Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

বাবা কিছু করেননি, জেরায় দাবি জাহারি-কন্যার

বাবাকে কিছু দিন ধরেই ‘অন্যরকম’ ব্যবহার করতে দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আইশা শাহ। তাঁর বয়ানে, “দেখে মনে হত উনি যেন আমার বাবা নন। মানসিক ভাবে অস্থির...নিজের দুনিয়াতেই বুঁদ হয়ে থাকতেন।” কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশি জেরায় আইশা জানান, তাঁর বাবা অর্থাৎ এমএইচ ৩৭০-এর পাইলট জাহারি আহমেদ শাহ কিছুতেই কারও প্রাণ নিতে পারেন না। রবিবার সে কথা প্রকাশ্যে এনেছে ব্রিটেনের এক সংবাদপত্র।

সংবাদ সংস্থা
কুয়ালা লামপুর শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০৩:২৮
Share: Save:

বাবাকে কিছু দিন ধরেই ‘অন্যরকম’ ব্যবহার করতে দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন আইশা শাহ। তাঁর বয়ানে, “দেখে মনে হত উনি যেন আমার বাবা নন। মানসিক ভাবে অস্থির...নিজের দুনিয়াতেই বুঁদ হয়ে থাকতেন।” কিন্তু তা সত্ত্বেও পুলিশি জেরায় আইশা জানান, তাঁর বাবা অর্থাৎ এমএইচ ৩৭০-এর পাইলট জাহারি আহমেদ শাহ কিছুতেই কারও প্রাণ নিতে পারেন না। রবিবার সে কথা প্রকাশ্যে এনেছে ব্রিটেনের এক সংবাদপত্র।

আইশা পুলিশকে জানিয়েছেন, যে সপ্তাহে বিমানটি উধাও হয়ে যায়, সে সপ্তাহেও বাবার সঙ্গে ফোনে বেশ কিছু ক্ষণ কথাবার্তা হয়েছিল তাঁর। বিয়েটা যে আর কিছুতেই টিঁকবে না সে কথা মেয়ের কাছে স্বীকারও করেছিলেন জাহারি। তার জন্য তিনি যে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, সে কথাও অজানা নয় আইশার। একই সঙ্গে বছর আঠাশের তরুণী জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের গ্রেফতারির পর বাবা আরও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। আইশা বাদে পরিবারের বাকিদের সঙ্গে সম্পর্ক সে সময় প্রায় তলানিতে ঠেকেছিল। সে কথা মেনে নিয়েছেন আইশার মা ফৈজা খানুম মুস্তাফা খান। জাহারির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়ে গিয়েছিল, যে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত এক রকম নিয়েই ফেলেছিলেন দু’জনে। ফৈজা পুলিশকে বলেছেন, “সে সময় খোলসের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন জাহারি।” স্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বন্ধ। নিজের মনে থাকতেন। অনেকটা সময় কাটাতেন বাড়ির ‘ফ্লাইট সিমুলেটর’-এ।

এ হেন আচরণ মেয়ে এবং মা দু’জনেরই অস্বাভাবিক ঠেকেছিল। কিন্তু তাঁদের কেউই মানতে নারাজ, জাহারি জেনেবুঝে অতগুলো মানুষের প্রাণ নিতে পারেন। সম্প্রতি তাঁর ছোট ছেলে আহমেদ শেঠও একটি সাক্ষাৎকারে এই কথাই বলেছিলেন। পুলিশি জেরাতেও কার্যত একই কথা বলেছেন জাহারির স্ত্রী এবং মেয়ে।

তবে সত্যির হদিস পেতে এখনও অপেক্ষা বিমানের ধ্বংসাবশেষের। অস্ট্রেলিয়ান মেরিটাইম সেফটি অথরিটি(এএমএসএ) জানিয়েছে, রবিবার গোটা দিন ভারত মহাসাগরের নয়া এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে ৮টি জাহাজ ও ১০টি বিমান। কিন্তু নতুন কিছু নজরে আসেনি। অন্য দিকে, গত কাল চিনের একটি জাহাজ এবং অস্ট্রেলিয়ার একটি জাহাজ বেশ কিছু বস্তু উদ্ধার করেছে। কিন্তু সেগুলির কোনওটিই এমএইচ-৩৭০- অংশ নয় বলে জানিয়েছে এএমএসএ। তবে রবিবার ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার অনুসন্ধানকারী যন্ত্রটিকে অস্ট্রেলিয়ার একটি জাহাজের মধ্যে ঢোকানো হয়েছে। সেটির পারথের পশ্চিমে নয়া তল্লাশি এলাকায় পৌঁছতে আরও চার-পাঁচ দিন। তার পর সমুদ্রের অন্দর থেকে ভেসে আসা বিমানের ক্ষীণ শব্দসঙ্কেত খুঁজে বেড়াবে সেটি।

তবে ব্ল্যাক বক্স অনুসন্ধান নিয়ে খুব একটা আশার কথা শোনাচ্ছেন না তল্লাশির মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন নৌসেনা অফিসার মার্ক ম্যাথিউস। তাঁর মতে, ব্ল্যাক বক্স বা ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার উদ্ধার কবে হবে তা নির্ভর করছে, তদন্তাধীন এলাকা কত তাড়াতাড়ি কতটা গুটিয়ে আনা যায়। মার্কের বয়ানে, “এই মুহূর্তে আমরা যত বড় এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছি, তা শেষ করতে অনেক সময় লেগে যাবে।” সেই পরিসর যত তাড়াতাড়ি কমিয়ে আনা যায়, ততই ব্ল্যাক বক্সের হদিস পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। মার্কের আরও দাবি, এয়ার-ফ্রান্সের উড়ান ৪৪৭-র খোঁজ এর থেকে সহজ ছিল। কারণ বিমানটির অবস্থান নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য হাতে ছিল। সেই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত মার্কের ধারণা, এই অবস্থায় ব্ল্যাক বক্সের হদিস মেলা দুষ্কর।

অন্য দিকে, বাইশ দিন পরেও বিমান-তদন্তের কিনারা না হওয়ায় চিনের নিখোঁজ যাত্রীদের আত্মীয়রা যারপরনাই ক্ষুব্ধ। এ দিন ২৯ জন আত্মীয় বেজিং থেকে কুয়ালা লামপুরে এসে পৌঁছন। সেখানে তাঁরা বলেন, প্রমাণ-সহ সত্যিটা অবিলম্বে সকলকে জানাক মালয়েশীয় সরকার। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, প্রমাণ ছাড়াই বিমানের সলিলসমাধি ঘোষণা করে দেওয়ায় ক্ষমা চাইতে হবে মালয়েশীয় সরকারকে।

অন্য বিষয়গুলি:

mh-370 kualampur boeing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE