বিরোধীদের চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী মাইকোলা আজারভ। গত দু’মাস ধরে চলা অচলাবস্থা কাটাতে মঙ্গলবার সকালে বসেছিল পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন। সেখানেই নিজের এই ইচ্ছের কথা জানান আজারভ। ছেষট্টি বছর বয়সি প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে এ দিন বলেন, “দেশের ঐক্য বজায় রাখতে, প্রতিবাদীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ রফাসূত্রের পথ প্রশস্ত করতেই পদ থেকে সরে যেতে চাই।” মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ।
মাইকোলা মুখে শান্তি আলোচনার কথা বললেও এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। কিছু দিন আগে সকলের সামনেই প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ তাঁর এককালের অনুগত সৈনিক আজারভকে পদত্যাগ করার কথা বলেছিলেন। বিরোধী নেতা আরসেনি ইয়াটসেনইউকে তাঁর জায়গায় দেখতে চান বলেও মন্তব্য করেছিলেন ইয়ানুকোভিচ। এই কারণেই মাইকোলা আজারভ ইস্তফা দিলেন কি না তা নিয়ে তাই ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে।
বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে মঙ্গলবার চার ঘণ্টার বৈঠকে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করতে আইন জারি করেছিল প্রশাসন। বিরোধীরা সরকারি ভবন ও রাস্তাঘাট থেকে অবরোধ তুলে নিলে সেই আইন প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছে সরকার। গত নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সই করার ঠিক আগে বেঁকে বসেন প্রেসিডেন্ট ইয়ানুকোভিচ। দেশবাসীকে অন্ধকারে রেখে তিনি আবার রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছিলেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তার পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে ইতিমধ্যেই সেখানে ছ’জনের মৃত্যুও হয়েছে। ইউক্রেনের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ গোপন রাখেনি আমেরিকাও। সোমবারই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়ানুকোভিচকে দেশে জরুরি অবস্থা জারি না করার আর্জি জানিয়েছিলেন।
আন্দোলনের গোড়া থেকেই প্রতিবাদীদের দাবি ছিল, সরে দাঁড়াতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। এত দিন পর আজারভ পদত্যাগ করায় শান্তি আলোচনা কোন খাতে বয়, তা-ই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy