নির্দোষ হোসনি মুবারক। মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের গণহত্যা ও দুর্নীতি সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা খারিজ করে আজ এমনটাই রায় দিল দেশের এক আদালত। একই হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মুবারক জমানার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ও দেশের আরও ছয় শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা আধিকারিক। ইজরায়েলে গ্যাস রফতানি-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক আর্থিক তছরুপ ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল মুবারক এবং তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে। আজ আদালতের রায়ে বেকসুর সাব্যস্ত হলেন তাঁরাও।
অবশ্য আজকের রায়ের পরেও পুরোপুরি ছাড় পাচ্ছেন না মুবারক। অন্য একটি তছরুপ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের সাজা ভোগ করছেন তিনি। তবে আজকের রায়ের বিরোধিতা করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ থাকছে বলে মত আইনজীবীদের।
১৯৮১ থেকে প্রায় তিরিশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানের জেরে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেন মুবারক। অভিযোগ, তার আগে দেশে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন রুখতে গণহত্যার নির্দেশ দেন তিনি। নিহত হন আটশো নাগরিক। ২০১২ সালে এই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন সাজা হয় মুবারকের। আজকের রায়ে সব মাফ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই দেশের বর্তমান সরকারকে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
মুবারকের শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই কায়রোর আদালত চত্বরে মুবারক বিরোধী ও সমর্থকদের ভিড় ছিল। চোখে সানগ্লাস এবং সোয়েটার গায়ে আদালতে আসেন বছর ছিয়াশির মুবারক। উপস্থিত ছিলেন তাঁর দুই ছেলেও। আদালতের যুক্তি, “এমনিতেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া দেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী অভিযুক্তদের এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার উপায় নেই। রায় ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ফেটে পড়ে আদালত। একটা অংশে উল্লাস চোখে পড়লেও, অন্য অংশে স্পষ্টতই হতাশা। এক সাংবাদিক বললেন, “আন্দোলন করতে গিয়ে আটশোরও বেশি লোক খুন হল। অথচ এর জন্য কেউ দায়ী নয়! তাহলে কি এটাকে গণহত্যা নয়, গণ-আত্মহত্যা বলব?” স্থানীয় সূত্রের দাবি, দেশের একটা বড় অংশ অবশ্য মুবারকের শাস্তি নিয়ে একেবারেই উদাসীন। দোষী মুবারকের শাস্তি চেয়ে আদালতে হাজির ছিলেন নিহতদের বেশ কিছু পরিবার। রায় ঘোষণার পর তাঁদেরই এক জন জানালেন, “শাসকের চেহারাটা একই রকম। শুধু লোকটাই যা বদলেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy