকিন, সানফ্লাওয়ার, এডিবল—এসমস্ত বীজগুলো ডায়েটের তালিকোয় রাখুন।
শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য কতকিছুই না করা হয়! নিয়মিত ব্যয়াম, শরীরিক কসরত, হাঁটাহাটি আরও কত কী! তবু খাবারে ‘নো কম্প্রোমাইজ’। শহরের অলিগলিতে রোজ খুলছে নয়া নয়া ফাস্টফুডের দোকান। রোল, চাউমিন, মোমো, চপ দেখলেই ডায়েটকে দেখান বুড়ো আঙ্গুল। ভাবেন, কিছু বাড়তি সময় জিমে কাটালেই কেল্লা ফতে!
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা কিন্তু একেবারেই ভুল ধারণা। শারীরিক কসরতের পাশাপাশি সঠিক খাওয়াদাওয়াটাও ভীষণ জরুরি। রোজের ডায়েটে পুষ্টিগুণ বাড়াতে অনেকেই ইদানীং খাবারে যোগ করছেন নানা প্রকার বীজ।
কেবল খাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, এই সব বীজ শরীরের জন্যেও দারুণ উপকারী। ফ্ল্যাক্স, শিয়া, পাম্মকিন, সানফ্লাওয়ার, এডিবল—বীজের তালিকাও কম নয়। অফিসে খিদে পেলেই মুখ চলতি স্ন্যাক্স হিসেবে খেতেই পারেন এই সব বীজ। জানেন কি, কোন বীজ ঠিক কতটা উপকারী? কী ভাবেই বা খেতে পারেন এই সব বীজ।
আরও পড়ুন: উলের পোশাক আলমারিতে তোলার সময় এই ভুলগুলি ভুলেও নয়!
ওটসের সঙ্গে ফল আর এই সব বীজ মিশ্রণ যোগ করে খেতেই পারেন স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ
শিয়া সিড: ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ়, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর শিয়া সিড হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। পাশাপাশি হাড়ও ভাল রাখে। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে বিশেষ কার্যকর এই বীজ। কোনও ক্রনিক ইনফ্ল্যামেশন থাকলে, সেটিও কমাতে সাহায্য করে। বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে শিয়া সিড। শরীরের মেদ কমাতেও এই বীজ বেশ উপকরী। সারা রাত খানিকটা জলে এক টেবিল চামচ এই বীজ নিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। ওটস কিংবা স্মুদিতে ভিজিয়েও খেতে পারেন। আবার পুডিং, মাফিনেও দিতে পারেন এই বীজ। স্বাদ বেড়ে যায় বহুগুণ।
ফ্ল্যাক্স সিড: একটা সময়ে অনেক খাবারই রান্না করা হত তিসির তেলে। তিসি বা ফ্ল্যাক্স সিড ভাল মানের ফ্যাট, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট, প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। হার্টকে সুস্থ রাখে ফ্ল্যাক্স সিড। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে তিসি। ফ্ল্যাক্স সিড খেতে গেলে বীজ শুকনো খোলায় ভেজে নেওয়া জরুরি। অনেকে রোস্ট করার পরে গুঁড়িয়ে নেন তিসি। আটা-ময়দা মাখার সময়ে ফ্ল্যাক্স গুঁড়ো অল্প পরিমাণে মিশিয়ে রুটি তৈরি করতে পারেন। আবার সকালে খালি পেটে এক চা চামচ তিসির গুঁড়ো এমনিও খেয়ে নিতে পারেন। উপকার মিলবে হাতেনাতে।
আরও পড়ুন: শহরে ফাস্টফুডের অবাধ হাতছানিতে বেড়েছে ওজন? এখন কী ডায়েটে কমবে মেদ?
তিল: সাদা তিলে থাকে ক্যালশিয়াম অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট জাতীয় উপাদান। লিভারকে যে কোনও রকম ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সক্ষম তিল। হজম বাড়াতে, দাঁত ও হাড়ের দেখভাল করতেও তিলের জুড়ি মেলা ভার। তিলের বীজ রোস্ট করে স্যালাডের সঙ্গে খেতে পারেন। বাড়িতে চাইনিজ পদ বানালেও উপর থেকে ছড়িয়ে দিতে পারেন রোস্টেড তিল। এ ছাড়াও তিলের তেল একই রকম ভাবে স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়ক। স্যালাডের ড্রেসিংয়েও তিল তেল ব্যববার করা হয়।
কুমড়োর বীজ: বিশেষ কিছু ধরনের ক্যানসারেরও আশঙ্কা কমায় এই বীজ। কুমড়োর বীজে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে, আয়রন, জিঙ্ক, কপার ইত্যাদি। নিয়মিত কুমড়োর বীজ খেলে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড ভাল থাকে। আবার অনিদ্রার হাত থেকেও মুক্তি দেয় কুমড়ো বীজ। শুকনো খোলায় ভেজে স্যালাডের টপিংয়ে, শরবতের উপরে ছড়িয়ে খেতে পারেন পাম্পকিন সিড। আবার এক বাটি ফল কেটে তার মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে পারেন রোস্টেড পাম্পকিন সিড। ওটস কিংবা কর্নফ্লেক্সর সঙ্গেও ভাল লাগে এই বীজ।
সূর্যমুখীর বীজ: কিছু ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে এই বীজ। এ ছাড়াও হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে, রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে সমতা আনতে সাহায্য করে। ভাল মানের প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন বি ওয়ান এবং ই, ম্যাগনেশিয়াম, কপার থাকে সূর্যমুখীর বীজে। শুকনো খোলায় ভেজে এই জাতীয় বীজ স্ন্যাক্স হিসেবে খাওয়া যায়। আবার চাইলে স্যালাড কিংবা সতে করা সব্জির সঙ্গেও খেতে পারেন। অল্প পরিমাণে এই বীজ খেলে সহজেই পেট ভরা থাকে
মৌরি: এতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল। নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ বা স্নায়ুরোগ সারাতে, সংক্রমণ কমাতে সহায়ক মৌরি। ভাল মানের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় মৌরির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। পেটও ঠান্ডা রাখে মৌরি।সারা রাত জলে মৌরি ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা ছেঁকে খেতে পারেন। মৌরি ভেজানো জল শরীর সুস্থ রাখে। তবে ঘন ঘন ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে রোজ মৌরি ভেজানো জল খাওয়া ঠিক নয়।
সব ধরনের বীজ আলাদা করে না খেয়ে একসঙ্গে সম পরিমাণ মিশিয়ে জারে রেখে দিতে পারেন। ওটসের সঙ্গে ফল আর এই সব বীজ মিশ্রণ যোগ করে খেতেই পারেন স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ। এতে পেটেও ভরবে, আর শরীরও পাবে সমস্ত পুষ্টিগুণ। তবে রোজকার ডায়েটে এই সব বীজ যুক্ত করার আগে ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy